• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

সৎকাজের প্রতিদান

  • মুফতি আহমদ আবদুল্লাহ
  • প্রকাশিত ৩০ মার্চ ২০১৯

সৎকাজ হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাঁরই আদেশ নিষেধ মান্য করে জীবনের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা। মহান আল্লাহ যেসব কাজ করতে আদেশ করেছেন সেসব কাজ করা এবং যেসব কাজ করতে নিষেধ করেছেন তা বর্জন করাই হলো ‘আমলে সালিহা’ বা সৎকাজ। আল্লাহতায়ালা ঈমান অবলম্বন করতে, নামাজ কায়েম করতে, রমজান মাসে রোজা রাখতে, জাকাত আদায় এবং হজ পালনের আদেশ করেছেন।

তিনি মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণ, প্রতিবেশীর হক আদায়, আত্মীয়তা বজায় রাখা, সবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, দান-খায়রাত করা, বিপদে ধৈর্যধারণ, নেয়ামতের শুকরিয়া করা ইত্যাদি কাজের নির্দেশ দিয়েছেন।

যারা ঈমান ও সৎকাজ নিয়ে পরকালে উপস্থিত হবে, তাদের ক্ষমা করা হবে, তাদের মন্দ কাজগুলো মিটিয়ে দেওয়া হবে। আর বিনিময় হিসেবে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদের ক্ষমা ও মহা প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকাজ করেছে আমি তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবো। আর সেই জান্নাতের তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। তারা চিরকাল তথায় অবস্থান করবে। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা সত্য। তার থেকে অধিক সত্যবাদী কে?’ (সুরা নিসা: ১২২)

ঈমানদার ব্যক্তি সৎকর্মের বিনিময়ে কেবল পরকালেই পুরস্কৃত হবেন তা-ই নয়, দুনিয়ায়ও আনন্দময় পবিত্র জীবন লাভ করবে। আল্লাহ বলেন, ‘যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমানদার পুরুষ হোক কিংবা নারী, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব’ (সুরা নাহল : ৯৭)।

পবিত্র জীবন এটা নয় যে, সে কখনো অনাহার-উপবাস বা অসুখ-বিসুখের সম্মুখীন হবে না। বরং এর অর্থ হলো, মুমিন ব্যক্তি কোনো সময় আর্থিক অভাব-অনটন কিংবা কষ্টে পতিত হলেও দুটি বিষয় তাকে উদ্বিগ্ন হতে দেয় না। এক. অল্পে তুষ্টি ও অনাড়ম্বর জীবন-যাপনের অভ্যাস যা দারিদ্র্যের মাঝেও কেটে যায় এবং দুই. বিশ্বাস যে, অভাব-অনটন ও অসুস্থতার বিনিময়ে পরকালে সুমহান চিরস্থায়ী নেয়ামত পাওয়া যাবে। কাফের ও পাপাচারী ব্যক্তিদের অবস্থা এর বিপরীত।

সে অভাব-অনটন ও অসুস্থতার সম্মুখীন হলে তার জন্য সান্ত্বনার কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সে কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলে। প্রায়ই আত্মহত্যা করে ফেলে।

সুতরাং ইসলামী চিন্তাবিদগণ কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, শৈশবেই যদি শিশুর পিতা-মাতা তাকে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসারে গড়ে তোলেন এবং বিধিবিধান মেনে চলতে সাহায্য করেন, তাহলে ওই শিশুর মধ্যে আত্মনির্ভরতা, আত্মবিশ্বাস, সাহস, স্বাধীনভাবে কর্ম ও চিন্তা করার ক্ষমতা দেখা দেয়। এর ফলে শিশু স্থির ব্যক্তিত্ব অর্জন করে এবং সৎ কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে সক্ষম হয়। পরিবার, বিদ্যালয় ও সামাজিক পরিবেশ যদি মনোরম, নৈতিক, ধার্মিক, সুস্থ সাংস্কৃতিক হয় তাহলে প্রতিটি শিশুও সে অনুযায়ী ব্যক্তিত্ববান হয়ে বেড়ে ওঠে। আর পরবর্তী জীবনে আমাদের আচরণে আমরা তা-ই প্রকাশ করি। সুতরাং আসুন, প্রকৃত মুমিন হয়ে আল্লাহর পথে চলার তৌফিক তিনি আমাদের দিন। আমিন। 

 

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads