• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
সমাজের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রামপুর ছিদ্দিকীয়া মাদরাসা ও এতিমখানা

রামপুর ছিদ্দিকীয়া মাদরাসা ও এতিমখানা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ধর্ম

সমাজের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রামপুর ছিদ্দিকীয়া মাদরাসা ও এতিমখানা

  • আবু রোকাইয়া
  • প্রকাশিত ২৬ এপ্রিল ২০১৯

যারা অনিশ্চিত এক জীবনের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল, আজ তারাই একেকটি সফল জীবনের উদাহরণ। সমাজে যে শিশুদের বাবা নেই অথবা মা নেই, কিংবা মা-বাবা কেউই নেই, নেই কোনো আত্মীয়স্বজন- সেসব শিশুর ধর্মীয় শিক্ষার সমান্তরালে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় রামপুর ছিদ্দিকীয়া হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা। সমাজে গরিব ও এতিম শিশুদের লালন-পালনের ব্রত নিয়ে এতিমখানাটি দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে সমাজের গরিব দুঃখী ও এতিম অসহায় শিশুদের জন্য কাজ করে আসছে। চাঁদপুর সদরে অবস্থিত ৫ নং রামপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে গড়ে ওঠা এতিমখানাটি বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর একটি অনন্য উদাহরণ। মা-বাবা হারানো শিশুগুলোর মুখের হাসি মন ভরিয়ে দেয়। যেসব জীবন সমাজের অন্ধকারে মিলিয়ে যেতে পারত, সেসব জীবন এখন সূর্যের আলোর মতো ঝলমল করছে।

এখানে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এতিমখানায় শিশু-কিশোররা যেমন বেঁচে থাকার ভরসা পেয়েছে, তেমনি শিক্ষা-দীক্ষা ও মানসিক বিকাশে আগামীর স্বপ্ন দেখছে সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুরা।

জনকল্যাণমূলক এই সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক আলহাজ মো. মফিজুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠানটির অনেক সমস্যা রয়েছে, অনেক কষ্ট হয় অজপাড়াগাঁয়ে এ ধরনের বেসরকারি মাদরাসা চালাতে। সরকারি অনুদান মাত্র ১৬ হাজার টাকা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বাবদ প্রাপ্ত। কিন্তু মাসে খরচ হয় লক্ষাধিক টাকা। একজন দক্ষ কেয়ারটেকার কিংবা ম্যানেজার সার্বক্ষণিক এর পরিচালনায় নিয়োজিত।

ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য ভবনের অভাব রয়েছে। আবার অল্প বৃষ্টিতেই ভবনের চাল দিয়ে পানি পড়ে ভবনের ভেতর স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়। শোবার ঘরের মেঝে আধাপাকা। শীতের সময় মেঝেতে অনেক ঠান্ডা লাগে। আশা করছি টাকা-পয়সার ব্যবস্থা হলে বা সরকারি অনুদান/সাহায্য পেলে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে।

প্রতিষ্ঠানটির জন্য কি সরকারি অনুদান পান- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এতিমখানায় বসবাসরত অসহায় এতিম ও দুস্থ নিবাসীদের সরকারি যে অনুদান আসে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। সরকারের পক্ষ থেকে মাত্র ১৬ জনের জন্য মাথাপিছু মাসিক ১ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। এতে এতিমখানায় বসবাসকারী ছাত্ররা তাদের চাহিদা অনুসারে খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও শিক্ষাসহ যেসব প্রয়োজন রয়েছে তা মেটানো সম্ভব নয়। সুবিধাবঞ্চিত এসব এতিম শিশুদের জন্য সরকারি অনুদান ও সুযোগ-সুবিধা আরো বৃদ্ধির জন্য দাবি জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটিতে ১৭ জন সদস্য রয়েছেন। রয়েছেন ২ জন হাফেজ ও একজন করে বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষক। এছাড়া মাদরাসা রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখাশোনার জন্য সার্বক্ষণিক একজন কেয়ারটেকার কিংবা ম্যানেজার এবং রান্নাবানার জন্য রয়েছে একজন বাবুর্চি। এদের বেতন ভাতা ও অন্যান্য খরচ বাবদ ১ লাখ টাকা প্রয়োজন। মাদরাসায় সরকারি যে বরাদ্দ আসে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এতিম শিশুদের লালনেই সরকারি বরাদ্দ ছাড়া আরো অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। দান অনুদান বিত্তবানদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে চালানো কষ্ট। মাদরাসার জন্য একটি বহুতল ভবন করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আমাদের দাবি। ভবনের অভাবে এতিম শিশুদের বসবাসের অনেক সমস্যা হয়। বড় ভবন থাকলে প্রশাসনিক কমর্কাণ্ড পরিচালনা করা এবং এতিম অসহায় শিশুদের জন্য বসবাস করা সহজ হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads