• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

শীতে বিশেষ ইবাদত

  • মায়িশা আতিয়া
  • প্রকাশিত ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯

শীতকাল আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিনের দেওয়া এক নিয়ামত। ঈমানদারের জন্য শীতকাল বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। এ ঋতুতে পালন করার মতো বিশেষ কয়েকটি আমল এখানে তুলে ধরা হলো।

 

রোজা রাখা

হাদিস শরিফে এসেছে, শীতকাল মুমিনের জন্য ইবাদতের বসন্তকাল। আমের ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘শীতল গনিমত হচ্ছে শীতকালে রোজা রাখা।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৯৫)।

শীতকালে দিন থাকে খুবই ছোট। তাই শীতকালে রোজা রাখলে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয় না। সুতরাং শীতকালের দ্বিতীয় করণীয় হলো, কারো যদি কাজা রোজা বাকি থাকে, তাহলে শীতকালে সেগুলো আদায় করে নেওয়া। তা ছাড়া বেশি বেশি নফল রোজা রাখারও এটি সুবর্ণ সময়। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘বিশুদ্ধ নিয়তে যে ব্যক্তি একদিন রোজা রাখল, মহান আল্লাহ প্রতিদানস্বরূপ জাহান্নাম এবং ওই ব্যক্তির মাঝখানে ৭০ বছরের দূরত্ব তৈরি করে দেবেন।’ (বুখারি)

 

তাহাজ্জুদ আদায় করা

তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা। শীতকালে রাত অনেক লম্বা হয়। কেউ চাইলে পূর্ণরূপে ঘুমিয়ে আবার শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়তে সক্ষম হতে পারে। মহান আল্লাহ ঈমানদারদের গুণাবলি সম্পর্কে বলেন, ‘তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের রবকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে।’ (সাজদাহ, আয়াত : ১৬)

 

মানবসেবা

শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশে বছর ঘুরে আসে শীত-শৈত্যপ্রবাহ। পৌষ-মাঘ দুই মাস শীতকাল। হাড়-কাঁপানো শীতে নাকাল দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। শীতার্তসহ বিপন্ন সব মানুষের পাশে দাঁড়ানো ইসলামের আদর্শ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা আল্লাহর প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দরিদ্র, এতিম ও বন্দিদের খাদ্য দান করে।’ (দাহার, আয়াত : ০৮)। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে মুমিন অন্য বিবস্ত্র মুমিনকে কাপড় পরিয়ে দিল, মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরিয়ে দেবেন।’ (তিরমিজি)

 

অজু ও গোসলের ব্যাপারে সচেতন হওয়া

শীতকালে মানুষের শরীর শুষ্ক থাকে। তাই যথাযথভাবে ধৌত না করলে অজু-গোসল ঠিকমতো আদায় হয় না। আর অজু-গোসল ঠিকমতো আদায় না হলে নামাজ শুদ্ধ হবে না। তাই এ বিষয়ে বিশেষভাবে যত্নবান হতে হবে; এমনকি শীতের মৌসুমে গরম পানি দিয়ে অজু করলেও সওয়াবে কমতি হবে না। অজুর গুরুত্ব সম্পর্কে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু শিখিয়ে দেব না, যার কারণে আল্লাহ পাপ মোচন করবেন এবং জান্নাতে তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন? সাহাবারা বললেন, জি হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল! মহানবী (সা.) বললেন, ওই কাজগুলো হলো— মন না চাইলেও ভালোভাবে অজু করা, বেশি পদক্ষেপে মসজিদে যাওয়া এবং এক নামাজের পর অন্য নামাজের জন্য অপেক্ষা করা।’ (মুসলিম)

 

মোজার ওপর মাসেহ করা

মোজার ওপর মাসেহ করার ক্ষেত্রে নিয়ম হলো, অজু করে মোজা পরিধান করবে। মুকিম ব্যক্তির জন্য পরবর্তী এক দিন পর্যন্ত যতবার অজুর প্রয়োজন, তাতে পা ধোয়ার প্রয়োজন হবে না। বরং তিন আঙুল পরিমাণ মোজার ওপর মাসেহ করে নিলেই চলবে। মুসাফিরের জন্য এ সুযোগ তিন দিন পর্যন্ত। অসংখ্য হাদিস শরিফে রাসুল (সা.)-এর অনুরূপ আমলের কথা উল্লেখ পাওয়া যায়।

 

লেখক : প্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads