• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
সূর্য ছুঁতে গেছে পার্কার

‘পার্কার সোলার প্রোব’ মহাকাশযান

ছবি : ইন্টারনেট

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

সূর্য ছুঁতে গেছে পার্কার

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৩ আগস্ট ২০১৮

সব সংশয় কাটিয়ে সূর্যের দিকে ছুটতে শুরু করেছে ‘পার্কার সোলার প্রোব’ মহাকাশযান। গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরাল থেকে এটি যাত্রা শুরু করে ‘ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স’-এর ‘ডেল্টা-৪ হেভি’ রকেটে চড়ে।

নাসার তথ্যমতে, স্থানীয় সময় ভোররাত ৩টা ৩১ মিনিটে শুরু হয় এ যাত্রা। মহাকাশযানটির গন্তব্য সূর্যের উজ্জ্বল আভাযুক্ত অতি উত্তপ্ত এলাকা করোনা।

অভিযান সফল হলে যানটি লক্ষাধিক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উপেক্ষা করে সূর্যের করোনা অঞ্চল ২৪ বার প্রদক্ষিণ করবে। বহির্বলয় ছুঁয়ে উড়তে উড়তে সূর্যের অভ্যন্তরে চলা জটিল প্রক্রিয়া ও বিকিরণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে এটি। ‘পার্কার সোলার প্রোব’ এর আধুনিক কমিউনিকেশন প্যানেল পৃথিবীতে তথ্য পাঠাবে। আর সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে সৌরঝড়ের রহস্য, পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তিসহ অনেক জটিল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।

পৃথিবীর বিভিন্ন কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে করতে পার্কার শুক্র গ্রহের কক্ষপথে পৌঁছাবে দেড় মাস পর। তারপর আরো অনেক অনেক পথ পেরিয়ে সূর্যের কাছাকাছি যেতে যানটির সময় লাগবে কমপক্ষে দুই বছর। তবে আরো এগিয়ে করোনায় ঢুকতে সময় লাগবে আরো দুই বছর। এর পর টানা ৭ বছর ধরে বিভিন্ন কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে নাসার এই মহাকাশযান। সেই প্রদক্ষিণের সময় কখনো সেটি সূর্যের খুব কাছে যাবে আবার কখনো কিছুটা দূরে সরে আসবে। নাসার মহাকাশযানটি যখন সূর্যের সবচেয়ে কাছে যাবে তখন সৌরপৃষ্ঠ থেকে তার দূরত্ব হবে মাত্র ৬০ লাখ কিলোমিটার।

৯১ বছর বয়স্ক অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট ইউজিন পার্কারের নামে নামকরণ করা হয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের এই মহাকাশযানটির। কিন্তু করোনা অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় যানটি টিকবে কী উপায়ে?

নাসা বলছে, পার্কার প্রোবের কাঠামোতে রয়েছে কার্বন যৌগের সাড়ে চার ইঞ্চি পুরু শিল্ড যা সূর্য থেকে পৃথিবীতে আসা রেডিয়েশনের চেয়েও ৫০০ গুণ বেশি রেডিয়েশন প্রতিরোধ করতে পারে। এ ছাড়া নাসার এই মহাকাশযানে রয়েছে বিশেষ প্রযুক্তিতে বানানো স্বয়ংক্রিয় কুলিং সিস্টেম। মহাকাশযানে যে ‘হিট শিল্ড’ রয়েছে, আর তার যে দিকটা সূর্যের দিকে থাকবে, তাকে খুব বেশি হলে ১ হাজার ৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার ধকল সইতে হবে। তবে এতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না সেটিকে।

কারণ হিসেবে সংস্থাটি বলছে, সূর্যের পিঠের চেয়ে করোনায় কণার সংখ্যা কম। এ কারণে পার্কারকে গরম কণার ঝাপটা তুলনায় কম সইতে হবে।

প্রসঙ্গত, অভিযানটি শুরু হওয়ার কথা ছিল গত শনিবার। কিন্তু একেবারে শেষ বেলায় এসে তা ২৪ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়। চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণের ঠিক শেষ মিনিটে অভিযানটি স্থগিত করা হয়। তবে রোববার ভোররাতে সব সংশয় কাটিয়ে গন্তব্যে যাত্রা শুরু করেছে ‘পার্কার সোলার প্রোব’ নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টির উদ্দেশ্যে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads