• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
মঞ্চে রোজী সিদ্দিকীর পঞ্চনারী আখ্যান

রোজী সিদ্দিকী

ফাইল ছবি

শোবিজ

মঞ্চে রোজী সিদ্দিকীর পঞ্চনারী আখ্যান

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ অক্টোবর ২০১৯

জনপ্রিয় অভিনেত্রী রোজী সিদ্দিকী। মঞ্চ, টিভি আর চলচ্চিত্রে তার পদচারণা। এখনো সমানতালে অভিনয় করছেন টিভি এবং মঞ্চনাটকে। তিনি তার অভিনয়গুণে দর্শককে মুগ্ধ করেন। দীর্ঘদিন সাফল্যের সঙ্গে এই অভিনেত্রী অভিনয় করছেন। তার অভিনীত আলোচিত মঞ্চনাটক ‘পঞ্চনারী আখ্যান’। নাটকটি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসিত হয়েছে। এতে একক অভিনয় করেছেন রোজী সিদ্দিকী। নাটকটিতে জুলেখা, নাজমা, মনোরমা, মরিয়ম ও মমতাজ চরিত্রে দেখা যাবে এ অভিনেত্রীকে।

হারুন অর রশীদের রচনায় নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন শহীদুজ্জামান সেলিম। এটি ঢাকা থিয়েটারের ৩৭তম প্রযোজনা। ইতোমধ্যে নাটকটির অর্ধ শতাধিক মঞ্চায়ন হয়েছে। নাটকটি নিয়ে ফের মঞ্চে আসছেন অভিনেত্রী রোজী সিদ্দিকী। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আজ সন্ধ্যা ৭টায় এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে প্রদর্শিত হবে ‘পঞ্চনারী আখ্যান’।

সৃষ্টির সূচনা থেকে নারীর দাবি কেবল নারী নয়, তার পরিচিতি হোক মানুষ হিসেবে। নারীর অধিকার নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। কিন্তু নিপীড়ন আর নির্যাতনের জাঁতাকলে কোনো না কোনোভাবে পিষ্ট হচ্ছে প্রতিটি নারী। এ বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেতে নিরন্তর সংগ্রামে লিপ্ত বিশ্বের নারীরা। বৈষম্যের হাহাকারকে অতিক্রম করে কবে তারা মানুষ হিসেবে নিজেকে অনুভব করতে পারবে এই আর্তনাদই ধ্বনিত হয়েছে ‘পঞ্চনারী আখ্যান’ শীর্ষক নাট্যে।

নাটকটি নিয়ে রোজী সিদ্দিকী বলেন, ‘মঞ্চে আমার সেরা কাজের মধ্যে “পঞ্চনারী আখ্যান” অন্যতম। এমন একটি চমৎকার গল্পের নাটক রচনার জন্য হারুন ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞ নাটকটির নির্দেশক শহীদুজ্জামান সেলিমের প্রতি। কারণ এতে অভিনয় করে আমি অনেক সাড়া পেয়েছি এবং প্রশংসিতও হয়েছি। সত্যি বলতে শুধু এ নাটকে নয়, যেকোনো নাটকেই আমি যখন অভিনয় করি তখন নিজেকে ভুলে যাই। আমি সেই চরিত্রটিই হয়ে ওঠার যথাসাধ্য চেষ্টা করি। আমার একটি কথা খুব মনে পড়ে সব সময়, তা হলো শ্রদ্ধেয় শিল্পী প্রয়াত গোলাম মুস্তাফা আমার অভিনয় দেখে একবার বলেছিলেন, “তুই তো গড গিফটেড অ্যাকট্রেস।” এটা যে আমার জন্য কত বড় আশীর্বাদ ছিল তা বোঝাতে পারব না। তার সেই কথা প্রায় সময়ই কাজ করতে গিয়ে অনুভব করি। কিন্তু এটাও সত্যি, আমি প্রতিনিয়ত অভিনয় শেখার চেষ্টা করি। অভিনয় মনের মধ্যে লালন করি সব সময়।’

এ নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন আফজাল হোসেন, সংগীত পরিকল্পনায় মঞ্চকুসুম, শিমূল ইউসুফ ও চন্দন চৌধুরী। পোশাক পরিকল্পনায় নাসরিন নাহার ও আলোক পরিকল্পনা করেছেন ওয়াসিম আহমেদ।

একজন অভিনেত্রীকে সু-অভিনেত্রী হয়ে ওঠার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। গুণী এই অভিনেত্রী দুই সময়কেই প্রতিনিধিত্ব করছেন। এই সময় এবং সেই সময়ের মধ্যে পার্থক্য কেমন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আগের সময়টায় শিল্প-শিল্পীর মূল্যায়ন ছিল, এখন নেই। তখন সততার মূল্য ছিল, এখন সবকিছু কমার্শিয়াল হয়ে গেছে। এখন মিডিয়াটা অপরিচ্ছন্ন হয়ে গেছে। তবে আমি কিন্তু কখনোই শিল্পীর বিরুদ্ধে নই, সিস্টেমের বিরুদ্ধে। এখন চরিত্রের মধ্যে কোনো ভেরিয়েশন নেই, নেই ফিজিক্যাল মুভমেন্ট। আগে একজন অভিনয়শিল্পী ১০টি চরিত্র করলেও প্রত্যেকটিকে আলাদা করা যেত। এখন প্রায় চরিত্রই একই রকম মনে হয়।’

সাম্প্রতিক সময়ে এই গুণী অভিনেত্রীকে একক নাটকে কম দেখা যায়। এর কারণ কী জানতে চাইলে বলেন, ‘একক নাটকে কাজের জন্য কম ডাকা হয়। এখন তো নির্মাতা, চ্যানেল মালিক, রাইটাররা একটি পথেই হাঁটছেন। একই সময়ে বিভিন্ন চ্যানেলে একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর একাধিক নাটক প্রচার হয়। তারা জানেন না কার জন্য অভিনয় করছেন। দর্শকের জন্য নাকি তারকা-খ্যাতির জন্য। এখন “আই লাভ ইউ” জাতীয় নাটকই বেশি হচ্ছে। এখানে আমাদের নিয়ে কাজের জায়গা কোথায়? প্রোডাকশন খরচ কমাতে শিশুশিল্পী, বাবা-মা, দাদা-দাদির চরিত্র বাদ দেওয়া হয়। আগে খণ্ড নাটকের মধ্যে সুন্দর একটি গল্প থাকত। সেটি দেখে দর্শক আনন্দ পেত।’

অভিনয়ের বাইরে রোজীকে উপস্থাপনাতেও পাওয়া যায়। উপস্থাপনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। কিন্তু এর বাইরে ভালো কোনো অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পেলে তবেই উপস্থাপনা করি।’ ছোট পর্দার বাইরে এই অভিনেত্রী সর্বশেষ ‘শঙ্খচিল’ চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন বলে জানান। চলচ্চিত্রে কাজের প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ‘চলচ্চিত্রে নিয়মিত কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। এখন অনেক নতুন নির্মাতা এসেছেন। ভালো কাজ উপহার দিচ্ছেন। ভালো নির্মাতা, গল্প এবং ভালো চরিত্রে অফার পেলে অবশ্যই কাজ করব।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads