• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

শোবিজ

রবিকে এমআইবি’র উকিল নোটিশ

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ অক্টোবর ২০১৯

চলতি বছরের ৩ জুলাই রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেলে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি তাদের গ্রাহকদের জন্য যুক্ত করেছে ভারতীয় জনপ্রিয় স্ট্রিমিং অ্যাপ ‘জি-ফাইভ’। যার মাধ্যমে রবি গ্রাহকরা ছাড়াও ওয়াইফাই দিয়ে নেট চালানো শ্রোতারা এই অ্যাপটির মাধ্যমে অবাধে উপভোগ করতে পারবেন হিন্দি গানসহ বিদেশের বিভিন্ন নাটক, সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ।

এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এমআইবি। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মুঠোফোন প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেডকে একটি উকিল নোটিশ পাঠানো হয়। জানতে চাওয়া হয়, কেন উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য করে প্রতিষ্ঠানটি ফের উপমহাদেশের গান-নাটক বিপণন করছে তারা।

এমন প্রশ্ন উত্থাপন করে এমআইবি’র সভাপতি ও দেশের অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান লেজার ভিশনের চেয়ারম্যান এ কে এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘যে সময়টাতে এসে বাংলা গান ও গান সংশ্লিষ্ট ইন্ডাস্ট্রিটা পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পেল, ঠিক সেই সময়ে এসে রবির ওপর ভর করে বাংলাদেশে আবারো হিন্দি কনটেন্ট প্রবেশ করল! এখন সবার হাতে মোবাইল। সেই মোবাইলে যদি আবার আমরা হিন্দি গান ছড়িয়ে দিই, তাহলে মানুষ বাংলা গান শুনবে কেন? বাংলা গান যদি হিন্দির প্রভাবে আবার ঢাকা পড়ে যায়, তাহলে আর আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি থাকবে না। আবারো আমাদের ঘরে ঘরে বিয়ে, উৎসবে বাজবে হিন্দি আইটেম গান। অথচ খেয়াল করুন, গত পাঁচ বছরের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় নাচের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে বিয়ের উৎসবেও এখন বাংলাদেশের গান বাজে। যেটা বছর পাঁচেক আগেও ছিল স্বপ্নের মতো। তারচেয়ে বড় বিস্ময় রবি এই কাজটির মাধ্যমে আমাদের উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাল! আমরা এর বিচার চাই।’

সংগীত প্রযোজকদের সংগঠন এমআইবি’র মহাসচিব ও সিএমভির কর্ণধার এস কে সাহেদ আলী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বাংলা নাটক, সিনেমা আর গানের ইন্ডাস্ট্রি বাঁচানোর জন্য পুরোনো যুদ্ধটা আমাদের আবারো শুরু করতে হচ্ছে। এটাই বড় কষ্টের বিষয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে স্পষ্ট স্থগিতাদেশ পাওয়ার পর, সেটি কার্যকর হওয়ার এত বছর পর আবারো যদি কেউ দিনে-দুপুরে এভাবে পুকুরচুরি করে, এই বিচার তাহলে কার কাছে চাইব আমরা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া তো এখন আর আমরা কোনো পথ দেখি না। এটা ঠিক, আমরা আবারো আইনের কাছে যাব। পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছেও আবেদন করব।’

দেশের আরেক জনপ্রিয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিডি চয়েসের কর্ণধার জহিরুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘শুধু গান নয়, আমার প্রতিষ্ঠান শুরু থেকেই বাংলা সংগীত, নাটক ও সিনেমাকে লালন করে আসছি। আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি, দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে বাংলাদেশের পরিচ্ছন্ন বিনোদনমূলক কাজগুলোকে খুব সহজে পৌঁছে দেওয়ার। সেই চেষ্টায় তুমুল সাড়াও পেয়েছি। এখন হুট করে আমার সাজানো ঘরে ভারতীয় কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা কনটেন্ট এসে যদি খেয়ে ফেলে, তাহলে কী হবে? আমরা সোজা পথে বসে যাব। এই বাংলা নাটক-সিনেমা-গানের বিকাশের জন্য কোটি কোটি টাকা ইনভেস্ট করেছি আমরা প্রযোজকরা। মহামান্য আদালতের স্থগিতাদেশও আছে আমাদের বাংলা সংস্কৃতির পক্ষে। অথচ এর সবকিছু তুচ্ছ করে একটি প্রতিষ্ঠান হিন্দি গানের বাণিজ্য শুরু করে দিল! এই পরিস্থিতিতে আমরা যদি এক না হই, প্রতিবাদ না করি, তাহলে কে করবে। আমারা মানে শুধু প্রযোজকরা নন। আমাদের সঙ্গে তো গীতিকার, সুরকার, নির্মাতা, নাট্যকার, শিল্পী-সবাই জড়িত। এটা অনেক বড় একটা চেইন, অনেক বড় ইনভেস্টমেন্ট। ফলে বিকাশমান বাংলা সংস্কৃতির পথে আবারো কোনো বাধা আসলে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই। এখানে সবার সাপোর্ট দরকার।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads