• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

শোবিজ

মোশাররফ করিমের ‘আহ জীবন’

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ নভেম্বর ২০১৯

খেটে খাওয়া এক দিনমজুরের জীবনের আশা-আকাঙ্ক্ষার গল্প নাটকের মাধ্যমে বলবেন মোশাররফ করিম। নাটকের নাম ‘আহ জীবন’। সম্প্রতি গাজীপুর ও ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে নাটকটির দৃশ্য ধারণের কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাটকটির নির্মাতা আজাদ কালাম।

নাটকটির গল্প প্রসঙ্গে নির্মাতা আজাদ কালাম বলেন, ‘গ্রামের এক দিনমজুর কাজের জন্য শহরে আসে। সেই দিনমজুরের গল্পটা বলা হবে নাটকে। যেখানে থাকবে দিনমজুরের সন্তানের আশা-আকাঙ্ক্ষার গল্প, শহরের রাজনীতির গল্প, বাবা-মা ছাড়া এক এতিম সন্তানের গল্প। আমি সব সময় চেষ্টা করি দর্শকদের ভালো নির্মাণ উপহার দেওয়ার। এবারো সেই চেষ্টা করেছি। আশা করি দর্শকরা মোশাররফ ভাইকে ভিন্ন রূপে আবারো দেখতে পারবে।’

এই নাটক প্রসঙ্গে মোশাররফ করিম বলেন, ‘নাটকে আমার চরিত্র একটি ভিন্ন ধরনের। আমি একেবারেই সরল-সহজ দিনমজুর। আমার মধ্যে কোনো প্যাঁচগোজ নেই। আশা করি ভিন্নভাবে আমাকে খুঁজে পাবে দর্শক।’

‘আহ জীবন’ নাটকে মোশাররফ করিম ছাড়াও অভিনয় করেছেন সামিয়া হক, ইকবাল আহমেদ, মিরা মুবাদসহ আরো অনেকে। নাটকটি প্রযোজনা করেছেন জহিরুল হক। নির্মাতা সূত্রে জানা গেছে, নাটকটি খুব শিগগিরই আরটিভিতে প্রচারিত হবে।

অভিনয়ের দুই দশকে মোশাররফ করিম। ১৯৯৯ সালে ‘অতিথি’ নাটকের মাধ্যমে তার অভিনয়ে পথচলা শুরু। এই নাটকটি ফেরদৌস হাসান পরিচালনা করেন এবং এটি প্রচারিত হয় চ্যানেল আইতে। নাটকে তার সত্যিকার পথচলা শুরু হয় ২০০৪ সাল থেকে।

২০০৪ সালে তিনি দুটি নাটকে অভিনয় করেন, যা অভিনয়জগতে তাকে এক অধ্যবসায়ী চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। তিনি বিখ্যাত টেলিফিল্ম ‘ক্যারাম’-এ তিশার বিপরীতে অভিনয় করেন। এরপর থেকেই তিনি বিভিন্ন নাটক এবং মেগা-ধারাবাহিকে অভিনয় করে দর্শকের প্রশংসা পেতে শুরু করেন। ধীর ধীরে পর্দায় তার ব্যতিক্রমী ও শক্তিশালী অভিনয় দর্শকমহলে এতটাই সাড়া ফেলে যে, তাকে টেলিভিশন নাটকের মুকুটবিহীন সম্রাট হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই অভিনেতা একই নাটকে দ্বৈত, তিন, সাত ও ১০ চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। প্রতি বছরই ঈদে তার অভিনীত ‘যমজ’ নাটক প্রশংসিত হয়। এ নাটকে দুই ছেলে ও বাবার চরিত্রে দেখা যায় তাকে। ২০০৮ সালে ‘দেয়াল আলমারি’, ২০১২ সালে ‘জর্দ্দা জামাল’, ২০১৩ সালে ‘সেই রকম চা খোর’ নাটকে অভিনয়ের জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে সমালোচকদের বিচারে শ্রেষ্ঠ পুরুষ টিভি অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া ২০০৯ সালে ‘হাউজফুল’, ২০১১ সালে ‘চাঁদের নিজস্ব কোনো আলো নেই’, ২০১৩ সালে ‘সিকান্দার বক্স এখন বিরাট মডেল’, ২০১৪ সালে ‘সেই রকম পানখোর’ এবং ২০১৫ সালে ‘সিকান্দার বক্স এখন নিজ গ্রামে’ নাটকে অভিনয়ের জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ পুরুষ টিভি অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার অর্জন করেন। টিভি নাটকে আসার আগে মোশাররফ করিম মঞ্চে কাজ করতেন। মোশাররফ করিম বলেন, ‘আসলে আমি মূলত ছাত্রজীবন থেকেই থিয়েটারপাগল ছিলাম। পরবর্তী সময়ে হুমায়ুন ফরীদি ও তারিক আনাম খানের কাছে সাক্ষাৎকার দিয়ে “নাট্যকেন্দ্রে” যোগ দেই। পরের গল্পটা তো সবাই জানেন কমবেশি।’ মোশাররফ করিম শুধু নাটকেই নন, বাংলা চলচ্চিত্রেও তার সুনাম রয়েছে। তার প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্র ‘জয়যাত্রা’। পরবর্তীতে তিনি রূপকথার গল্প (২০০৬), দারুচিনি দ্বীপ (২০০৭), থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার (২০০৯), প্রজাপতি (২০১১), টেলিভিশন (২০১৩), জালালের গল্প (২০১৫), অজ্ঞাতনামা (২০১৬), ‘হালদা’ (২০১৭) ও ‘কমলা রকেট’ (২০১৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০১৫ সালে তিনি পর্তুগালের আভাঙ্কা চলচ্চিত্র উৎসবের ১৯তম আসরে ‘জালালের গল্প’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পুরস্কৃত হন। ক্যারিয়ারের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে অপ্রাপ্তি নিয়ে মোশাররফ করিম বলেন, ‘নিজের কোনো চাওয়া নেই। একটি আফসোস খুব পোড়ায়, আমাদের নাটকের অবকাঠামোগত অবস্থা আজও ঠিক হচ্ছে না। এটি আমার কাছে বড়ই অপ্রাপ্তি। অনেক সময়ই মনে হয়, ঠিকমতো কাজ করতে পারলাম না। তবে আমি আশাবাদী, আমাদের নাট্যাঙ্গনের সব সমস্যা অচিরেই সমাধান হবে বলে আমার বিশ্বাস। ২০০৪ সালে মোশাররফ বিয়ে করেন জুঁইকে। জুঁই করিম নিজেও এখন একজন আলোচিত অভিনেত্রী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads