• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

শোবিজ

‘মানুষের চাওয়াই আমার চাওয়া ’

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০১ এপ্রিল ২০২০

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নতুন করে মমতাজ গাইলেন ‌‘বুকটা ফাইট্টা যায়’ গানটি। সুর একই থাকলেও কথায় এসেছে পরিবর্তন। নতুন কথায় দেওয়া হয়েছে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের নির্দেশনা। শিল্পীর বহুল প্রচারিত ও জনপ্রিয় গানটিকে কাজে লাগিয়ে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি করতে এ উদ্যোগটি নিয়েছে ব্র্যাক।

নতুন করে গানের কথাগুলো হচ্ছে,  দেশে ফেরত বন্ধু যখন/ চোদ্দ দিন বাইরে না গিয়া/ সবার ভালোর কথা ভাইবা একলা রয়/ ঘরে একলা রয়/ মনটা ভইরা যায়/ ও মনটা ভইরা যায়।

নতুন এ গানে মমতাজ দিয়েছেন নভেল করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের ডাক।  যাতে প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যসম্মতভাবে হাত ধোয়া এবং নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস ও হাঁচি-কাশি দেওয়ার নিয়মগুলো সুরে সুরে তুলে ধরেছেন।

কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ব্র্যাক পরিচালিত ব্যাপক জনসচেতনতামূলক প্রচারণা কার্যক্রমে ইতোমধ্যে যুক্ত হয়েছেন প্রখ্যাত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতি। তার গাওয়া একটি গান উন্মুক্ত হওয়ার পরপরই সামাজিক ও গণযোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। পাশাপাশি গানটি দেশের সমস্ত এলাকায় শহর ও গ্রামের পাড়া-মহল্লায় মাইকে করে প্রচার করা হচ্ছে।

নতুন এই গানটিতে কণ্ঠ দেওয়া প্রসঙ্গে  মমতাজ বেগম বলেন, ‌‘বর্তমানে করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে যে জাতীয় সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা মোকাবিলায় এগিয়ে আসা আমাদের কর্তব্য। সাধারণ মানুষকে সম্ভাব্য সব উপায়ে সাহায্য করা আমাদের দায়িত্ব।’

ব্র্যাক ও ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের কমিউনিকেশনস অ্যান্ড আউটরিচ-বিষয়ক পরিচালক মৌটুসী কবীর এ প্রসঙ্গে বলেন, ‌‘বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হলো ব্যাপক জনসচেতনতা এবং আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস ও আচরণের পরিবর্তন। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারকে সক্রিয় সহযোগিতা প্রদানের পাশাপাশি ব্র্যাক বিভিন্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের বার্তাগুলোকে বিশেষ করে ছোট ছোট শহর ও গ্রাম-গঞ্জের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টায় তাদের মতো প্রখ্যাত শিল্পীবৃন্দ যুক্ত হয়েছেন বলে আমরা মমতাজ এবং কুদ্দুস বয়াতির কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’

মমতাজ বেগম। এক দরিদ্র বাউল পরিবারে জন্ম। শৈশব-কৈশোর-যৌবনের বেশির ভাগ সময়ই কেটেছে চরম অভাব আর দৈন্যতায়। ঘরহীন, সংসারহীন বাউল বাবার হাত ধরেই শিল্পী মমতাজের গানের ভুবনে পথ চলা। গানকে সঙ্গী করেই জীবনের সমস্ত ক্ষুধা নিবারণের এক জীবন্ত উদাহরণ কিংবদন্তি মমতাজ। কোনো বাধা- প্রতিবন্ধকতাই দমিয়ে রাখতে পারেনি গানপাগল মমতাজের স্বপ্নকে। গান দিয়েই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তিনি। হাজারো দুঃখের মাঝে গান গেয়েই আনন্দ খুঁজে পান। গানেই প্রেম-ভালোবাসা, গানেই বিরহ অনুভূত করে চলছেন। ফলে সংসারজীবনের অস্থিরতা থাকলেও তা সংগীত জীবনের কোনো ছন্দপতন ঘটাতে পারেনি। বরং নিজের সুর আর ব্যক্তি স্বাতন্ত্রতায় জনমানুষের আজ অতি কাছের মমতাজ। পালাগানে শুরু হলেও প্রতিষ্ঠা পান বিচ্ছেদ আর মুর্শিদি গানে। কেবল দেশেই নয়, দেশের বাইরেও মেলে ধরেছেন তার এই অসাধারণ প্রতিভা। আবার সংগীত জীবনের বিশালতায় ঠাঁই দিয়েছেন রাজনীতি আর সামাজিক কর্মকাণ্ডকেও।

রাজনৈতিক ব্যস্ততার চাপে মমতাজ গানকে ভুলে যাননি। বলেন, ‘গান ছাড়া মমতাজ কোনো দিন থাকতে পারবে না। গান আমার রক্তের প্রতিটি কণায় কণায় মিশে আছে। এই গানের জন্যই আজ আমি মমতাজ হয়েছি। নাম যশ খ্যাতি পেয়েছি। সংসদ সদস্য হয়েছি। গান আমার প্রাণের খোরাক। এত ব্যস্ততার মাঝেও কিন্তু থেমে নেই আমার গান। কয়দিন পরপরই আমাকে মঞ্চে উঠতে হয়। টেলিভিশন অনুষ্ঠানে গাইতে হয়। শুধু তাই নয়, নিয়মিত নতুন গানও তৈরি করতে হচ্ছে আমাকে। যতদিন মমতাজ আছে, ততদিন তার গানও থাকবে।’

ভবিষ্যৎ নিয়ে মমতাজ বলেন, ‘আমার কোনো চাওয়া নেই। বিধাতার অসীম কৃপায় যা পেয়েছি, তা আমি কল্পনা করতেও ভয় পেতাম। আমি আগেও বলেছি, আবারো বলছি, আমার কোনো চাওয়া নেই। মানুষের চাওয়াই আমার চাওয়া। জনগণের চাওয়াগুলোকে পূরণ করাই একমাত্র লক্ষ্য আমার।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads