• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

বাংলাদেশের মোবাইল ফোন খাত নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে (বাঁ থেকে) বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তৈমুর রহমান, রবি আজিয়াটার হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স শাহেদ আলম, জিএসএমের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ইমনুয়েলা লিচি এবং অ্যামটবের মহাসচিব টিআইএম নূরুল কবির

ছবি : সংগৃহীত

টেলিযোগাযোগ

অত্যধিক কর মোবাইল সেবা উন্নয়নে বড় বাধা : জিএসএমএ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ এপ্রিল ২০১৮

মোবাইল অপারেটরদের আন্তর্জাতিক সংগঠন জিএসএম অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) মতে, বাংলাদেশে মোবাইল ফোন সেবার ওপর করের হার অত্যধিক। আর এ কারণেই অপারেটররা সেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা করলেও সব ক্ষেত্রে সফল হতে পারছে না।

গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশের মোবাইল খাতের ওপর তিনটি পৃথক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন জিএসএমএ’র এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ইমানুয়েলা লিচি। তিনি জানান, পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করহার অত্যধিক। গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া ১০০ টাকার মধ্যে কর বাবদ সরকারের কাছে চলে যায় ৫১ দশমিক ৭৫ টাকা।

তিনি আরো জানান, মোবাইল হ্যান্ডসেটের ক্ষেত্রেও উচ্চ করহার বিদ্যমান রয়েছে যার মোবাইল ফোন সহজলভ্য করার পথে একটি বড় বাধা। এ সময় মোবাইল হ্যান্ডসেটে বিদ্যমান কর কমিয়ে আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ইমানুয়েলা লিচি।

অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব) মহাসচিব টিআইএম নূরুল কবির বলেন, ‘দেশে বর্তমানে ৭৫ শতাংশ ব্যবহারকারীই ফিচার ফোন ব্যবহার করছেন। ফোরজির সম্ভাবনা থাকলেও মোবাইল ফোন আমদানিতে ২৫ শতাংশ কর থাকায় এর প্রসার হচ্ছে না।’

জিএসএমএ’র কান্ট্রি ওভারভিউ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সাল শেষে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৫০ লাখে দাঁড়িয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫১ শতাংশ। এ ছাড়া বার্ষিক ৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৫ সালে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ১০ কোটি ৭০ লাখে। প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশে মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৫০ লাখ, যা ২০২৫ সাল নাগাদ বেড়ে ১৯ কোটিতে উন্নীত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে জিএসএমএ। এ ছাড়া ২০২৫ সালের মধ্যে জনসংখ্যার ৪১ শতাংশ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করবে। এ সংখ্যা হবে ৭ কোটি ৩০ লাখ।

দেশে বর্তমানে ৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যা মোট ব্যবহারকারীর মাত্র ৩১ শতাংশ, এমনটাই জানিয়েছে জিএসএমএ। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

দেশের অর্থনীতিতে মোবাইল খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে দেশের মোট জিডিপির ৬.২ শতাংশ মোবাইল ইকোসিস্টেম থেকে এসেছে, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ছিল ১২.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে এর পরিমাণ ছিল ১৩.৫ বিলিয়ন ডলার। ধারণা করা হচ্ছে ২০২০ সাল নাগাদ এ খাত থেকে জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ হবে ১৭ বিলিয়ন ডলার।

২০১৭ সালের শেষের দিকে ইউনিক মোবাইল সাবস্ক্রাইবার ছিল ৮৫ মিলিয়ন, যার ফলে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পঞ্চম বৃহত্তম মোবাইল বাজার এবং বিশ্বের নবম বৃহত্তম মোবাইল বাজারে উন্নীত করেছে। এ ছাড়া রাজস্ব আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় মোবাইল বাজার বলেও উল্লেখ করা হয়েছে জিএসএমএ’র অপর একটি প্রতিবেদনে।

এতে আরো বলা হয়, প্রত্যেক মোবাইল ব্যবহারকারীর কাছে গড়ে ১.৭টি মোবাইল সংযোগ রয়েছে এবং মোট সংযোগের পরিমাণ ১৪৫ মিলিয়ন, যা মোট জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশ।

২০১৭ সাল শেষে ৭১ শতাংশ মোবাইল সংযোগই ছিল টুজি এবং বাকি ২৯ শতাংশ থ্রিজি। এ ছাড়া প্রতি পাঁচজনে মাত্র একজন মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল গত বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া ২০২৫ সালের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪১ শতাংশে উন্নীত হবে, যার মধ্যে অর্ধেকই থাকবে ফোরজি ব্যবহারকারী।

প্রতিবেদনে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দেখানো হয়েছে দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে থাকাকেই। এ ছাড়া ব্যবহার করতে না পারা, ব্যবহারের সুযোগ না থাকা ও নিরাপত্তার অভাবেও অনেকে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads