• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ফের মন্ত্রীদের পদত্যাগ : কঠিন পরীক্ষায় টেরিজা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে

সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাজ্য

ফের মন্ত্রীদের পদত্যাগ : কঠিন সঙ্কটে টেরিজা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৬ নভেম্বর ২০১৮

আশঙ্কাটা সেটাই সত্যি করে ব্রেক্সিট-বিতর্কে মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার দুই প্রবীণ সদস্য ইস্তফা দিয়ে সংকট বাড়ালেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর সঙ্গে ব্রেক্সিট নিয়ে খসড়া প্রস্তাব তৈরির ক্ষেত্রে জটিলতা বাড়ছে। বৃহস্পতিবার পদত্যাগের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন দুই প্রতিমন্ত্রীরও। আধাভাঙা মন্ত্রিসভা থেকে সরে গিয়েছেন ব্রেক্সিট সচিবের দায়িত্বে থাকা ডমিনিক রাব এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত শৈলেশ ভারা। ডমিনিক বলেছেন, ‘ওই খসড়া স্বচ্ছ মনে মেনে নিতে পারছি না।’ আর উত্তর-পশ্চিম কেমব্রিজশায়ারের এমপি ভারা বলেছেন, ‘অন্য দেশের তৈরি করা নিয়ম আমাদের মানতে বাধ্য করা হচ্ছে। এটা দুঃখজনক। ব্রিটেনের মানুষের এর থেকে ভাল কিছু পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’

রাবের ইস্তফাও টেরিজার কাছে বড় ধাক্কা। ইইউ এর সঙ্গে খসড়া তৈরির কাজে সরাসরি যুক্ত ছিলেন তিনি। তার দাবি, ‘ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত এক রকম তুলে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। ব্রিটেনের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তা উদ্বেগের।’

নিজের চারদিকে এই ডামাডোলের মধ্যেও হাউস অব কমন্সে মে বিবৃতি দিয়েছেন, ‘ইইউ এর সঙ্গে যে ব্রেক্সিট চুক্তি হচ্ছে, জাতীয় স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে সেটা সেরা। আমরা ঠিক পথেই এগোচ্ছি। তবে সেটা খুব সহজ নয়। আমি জানি অনেকেই বলবেন, এই চুক্তিপত্র ছিড়ে ফেলা হোক। কিন্তু সেটা দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কাজ হবে।’ প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে স্পষ্ট বুঝিয়েছেন, যেকোনো মূল্যে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এবং রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের মধ্যে সীমান্তে যাতায়াতে কড়াকড়ি থাকবে না। টেরিসার দাবি, তিনি এক প্রস্তাবে বলেছেন, ‘ইইউ এবং ব্রিটেনের মধ্যে নাগরিকদের মুক্ত যাতায়াত বন্ধ করা হবে। কী ধরনের দক্ষ লোককে দেশে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে, তা প্রয়োজন অনুযায়ী ব্রিটেনই ঠিক করবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কোথা থেকে আসছেন, তা দেখে নয়’।

বিরোধীদের তুমুল চিৎকারের মধ্যেই টেরিজা বলেছেন, ‘এখন এর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অর্থ আবার আগেকার জায়গায় ফিরে যাওয়া। ব্রিটিশ জনতা চায়, ব্রেক্সিট সংকট শেষ হোক।’ ইইউ এর সঙ্গে আর কোনো সার্বভৌম শক্তির এত সুবিস্তৃত বাণিজ্যিক সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন টেরিজা। ২৫ নভেম্বরের মধ্যে তাকে ইইউ এর সঙ্গে চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে পার্লামেন্টে যেতে হবে। এবার পার্লামেন্টে তিনি যদি ভোটাভুটিতে হেরে যান, তা হলে তাকে পদত্যাগ করতেও হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বাছতে ফের সাধারণ নির্বাচনের পথে হাঁটতে হবে ব্রিটেনকে। ইইউ এর সঙ্গে কোনো চুক্তি না হলেও প্রতিশ্রুতিমতো আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে হবে ব্রিটেনেকে।

গত রাতে টেরিজা মন্ত্রীদের নিয়ে টানা ৫ ঘণ্টার বৈঠক করেন। তার পরে প্রাথমিক ভাবে তিনি জানান, মন্ত্রিসভা তার পাশে আছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ছবিটা বদলে যায়। দু’ঘণ্টার ব্যবধানে ইস্তফা দেনন রাব ও ভারা। একটি সূত্র জানায়, কনজারভেটিভ দলের মধ্যে তলে তলে টেরিজার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার চেষ্টা চলছে।

ব্রেক্সিট বিতর্কে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে আইরিশ সীমান্ত। ব্রিটেন বা নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড, কেউই সীমান্তে কড়াকড়ি চায় না। কিন্তু ব্রেক্সিট মীমাংসায় ইইউ এর শুল্ক নীতি ঘাড়ে চাপলে কোনো পক্ষই তা মানতে নারাজ। ফলে টেরিজার সামনে এখন কঠিন পরীক্ষা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads