• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

সামরিক পদক্ষেপ যাচাই করছে যুক্তরাষ্ট্র

সিরিয়া ইস্যুতে লাল টেলিফোনে যোগাযোগ রাখছে ওয়াশিংটন-মস্কো

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৩ এপ্রিল ২০১৮

সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দৌমায় রাসায়নিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সব বিকল্প টেবিলের ওপর আছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও পশ্চিমা নেতারা সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি ‍যাচাই করে দেখছেন। এদিকে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন জানিয়েছে, সিরিয়াকে কেন্দ্র করে সরাসরি সংঘাত এড়াতে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র লাল ফোনে যোগাযোগ রাখছে। অন্যদিকে তুরস্ক জানিয়েছে, সিরিয়া সঙ্কটের বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। খবর বিবিসি। 

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স জানিয়েছেন, এখনো সামরিক হামলা চালানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে আমরা মনে করছি, রাসায়নিক হামলার জন্য রাশিয়া ও সিরিয়া দায়ী। স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি নিষ্পত্তি করার মতো অনেকগুলো বিকল্প নিয়ে ভাবে প্রেসিডেন্ট। টেবিলেও অনেক বিকল্প রয়েছে। আমরা কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করিনি। তবে খুব শিগগিরই এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সারাহর মন্তব্যে মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র তার পরিকল্পনা থেকে হয়তো সরে এসেছে। কারণ বুধবার সকালে ট্রাম্প রাশিয়ার উদ্দেশে বলেছিলেন- ক্ষেপণাস্ত্র আসছে, সতর্ক থাকো। যেগুলো আসছে, সেগুলো সুন্দর, নতুন এবং ‘স্মার্ট! সিরিয়া ইস্যুতে বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক হওয়ার কথা। সন্দেহভাজন রাসায়নিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় সামরিক হামলা চালানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স সমন্বিতভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছে। দেশগুলো প্রস্তুতি নিচ্ছে- এমনটাই ধারণা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের।

সিরিয়ায় কখন সামরিক হামলা চালানো হবে তার সুনির্দিষ্ট কোনো সময় নির্ধারণ করেননি ট্রাম্প। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস বলেন, রাসায়নিক হামলার বিষয়টি এখনো পরীক্ষা করে দেখছি আমরা। তবে প্রেসিডেন্ট  যদি সিদ্ধান্ত নেন তাহলে হামলা চালানোর জন্য সামরিক বাহিনী প্রস্তুত। সিরিয়া সংলগ্ন ভূমধ্যসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী নিয়ন্ত্রিত-ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ডোনাল্ড কুক মোতায়েন আছে। এদিকে সিরিয়ায় সম্ভাব্য হামলা নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।

ধারণা করা হচ্ছে, পার্লামেন্টের সম্মতি না নিয়েই সামরিক পদক্ষেপে যোগ দিতে মে প্রস্তুত। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ খুব তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন। সিরিয়ায় যদি কোনো হামলা চালানো হয়, তাহলে তা রাসায়নিক স্থাপনাগুলোয় চালানো হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, সিরিয়াকে কেন্দ্র করে সরাসরি সংঘাত এড়াতে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র লাল ফোনে যোগাযোগ রাখছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ বলেন, বিশেষ যোগাযোগ চালু আছে। দুই পক্ষই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে মাধ্যমটি ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সর্বোচ্চ নেতাদের মধ্যে সঙ্কটকালে বিশেষ যোগাযোগের মাধ্যমটি ‘রেড টেলিফোন’ নামে পরিচিত হলেও সেটি আসলে কম্পিউটারভিত্তিক একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা। এটি দিয়ে দুই দেশ সরাসরি একে অপরের কাছে এনক্রিপ্টেড মেসেজ পাঠাতে পারে।

অন্যদিকে তুরস্ক জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সিরিয়া সঙ্কটের বিষয়ে কথা বলবেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। বুধবার তিনি এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন। ফোনালাপে তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এরদোগান বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয় দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে চান। ইরানকেও বাদ দিতে চান না তিনি।

উল্লেখ্য, সিরিয়াির রাজধানী দামেস্কের কাছে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দৌমা শহরে গত শনিবার রাসায়নিক হামলা হয় বলে অভিযোগ করে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। এ হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হন। এ ছাড়া শতাধিক মানুষ শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বলে দাবি করেছে সংস্থাগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের মতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনী এ হামলা চালিয়েছে। তবে দেশটি তা নাকচ করে দিয়ে বলেছে, বিদ্রোহীরা এ হামলা চালিয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads