• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তেল বিক্রির অঙ্গীকার ইরানের

সংগৃহীত ছবি

বিদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তেল বিক্রির অঙ্গীকার ইরানের

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৬ নভেম্বর ২০১৮

ইরানের ওপর কঠোরতম অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতে, এ যাবৎকালের সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো গতকাল সোমবার। ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির অধীনে ইরানের ওপর থেকে তুলে নেওয়া নিষেধাজ্ঞার সবকিছু আবারো গতকাল সোমবার বহাল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে নিষেধাজ্ঞার থোরাই কেয়ার করে তেল বিক্রি করার অঙ্গীকার করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। সিএনএন ও বিবিসির খবর।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রচার যাত্রা শুরু হওয়ার আগে ট্রাম্প বলেন, আমার প্রশাসনিক নীতির কারণে ইরান ইতোমধ্যে সঙ্কটে পড়েছে। তিনি বলেন, ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। দেশটির ওপর এ যাবৎ আরোপ করা সব মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এটাই সবচেয়ে কঠোর। এখন আমরা দেখব, ইরান কী করে, কিন্তু তারা খুব ভালো কিছু করছে না, আমি এটা আপনাদের বলতে পারি।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান সাইবার হামলা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে সমর্থন দেওয়াসহ নানা হুমকিমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। আর এসব তৎপরতা বন্ধের জন্য ইরানের বিরুদ্ধে এমন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

ইরানের ৭০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, জাহাজ এবং বিমান এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। এর মধ্যে বড় বড় ব্যাংক ও তেল রফতানিকারক দেশ ও শিপিং কোম্পানিও রয়েছে। ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যকারী আটটি দেশকে নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইতালি, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, চীন ও ভারত এ ছাড় পাওয়ার তালিকায় আছে। ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও দাবি করেছেন, ছাড় পাওয়া দেশগুলো তাদের তেল রফতানির হার কমিয়েছে। এ রফতানির পরিমাণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে আরেকটু সময় লাগবে। তা বিবেচনায় নিয়ে তাদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, দুটি দেশ ইরান থেকে আমদানি ধীরে ধীরে বন্ধ করেছে, আর বাকি ছয়টি দেশ আমদানির পরিমাণ কমিয়েছে। এই দেশগুলো বাদে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য পরিচালনাকারী দেশগুলোর ওপরও এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হবে।

এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানিয়েছেন, যেকোনো উপায়েই হোক তারা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে তেল রফতানি অব্যাহত রাখবে। ইরানের সামরিক বাহিনীও দেশের সামরিক সক্ষমতা প্রমাণ করতে গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার আকাশ প্রতিরক্ষা মহড়া চালিয়েছে। এ ছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে গত রোববার সাম্রাজ্যবাদবিরোধী জাতীয় দিবস ও মার্কিন গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া দখলের বার্ষিকী পালন করেছে ইরান। ১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বর তেহরানে অবস্থিত তৎকালীন মার্কিন দূতাবাস দখলে নেয় তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানী তেহরানের মার্কিন সাবেক দূতাবাসের সামনে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘মার্কিনিরা নিপাত যাক’ স্লোগান তুলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের পতাকায় আগুন দেয়।

তেহরানের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে ৬ জাতিগোষ্ঠী চুক্তি স্বাক্ষর করে ২০১৫ সালের জুনে। ভিয়েনায় নিরাপত্তা পরিষদের ৫ সদস্য রাষ্ট্র (পি-ফাইভ) যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানি (ওয়ান) চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয় দেশটি। বিনিময়ে দেশটির ওপর আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। পূর্বসূরি ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে গত ৮ মে তা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন ট্রাম্প। এরপর থেকেই অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখে পড়ে ইরান। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, যেসব দেশ ও কোম্পানি ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাবে তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। এর পরও চুক্তির বাকি স্বাক্ষরকারীরা জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইরানে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সচল রাখতে কাজ করবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads