• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
মৃত নারীর জরায়ুতে কন্যার জন্ম

মৃত নারীর জরায়ুতে কন্যার জন্ম

ছবি : ইন্টারনেট

বিদেশ

বন্ধ্যত্ব চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত

মৃত নারীর জরায়ুতে কন্যার জন্ম

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮

জন্ম থেকেই জরায়ুহীন (জরায়ু প্রজননের উপযোগী নয়) তিনি। পৃথিবীর প্রতি সাড়ে চার হাজার নারীর একজনের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায় বলে নিজেকে হতভাগা মনে করে থাকতেন তিনি। মা হওয়ার আশা দুরাশাই ছিল তার কাছে। কিন্তু মৃত এক নারীর কল্যাণে হাসি ফুটেছে ব্রাজিলের সেই নারীর মুখে। মৃত নারীর দান করে যাওয়া জরায়ুতেই জন্ম নিয়েছে ফুটফুটে এক কন্যাশিশু।

এর আগে জীবিত নারীদের দান করা জরায়ু প্রতিস্থাপনের পর শিশুর জন্ম হলেও মৃত নারীর জরায়ুতে সন্তান জন্মের ঘটনা এই প্রথম। চিকিৎসকরা বলেছেন, এই সফলতা বন্ধ্যা নারীদের সন্তান জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাটি ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরের। আলোচ্য ওই নারীর যোনি ও জরায়ু ছিল অপরিণত। সন্তান ধারণের কোনো সম্ভাবনাই তার শরীরে ছিল না। চিকিৎসকদের দ্বারে দ্বারে অনেক ঘুরেছেন। তারা বারবারই বলেছেন, কেবল জরায়ু প্রতিস্থাপন ও ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের মাধ্যমেই মা হতে পারবেন তিনি। তবে সে ক্ষেত্রেও শতভাগ নিশ্চয়তা নেই। কারণ পৃথিবীর ইতিহাসে জরায়ু প্রতিস্থাপনের ঘটনা মাত্র ৩৯টি। আর তার মধ্যে সন্তান জন্ম নিয়েছে মাত্র ১১টি। বাকি সব ক্ষেত্রেই অকাল গর্ভপাতের শিকার হয়েছে অন্যের জরায়ু পাওয়া নারীরা। এর পরও ব্রাজিলের ওই নারী মা হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জরায়ু প্রতিস্থাপন করাতে চাইলেন। কিন্তু সমস্যা হলো জরায়ু পাওয়া নিয়ে। কেউই তাকে জরায়ু দিতে আগ্রহী ছিলেন না। এই অবস্থায় হাতাশা যখন তাকে আরো আঁকড়ে ধরতে শুরু করে তখনই ১০ বছর আগে মরে যাওয়া আরেক নারী তার জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসেন। মৃত নারীর দান করে যাওয়া জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয় জরায়ুহীন নারীর দেহে।

এক্ষেত্রেও ছিল সংশয়। কারণ এর আগে এ রকম ১০ জন মৃত নারীর জরায়ু অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপনের পরও তারা সফলভাবে সন্তান জন্ম দিতে পারেননি। তাদের সকলেরই অকাল গর্ভপাত হয়ে যায়। তবে ব্যতিক্রম ঘটে ব্রাজিলিয়ান ওই নারীর ক্ষেত্রে। টানা ১০ ঘণ্টার অপারেশনের পর সাও পাওলোয় ২০১৬ সালে জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয় তার। এর মাত্র ছয় সপ্তাহ পরে তার ঋতুস্রাব শুরু হয়। সাত মাস পর ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের মাধ্যমে তিনি গর্ভবতী হন। আর ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর জন্ম দেন ফুটফুটে একটি কন্যা শিশুর।

এ বিষয়ে সাও পাওলোর ওই হাসপাতালটির চিকিৎসক দানি আইজেনবার্গ বলেন, প্রতিস্থাপনের পর তার জরায়ু ছিল দারুণ সক্রিয়। সেখান থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করে তা আবার কৃত্রিমভাবে নিষিক্ত করা হয়। তবে এজন্য তাকে নিয়মিত ওষুধ দেওয়া হয়। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এই ঘটনাকে তিনি বন্ধ্যা নারীদের জন্য দারুণ সুখবর হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি মনে করেন, এই সফলতা বন্ধ্যা নারীদের সন্তান জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads