• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

ফাইল ফটো

বাংলাদেশ

আজ মুজিবনগর দিবস

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ এপ্রিল ২০১৮

১৭ এপ্রিল। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ এদিন মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে শপথ গ্রহণ করে। ঘটনাটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বৈদ্যনাথতলার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর।

সত্তরের নির্বাচিত জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদ সদস্যদের সিদ্ধান্তক্রমে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ঐতিহাসিক এই দিনে অনুষ্ঠানস্থলে দেশি-বিদেশি অর্ধশতাধিক গণমাধ্যমকর্মীর উপস্থিতিতে বেলা ১১টায় শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয়। কোরআন তেলাওয়াত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশকে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ এবং ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর নতুন রাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে কর্নেল এমএজি ওসমানী এবং সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ পদে কর্নেল আবদুর রবের নাম ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানের কর্মসূচি অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। এই ঘোষণাপত্র ১০ এপ্রিলেও প্রচার করা হয় এবং এর কার্যকারিতা ঘোষণা করা হয় ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে। ওইদিন থেকে ওই স্থানের নাম দেওয়া হয় মুজিবনগর। ওই অনুষ্ঠানে নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ তার ভাষণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন।

ভাষণে তাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বিশ্ববাসীর কাছে আমরা আমাদের বক্তব্য পেশ করলাম, বিশ্বের আর কোনো জাতি আমাদের চেয়ে স্বীকৃতির বেশি দাবিদার হতে পারে না। কেননা আর কোনো জাতি আমাদের চাইতে কঠোরতর সংগ্রাম করেনি। অধিকতর ত্যাগ স্বীকার করেনি।’ অর্থাৎ এর মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রী দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের আহ্বান জানালেন। আর এভাবেই মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যাত্রা শুরু হয়।

তার আগে ২৫ মার্চ রাতে দখলদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যার নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চলাকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে, ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের (ইপিআর) একটি ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ওই ডাক সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। মূলত সেই দিন থেকে বহির্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি : ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারো নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার ঢাকা ও মুজিবনগরে পৃথকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও গার্ড অব অনার প্রদানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হবে। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

১৭ এপ্রিল ভোর ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও কেন্দ্রীয় এবং দেশের সকল জেলা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

মুজিবনগরের কর্মসূচি : ভোর ৬টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ১০টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে গার্ড অব অনার। মুজিবনগরের শেখ হাসিনা মঞ্চে সকাল সাড়ে ১০টায় মুজিবনগর দিবসের জনসভা। সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads