• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
অবশেষে খুলনার মুখে হাসি

টানা চার হারের পর এলো কাঙ্ক্ষিত জয়। উল্লাস খুলনা টাইটান্স শিবিরের

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বিপিএল

অবশেষে খুলনার মুখে হাসি

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ১৬ জানুয়ারি ২০১৯

দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার মিলিয়ে দলটা যে খুব খারাপ, তা বলা যাবে না। তারপরও জয় যেন ছিল সোনার হরিণ। ধরা দিচ্ছিল না কোনোমতে। ঢাকা পর্বে টানা চার ম্যাচে হার। খুলনা টাইটান্সের কাছে বিপিএল যেন ব্যর্থতার গল্পে আটকা। ঢাকা পর্ব পেরিয়ে বিপিএল এখন পুণ্যভূমি সিলেটে। নয়নাভিরাম স্টেডিয়ামেই ভাগ্য বদল হলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের। লো স্কোরিং ম্যাচেও অবশেষে শেষ হাসি হাসতে পেরেছে খুলনা। রাজশাহী কিংসকে ২৫ রানে হারিয়ে বিপিএলে নিজেদের প্রথম স্বস্তির জয় তুলে নিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শিবির।

আগে ব্যাট করতে নেমে আহামরি স্কোর ছিল না খুলনার। ৯ উইকেটে ১২৮ রান। কিন্তু এমন রান নিয়েও খুলনা লড়ে গেছে মূলত দুর্দান্ত বোলিংয়ে। বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহ ও তাইজুলের নয়নকাড়া স্পিনঘূর্ণিতে টালমাটাল ছিল মিরাজের রাজশাহী। এক বল বাকি থাকতেই রাজশাহী অলআউট ১০৩ রানে। ৪ ওভারে ১০ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট তুলে নেওয়া খুলনার তাইজুল ইসলাম জিতে নিয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। জিততে হলে করতে হবে ১২৯ রান। এমন অল্প টার্গেটে ব্যাট করতে নেমেও শুরুতে কাঁপাকাঁপি অবস্থা ছিল রাজশাহীর। দুই ওপেনার মুমিনুল হক ও ইভান্স কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেননি। মুমিনুল ৭ রানে বিদায় নিলেও ইভান্স মেরেছেন ডাক। ৪ বলে দুই রান করে রাজশাহীর হতাশা আরো বাড়িয়েছেন হার্ড হিটার খ্যাত সৌম্য সরকার। তিনি তাইজুলের প্রথম শিকার। অধিনায়ক মিরাজ ও ডাচ অলরাউন্ডার ডেসকাট লড়াইয়ের আভাস দিলেও জয়ের জন্য তা ছিল অপ্রতুল। দলীয় ৩২ রানের মাথায় বিদায় নেন মিরাজ। তাকে বিদায় করে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ১৫ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ২৩ রান করেন মিরাজ। ১৩ রান করা ডেসকাটকেও সাজঘরে ফেরান তাইজুল।

আগের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা জাকির হোসেন এদিন হেঁটেছেন উল্টো পথে। ৭ রান করে তিনি মাহমুদউল্লাহর শিকার। ৪৭ রানে রাজশাহীর নেই তখন ৫ উইকেট। তারপরও জয়ের আশা টিকেছিল টেল এন্ডারদের লড়াইয়ে। কিন্তু শেষটা বিষাদেরই। কারণ সময়ের তালে তালে উইকেটও পড়েছে। ওঙ্কার ১৫, আরাফাত সানি ১৫ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি ১৩ রান করে হারের ব্যবধানটাই কেবল কমিয়েছেন। সানিকে ব্রাফেটের হাতে ক্যাচ বানিয়ে রাজশাহীর ইনিংসে যতিচিহ্ন এঁকে দেন খুলনার পাক পেসার জুনায়েদ খান। ১৯.৫ ওভারে ১০৩ রানে অল আউট রাজশাহী।

খুলনার হয়ে সেরা বোলিং ফিগার তাইজুল ইসলামের। ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১০ রান। উইকেট তিনটি। ইকোনমি রেট ২.৫০। মাহমুদউল্লাহও কম যাননি। ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন ১২ রান। উইকেট পেয়েছেন দুটি। এর মধ্যে একটি ওভার তো ছিল মেডেন। জুনায়েদ খান ৩.৫ ওভারে ২৬ রানের বিনিময়ে তুলে নেন তিন উইকেট। ওয়াজ ৩ ওভারে ২৮ রানে পান এক উইকেট। ডেভিড মালান ৪ ওভারে ২১ রান দিলেও পাননি কোনো উইকেটের দেখা। 

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামে খুলনা টাইটান্স। ঢাকা পর্বে এই দলের হয়ে নিয়মিত ওপেন করেছেন পল স্টারলিং। টানা ব্যর্থতার পর এই আইরিশকে বাদ দিয়েই নামে খুলনা। কিন্তু জহুরুল ইসলাম ও জুনায়েদ সিদ্দিকীর নতুন উদ্বোধনী জুটি টিকল মাত্র ১১ বল। ১৫ রানের সে জুটিতে ১১ রানই জহুরুলের (৬)। তার সঙ্গী জুনায়েদ ফেরেন পঞ্চম ওভারে। সঙ্গীর চেয়ে ৮ বল বেশি খেলে ১ রান বেশি করেছেন জুনায়েদ। ৩৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো খুলনার ইনিংস বাকি সময়টাতেও এগিয়েছে এভাবেই, খুঁড়িয়ে।

ডেভিড মালান (১৫), মাহমুদউল্লাহ (৯), নাজমুল হোসেন (১১) ও কার্লোস ব্রাফেট (৮) ব্যর্থতার মিছিলে দেশি-বিদেশিদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এক নাজমুল বাকি সবার স্ট্রাইক রেটও ছিল একশর নিচে। ৮২ রানে ৬ উইকেট হারানো খুলনাকে ভদ্রস্থ একটা স্কোর এনে দিয়েছেন সাতে নামা আরিফুল হক। ডেভিড ওয়াইজকে (১৩) নিয়ে প্রথমে তিন অঙ্ক পার করেছেন আরিফুল। খুলনার তখন এমনই দশা, ৩২ বলে ৩৪ রানের জুটিকেই মনে হচ্ছিল অনেক বড়। ১১৬ রানে ওয়াইজ বিদায় নেওয়ার পর আরিফুলও অবশ্য কাজ শেষ করে আসতে পারেননি। ২০তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানকে হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েন লং অনে। ২৭ বলে ১ চারে ২৬ রান করেই দলের সর্বোচ্চ স্কোরার আরিফুল! ২০ ওভারের ম্যাচে পুরো দল মিলে মেরেছে ৭টি চার ও ২ ছক্কা। রাজশাহীর হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ইসরু উদানা, আরাফাত সানি। মোস্তাফিজুর রহমান পান এক উইকেট। পাঁচ ম্যাচে খুলনার এটি প্রথম জয়। পয়েন্ট ২। অবস্থান সবার নিচে। অন্যদিকে পাঁচ ম্যাচে রাজশাহীর এটি তৃতীয় হার। জয় এসেছে দুটিতে। পয়েন্ট ৪। অবস্থান পঞ্চম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads