• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
শঙ্কায় ঢাকা শীর্ষে কুমিল্লা

নখ কামড়ানো উত্তেজনায় ১ রানের রুদ্ধশ্বাস জয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। ম্যাচ শেষে জয়ের নায়ক সাইফউদ্দিনকে ঘিরে সতীর্থদের উল্লাস

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বিপিএল

শঙ্কায় ঢাকা শীর্ষে কুমিল্লা

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

হতে পারতেন নায়ক। কিন্তু পারলেন না আন্দ্রে রাসেল। শেষ দুই বলে জয়ের জন্য ঢাকার দরকার ছিল ১২ রান। সাইফের করা পঞ্চম বলে রাসেল হাঁকালেন ছক্কা। নড়েচড়ে বসল দর্শকরা, নখ কামড়ানো উত্তেজনা। শেষ বলে ছক্কা মারতে পারলেই জিতে যাবে ঢাকা। জায়গা করে নেবে প্লে অফ পর্বে। কিন্তু ব্যর্থ রাসেল। সাইফের দুর্দান্ত ইয়র্কারে উল্টো ভূপাতিত রাসেল। তারপরও বল ব্যাটে লেগে হয়ে গেল বাউন্ডারি। হতাশ ভঙ্গিতে বসে রইলেন ক্যারিবীয় হার্ড হিটার। ততক্ষণে কুমিল্লা শিবিরে শুরু হয়ে গেছে রোমাঞ্চকর জয়ের উৎসব।

মাত্র এক রানের রুদ্ধশ্বাস জয়ে বিপিএলের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে কুমিল্লা। অন্যদিকে রীতিমতো ঘোর শঙ্কায় টানা পাঁচ ম্যাচ হারা ঢাকা ডায়নামাইটস। শেষ চারে উঠতে শেষ ম্যাচে তাদের জয়ের কোনো বিকল্প নেই। আজ এমন কঠিন সমীকরণের ম্যাচে ঢাকার প্রতিপক্ষ আগেই বিদায় নেওয়া খুলনা টাইটান্স। ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় শীর্ষে কুমিল্লা। আজ শেষ ম্যাচে কুমিল্লার প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্স। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মাশরাফির রংপুর। সেখানে ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় পঞ্চম স্থানে ঢাকা। ১২ ম্যাচে রাজশাহীর পয়েন্ট ১২, অবস্থান চতুর্থ। শেষ ম্যাচে ঢাকা হেরে গেলে প্লে অফে নাম লেখাবে মিরাজের রাজশাহী কিংস।  চট্টগ্রাম পর্বে বিপিএল উপহার দিয়েছিল বড় স্কোরের ম্যাচ। ঢাকা পর্বে এসে সেই আগের চিত্র। রান খরা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স করতে পারে মাত্র ১২৭ রান। জবাবে ঢাকার সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১২৬ রান। ১ রানের নাটকীয় জয়ের ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন কুমিল্লার পেসার সাইফউদ্দিন। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২২ রানে তিনি পান ৪টি উইকেট।

মিরপুর শেরে-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের সঙ্গে ৩৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে ফিরে যান এভিন লুইস। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান বাজে সময় কাটানো এনামুল হক বিজয়। শুরু থেকে বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া তামিমকে ফেরান শুভাগত হোম চৌধুরী। অফ স্পিনারের বলে লং অনে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন রুবেল হোসেন। ২০ বলে দুই ছক্কা আর চারটি চারে ৩৮ রান করেন তামিম।

শামসুর রহমান (২) ও ইমরুল কায়েসকে (৭) দ্রুত ফেরান সাকিব। দলের বিপদে পথ দেখাতে পারেননি তিন অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদী, থিসারা পেরেরা ও সাইফ। শেষের দিকে দুই ছক্কায় ওয়াহাব রিয়াজের ১৬ এবং মেহেদি হাসানের ২০ রানের ওপর ভর করে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ে কুমিল্লা। উদ্বোধনী জুটির ৩৮ রানই হয়ে থাকে সেরা জুটি। বল হাতে ঢাকার হয়ে ৩০ রানে ৪ উইকেট নেন পেসার রুবেল। দুই স্পিনার সাকিব ও সুনিল নারিনে নেন দুটি করে উইকেট। লো স্কোরিং ম্যাচ। ছোট টার্গেটে ব্যাট করতে নেমেও শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকার। ২৯ রানের মধ্যে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলে তারা। কাইরন পোলার্ডের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান নারিনে। রানের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছিল পোলার্ড ও রাসেলকে। আফ্রিদীর করা ষোড়শ ওভার মেডেন খেলে সমীকরণ বেশ কঠিন করে ফেলেন রাসেল। জয়ের জন্য শেষ ৪ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ৩৮ রান।

সাইফের করা পরের ওভারে তিনটি ডট খেলে চতুর্থ বলে ফিরে যান পোলার্ড। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সোহান। কোনোমতে হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন শুভাগত। লেগ বাই থেকে আসে একটি রান। ১২ বলের মধ্যে সেটাই ঢাকার প্রথম রান!

শেষ ৩ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ৩৭ রান। আফ্রিদীকে পরপর দুই বলে ছক্কা হাঁকান রাসেল। পরের ওভারে বেঁচে যান ওয়াহাব রিয়াজের ‘নো’ বলের জন্য। সেই ওভারের শেষ বলে হাঁকান চার। শেষ বল পর্যন্ত ঢাকার আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন রাসেল। তবে দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দেন সাইফ।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে ঢাকার প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। রাসেল যখন স্ট্রাইক পান তখন ৪ বলে দরকার ছিল ১২ রান। দুটি বল ডট খেলার পর সাইফকে ছক্কায় ওড়ান বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান। শেষ বলটি ছিল ইয়র্কার, ব্যাটের কানায় লেগে আসে বাউন্ডারি। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে নাটকীয় এক জয় তুলে নেয় কুমিল্লা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads