• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
পরিচালকদের ব্যক্তিগত কোম্পানিতে অর্থ সরবরাহ

সংগৃহীত ছবি

পুঁজিবাজার

ধুঁকছে ন্যাশনাল ফিড

পরিচালকদের ব্যক্তিগত কোম্পানিতে অর্থ সরবরাহ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ নভেম্বর ২০২০

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পাঁচ বছরের মধ্যে শেষ তিন বছর ধরে ব্যবসায় ধুঁকছে ন্যাশনাল ফিড মিল। আর এই কোম্পানিটি থেকেই উদ্যোক্তা/পরিচালকদের ব্যক্তিগত কোম্পানিতে অবৈধভাবে টাকা সরানো হয়েছে। এতে লাভবান হচ্ছে উদ্যোক্তা/পরিচালকরা। আর প্রতারিত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

ন্যাশনাল ফিড মিল ২০১৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এ কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে ১৮ কোটি টাকা সংগ্রহের পরে দুই অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ১ টাকার উপরে থাকে। এরপর শুরু হয় পতন, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ০.৫৬ টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ০.১৫ টাকা ও সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ০.১৭ টাকা ইপিএস হয়েছে। ব্যবসায় এমন দুর্বল কোম্পানিটি থেকে পরিচালকদের ব্যক্তিগত তিন কোম্পানিতে প্রায় ৭ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে।

কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবের নোট-৭এ অ্যাডভান্স, ডিপোজিট ও প্রিপেমেন্টস হিসেবে ৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে কোনো স্বার্থ ছাড়াই উদ্যোক্তা/পরিচালকদের নিজেদের কোম্পানি ন্যাশনাল ইলেকট্রোড অ্যান্ড ইলেকট্রনিকসে ২২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া কর্ণপুর অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বিনা স্বার্থে প্রদান করা হয়েছে এবং বিক্রি বাবদ ৬৮ লাখ ৯ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।

এছাড়াও ন্যাশনাল হ্যাচারি লিমিটেডের কাছে ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এর মধ্যে ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে বিনা স্বার্থে এবং ৬৯ লাখ টাকা বিক্রি বাবদ পাওনা রয়েছে।

উদ্যোক্তা/পরিচালকদের সম্পর্কিত এসব কোম্পানিতে বিনা স্বার্থে অর্থ প্রদান করা হলেও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। এর ফলে বিএসইসি নোটিফিকেশন নং বিএসইসি/ সিএমআরআরসিডি/ ২০০৯-১৩২/২/ এডমিন লঙ্ঘন করা হয়েছে।

ন্যাশনাল ফিড মিলের ২০১৯ সালের ৩০ জুন বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে বাকিতে বিক্রির কারণে পাওনা টাকা ছিল ৭২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, যা ২০২০ সালের ৩০ জুন বেড়ে হয়েছে ৭৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এভাবে নিয়মিত গ্রাহকের কাছে পাওনা টাকার পরিমাণ বাড়লেও বছরভিত্তিক গ্রাহকদের কাছ থেকে সন্তোষজনক আদায় হচ্ছে না। আদায়ে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

এদিকে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে পাওনা টাকা আদায়ে প্রত্যাশিত ক্ষতির জন্য কোনো সঞ্চিতিও (প্রভিশন) গঠন করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। এর মাধ্যমে মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখাচ্ছে ন্যাশনাল ফিড কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী, মুনাফার ৫ শতাংশ দিয়ে ওয়ার্কার্স প্রফিট অ্যান্ড পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠন করতে হয়। তবে ন্যাশনাল ফিডের ম্যানেজমেন্ট তাদের মতো করে এই ফান্ডের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে এবং সঞ্চিতি গঠন করেছে। তবে কোনো অর্থ শ্রমিকদের প্রদান করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

গত সোমবার লেনদেন শেষে ন্যাশনাল ফিডের শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ১৭.৪০ টাকায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads