প্রমত্তা পদ্মায় প্রবল স্রোতের প্রতিকূলে টিকতে না পেরে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে এখন বিকল্প চ্যানেলে চলছে ফেরি। গত বুধবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গতকাল বৃহস্পতিবার চ্যানেলটি খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন একমুখীভাবে ফেরি চলাচল করছে এ নৌরুটে। গতকাল বিকল্প চ্যানেলে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় যানজটে আটকে থাকা যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করায় যানজট কিছুটা কমেছে। তবে এখনো পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত ট্রাক।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শাহ খালেদ নেওয়াজ বাংলাদেশের খবরকে জানান, বর্তমান রানিং চ্যানেল লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে ঘূর্ণাবর্ত ও প্রবল স্রোতের কারণে গত বেশ কিছুদিন ধরে ফেরি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছিল। স্রোতের কারণে চ্যানেল পাড়ি দিতে পারছিল না ফেরিগুলো। বিআইডব্লিউটিএ গতকাল থেকে গতবারের বিকল্প চ্যানেলটি পুরোপুরি খুলে দেয়। ফলে সকাল থেকেই লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের তিন কিলোমিটার ভাটিতে বিকল্প এ চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল করছে।
তিনি আরো জানান, একমুখীভাবে চলাচল করায় ফেরিগুলোকে আর এখন লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের স্রোতের প্রতিকূলে যেতে হচ্ছে না। তবে অনেকটা পথ ঘুরে যাওয়ার কারণে ফেরি চলাচলে আগের থেকে সময় বেশি লাগছে। এতে ফেরির ট্রিপ সংখ্যা কমলেও প্রায় সব কটি ফেরি চলাচল করছে।
গত বুধবার বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক এসএম আজগর আলী জানিয়েছিলেন, ফেরি পারাপার অব্যাহত রাখতে লৌহজং টার্নিং থেকে প্রায় দেড় কিমি ভাটিতে গতবারের বিকল্প চ্যানেলটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চ্যানেলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বিকল্প চ্যানেলটি খুলে দেওয়া হতে পারে। এতে ফেরিগুলো একমুখী পথে চলাচল করবে। এতে সময় কিছুটা বেশি লাগলেও সমস্যার সাময়িক সমাধান হবে। ফেরির ইঞ্জিন মেরামত করে গতি ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দেন তিনি।
মাওয়া ট্রাফিক বিভাগের টিআই সিদ্দিকুর রহমান জানান, মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকগুলো এখন পার্কিং ইয়ার্ডে ঢুকছে। বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে যানজট কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বেশ কয়েকদিন ধরে পদ্মায় প্রবল স্রোত দেখা দেয়। স্রোতের গতির তুলনায় ফেরির ইঞ্জিনের গতি কম হওয়ায় ফেরিগুলো স্রোতের প্রতিকূলে টিকতে পারছিল না। এ ছাড়া পদ্মার লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্তের কারণে সেখান দিয়ে চ্যানেলে ঢুকতে একটি ফেরি আরেকটিকে পাশ কাটানোর সময় ফেরির নিয়ন্ত্রণ রাখা চালকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দেয়। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহনভর্তি ফেরিগুলো নিয়ে ফের ঘাটে ফিরে আসেন চালক।