• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
নকশা জটিলতামুক্ত হলো পদ্মা সেতু

নকশা জটিলতামুক্ত হলো পদ্মা সেতু। সেতুর ৬ ও ৭ নম্বর পিলার চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে

ছবি : বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

নকশা জটিলতামুক্ত হলো পদ্মা সেতু

  • মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৬ জানুয়ারি ২০১৯

অবশেষে নকশা জটিলতামুক্ত হলো পদ্মা সেতু। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেতুর ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের নকশা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আর এর মধ্য দিয়ে নির্মাণকাজে যে বিড়ম্বনা ছিল তা পুরোপুরি কাটানো সম্ভব হয়েছে।

পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের জানান, দুই দিন আগেই পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের নতুন নকশার চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। তিনি জানান, নতুন নকশা অনুযায়ী এই দুটি পিলারের প্রতিটিতে ছয়টি করে অতিরিক্ত পাইল বসানো হবে। মাঝখানে থাকবে মূল পিলার।

মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। পুরো সেতুতে মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি। প্রতিটি পিলারে রাখা হয়েছিল ছয়টি পাইল। একটি থেকে আরেকটি পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই সেতু নির্মিত হবে। ৪২টি খুঁটির ওপর ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। এর মধ্যে ৫টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। স্প্যানের অংশগুলো চীন থেকে তৈরি করে সমুদ্রপথে জাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। ফিটিং করা হয় মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে। প্রতিটি পিলারে পাইলের সংখ্যা ছয়। সব মিলিয়ে ২৪০টি পাইল বসানোর কথা ছিল। ইস্পাতের এসব পাইল মাটির নিচে ৯৬ থেকে ১২৮ মিটার পর্যন্ত গভীরে বসানোর কথা। এই পরিকল্পনায় ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ৬ নম্বর পিলারের পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। এরপর ৭ ও ৬ নম্বর পিলারে তিনটি করে মোট ছয়টি পাইলের বটম সেকশনের কাজ করা হয়। কিন্তু এসব পাইল বসাতে গিয়ে নদীর তলদেশে নরম মাটির স্তর পাওয়া যায়। তখন দুটি পিলারের ছয়টি পাইলের টপ সেকশনের কাজ বন্ধ রাখা হয়। পরে আরো ১২টি পিলারের পাইল বসানোর সময় মাটির স্তরে কাদামাটি পাওয়া যায়। সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু করে ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউই ইউকে লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির বিশেষজ্ঞরা মাটি পরীক্ষার প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাই করেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, কাদামাটির পর শক্ত মাটি না পাওয়ায় পদ্মা সেতুর ১৪টি পিলারের মধ্যে পাইলের সংখ্যা একটি করে বাড়ানো হয়। অন্যদিকে এসব পিলারে খাঁচ কাটা পাইল বসিয়ে বিশেষ ধরনের সিমেন্টের মিশ্রণে নরম মাটি শক্ত করা হয়।

কিন্তু ৬ ও ৭ নম্বর পিলারে আগে থেকে ছয়টি পাইল বসে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েন বিশেষজ্ঞরা। এসব পাইল তুলে নতুন করে পাইল বসানোর কথাও ভাবা হয়। শেষ পর্যন্ত আগে থেকে বসে যাওয়া পাইলগুলো রেখেই ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের নকশা চূড়ান্ত করা হয়।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের এক প্রকৌশলী জানান, সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর পুরো প্রকল্পের ৬২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে মূল সেতুর কাজ হয়েছে ৭২ শতাংশ। এ ছাড়া নদীশাসনের কাজ হয়েছে ৪৮ শতাংশ। পদ্মা সেতুর বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads