• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
লাগামছাড়া এসি বাসের ভাড়া

ছবি : সংগৃহীত

যোগাযোগ

লাগামছাড়া এসি বাসের ভাড়া

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ জুন ২০১৯

আসন্ন ঈদে ভাড়া বেড়েছে প্রায় সব ধরনের বাসের। এর মধ্যে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বা এসি বাসের ভাড়া এখন লাগামছাড়া। স্বাভাবিকের তুলনায় দেড় গুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছে তারা। এই বাসগুলোর ভাড়া কত হবে, সেটা নির্ধারণের কোনো নীতিমালা নেই সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ)।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর এবং দূরপাল্লার বাস-মিনিবাসের সরকার নির্ধারিত ভাড়া থাকলেও এসি বাস সার্ভিসের কোনো ভাড়া নির্ধারণ করেনি বিআরটিএ। ফলে আসন্ন ঈদেও আগে থেকেই ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে এসি সার্ভিসের বাসমালিকরা। এ বিষয়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়ে সমাধান পাওয়া যায়নি বলে যাত্রীরা জানান। তবে এসি সার্ভিসের বিষয় ‘কিছু করার নেই’ বলে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান।

মো. মশিয়ার রহমান বলেন, ‘এসি বাসের ভাড়ার তালিকা বিআরটিএ নির্ধারণ করে না। এগুলো বাসমালিকরাই নির্ধারণ করে। বাসমালিকেরই নির্ধারিত ভাড়া ছিল ৬০০ টাকা। সেখান থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৩০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।’

এমন স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মশিয়ার রহমান বলেন, ‘প্লেনে দেখেন না? একেক সময় একেক রকম ভাড়া থাকে। এগুলো এসি বাস। একেক বাসের একেক রকম সুবিধা। তাই ভাড়াও একেক রকম।’ তাহলে প্লেন ও বাংলাদেশের এসি বাস এক? এমন প্রশ্নের জবাবে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘হ্যাঁ, এক।’

তবে এর খানিক বাদে এসি বাসের জন্য আলাদা ভাড়া নির্ধারণে কাজ করবেন বলে জানান মশিয়ার রহমান। তাহলে প্রায় ২০ বছর আগে থেকে বাংলাদেশে শুরু হওয়া এসি বাসের বিষয়ে এতদিন কেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই ২০ বছরে এসি বাস নিয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। আমরা কোনো কমপ্লেইন পাইনি।’

৩১ মে শুক্রবার গাবতলী বাস টার্মিনালে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে এসব কথা বলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান। এর আগে ঝিনাইদহগামী জিআর পরিবহন নামের একটি বাস বেশি ভাড়া নিচ্ছে বলে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে অভিযোগ করেন এক যাত্রী।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুর রহিম সুজনের নেতৃত্বে টার্মিনালে আদালতের কার্যক্রম চলাকালে মোহাম্মদ সাদিক নামের এক যাত্রী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযোগ করে বলেন, জিআর পরিবহনে সবসময় সাধারণ ভাড়া ৮০০ টাকার পরিবর্তে ১ হাজার ৩০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেট কাউন্টারে গিয়ে জানতে পারলেন এটা এসি বাসের ভাড়া।

এসময় যাত্রীর টিকেট, অভিযোগকারী যাত্রী এবং কাউন্টারের ম্যানেজার মোহাম্মদ নাজিমকে নিয়ে যাওয়া হয় বিআরটিএ বুথে বসে থাকা বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমানের কাছে। ‘এসি বাস’ শুনেই চেয়ারম্যান বলে দিলেন, ‘কিছু করার নেই।’ সরকারি সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হয়েও যাত্রীর স্বার্থের বদলে মালিকপক্ষের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ জানতে চান উপস্থিত সাংবাদিকরা। তখন এসব কথা বলেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান।

এসময় বিআরটিএর চেয়ারম্যানের বক্তব্যকে সমর্থন করে এসি বাসমালিকদের এমন বাড়তি ভাড়া আদায়কে সমর্থন দিয়ে একই কথা বলেন বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বাবু রমেশ চন্দ্র ঘোষ। তিনি বলেন, ‘একটা গাড়ি যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ঈদের সময় ঢাকায় খালি ফেরত আসে। তাই ভাড়া বেশি নিতেই হয়। তবে অন্যান্য রুটের এসি বাসে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। তাহলে জিআর পরিবহন কেন নিচ্ছে? এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি বাসমালিক এই নেতা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads