• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
অর্ধেকেরও বেশি দৃশ্যমান পদ্মা সেতু

ছবি: বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

অর্ধেকেরও বেশি দৃশ্যমান পদ্মা সেতু

  • লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ জানুয়ারি ২০২০

বছরের প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে অর্ধেকেরও বেশি দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতু। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ৩২ ও ৩৩ নম্বর খুঁটির ওপর ২১ তম (সুপার স্ট্রাকচার) স্প্যানটি বসানো হয়। আজ মঙ্গলবার বিকাল ৩ টা ০৩ মিনিটে জাজিরা প্রান্তে ২১ তম স্প্যানটি বসায় সেতু প্রকৌশলীরা। স্প্যানটি স্থায়ীভাবে বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হল সেতুর ৩ হাজার ১৫০ মিটার অবকাঠামো।

পদ্মা সেতুর সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর জানান, ২১ তম ‘৪-সি’ স্প্যানটি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার (মাওয়া) কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় সময় রওনা হয় ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই। মাওয়া থেকে ধূসর রংয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ হাজার ১৪০ টন স্প্যানটি ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার 'তিয়ান-ই' ভাসমান ক্রেন নেওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা স্প্যান বসানোর কর্মযজ্ঞ শুরু করে। কয়েক ঘন্টার প্রচেষ্টা চালিয়ে বিকাল ৩ টা ০৩ মিনিটে স্প্যানটি বসাতে সক্ষম হন সেতুর সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

এর আগে, চলতি মাসের ১২ জানুয়ারি এ স্প্যানটি বসানোর কথা থাকলেও বসানো সম্ভব হয়নি। আর এসব তথ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর এক দায়িত্বশীল প্রকৌশলী জানান, সেতুর ২১ তম স্প্যান বসানোর প্রাথমিক তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ জানুয়ারি। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। কারণ সেতুর ৪০০ কেবি বৈদুতিক লাইনের পাইল ড্রাইভ চলছিল। আর এর বৈদুতিক লাইনটি মাওয়া ফেরি ঘাটের ওই দিক দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে সেতুর ক্রেনগুলো ছিল। এগুলো সরিয়ে আনতে কদিন সময় লেগেছে। তাই নির্দিষ্ট সময়ের থেকে স্প্যানটি বসাতে একটু সময় বেশি লেগেছে। তবে বছরের প্রথম স্প্যান বসাতে বিলম্ব হলেও চলতি মাসে (জানুয়ারি) যে তিনটি স্প্যান বসানোর পূর্ব পরিকল্পনা ছিল তা সম্ভব বলে তিনি আশা করেন।

তিনি আরও বলেন, ২১ তম স্প্যানটি ছাড়াও ২০ জানুয়ারি ‘১-ই’ নম্বর স্প্যানটি মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটিতে ও ৩০ জানুয়ারি ‘৬-ই’ নম্বর স্প্যানটি শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ৩১ ও ৩২ নম্বর খুঁটিতে বসানোর কথা রয়েছে।

পদ্মা সেতুর প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুতে মোট ৪২টি পিলারের মধ্যে বর্তমানে কাজ সম্পূন্ন হয়েছে ৩৫ টির। সেতুতে ২ হাজার ৯৫৯ টি রেলওয়ে স্ল্যাব ও ২ হাজার ৯১৭ টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসবে। পদ্মা সেতুর মোট ৪১ টি স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে মাওয়ায় এসেছে ৩৩ টি স্প্যান। এর মধ্যে ২১ টি স্প্যান স্থায়ীভাবে বসে গেছে।

উল্লেখ্য, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল পদ্মা সেতুতে সব মিলিয়ে ৪২টি খুঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ২১টি ও জাজিরা প্রান্তে ২১টি খুঁটি। আর ৪২ টি খুঁটির ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। এর মধ্যে ৪০ টি খুঁটি থাকবে পানিতে আর ডাঙায় ২ টি খুঁটি। ডাঙায় থাকা দু’টি খুঁটি সংযোগ সড়কের সঙ্গে মূল সেতুকে যুক্ত করবে। ছয়টি মডিউলে বিভক্ত থাকবে সেতু। মাওয়া প্রান্তে এক হাজার ৪৭৮ মিটার ভায়াডাক্ট (ঝুলন্ত পথ) থাকবে। জাজিরা প্রান্তে থাকবে এক হাজার ৬৭০ মিটার। বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নিজস্ব অর্থায়নে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে দ্বিতল পদ্মা সেতুর পুরোটাই নির্মিত হবে স্টিল ও কংক্রিট স্টাকচারে। সেতুর ওপরে থাকবে কংক্রিটিং ঢালাইয়ের চাল লেনের মহাসড়ক আর তার নিচ দিয়ে যাবে রেললাইন। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে এ পদ্মা সেতুর।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads