• বুধবার, ৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪২৯
বিপজ্জনক বাঁশের সাঁকো দিয়ে রোজ পারাপার হয় ১০ গ্রামের মানুষ

প্রতিনিদির পাঠানো ছবি

যোগাযোগ

বিপজ্জনক বাঁশের সাঁকো দিয়ে রোজ পারাপার হয় ১০ গ্রামের মানুষ

  • কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের শ্রীপুর-কাইতাপুর চৈারাস্তা মোড় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে গোবিন্দপুর বাজার পর্যন্ত ভাসনা খালের ওপর পাকা সেতু নির্মিত না হওয়ায় ইউনিয়নের ১০ গ্রামের হাজারো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খালে পড়ার ভয় নিয়ে বিপজ্জনক বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে রোজ স্কুল যায় কোমলমতি শিশুরা। বাঁশে ঝুলে খাল পার হওয়ার দুঃসাহসিকতা আর দুর্ভোগের যেন কোনো অন্ত নেই।সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন গর্ভবতী মায়েরা ও বয়োজ্যেষ্ঠ নারী-পুরুষ।রাস্তার ভাসনার খালের ওপর একটি পাকা সেতু অভাবে বিশ্বনাথপুর, কায়তাপুর, শ্রীপুর, সেনপাড়া, বিলপাড়সহ ৮-১০টি গ্রামের লোকজন বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এ সাঁকোতে প্রতিদিন সব বয়সের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় হাজার হাজার লোকজন চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায় - প্রায় দুই বছর আগে ওই খালের ওপর ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছিল। এ বাঁশের সাঁকো নির্মিত হলে দূর্ভোগ আংশিক লাঘব হয়। কিন্তু দুই বছরে রোদ-বৃষ্টিতে বাঁশের সাঁকোটি নষ্ট হয়ে চলতি বছরের শুরুতেই সাঁকোটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় হাজারো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নতুন করে সাঁকোটি নির্মিত না হওয়ায় প্রতিদিন ওই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে ভাসনা খাল পার হচ্ছেন।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত জীবন ধারায় পিছিয়ে থাকা গ্রামের মানুষদের বাঁশে ঝুলে খাল পার হওয়ার দুঃসাহসিকতা আর দুর্ভোগের যেন কোনো অন্ত নেই। বাড়িঘর, হাটবাজার, কর্মস্থল ও ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে প্রত্যেককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খালটি পার হতে হয়। শিক্ষার্থীরা বাঁশের ওই সাঁকো দিয়ে স্কুল-কলেজে যাতায়াতকালে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে আর এলাকার অসুস্থ লোকজন ওই ভাঙা সাঁকোতে ওঠে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

সেনপাড়া ও বিশ্বনাথপুর গ্রামের বিভিন্ন পাড়ার বাসিন্দা জাহেদ মিয়া, অনিমেষ সাংমা, লিনুছ ম্রং, আবদুল হামিদ, আবদুল মতিন , সুইট নকরেক ও সেনোরা বানুর অভিযোগ– দেশজুড়ে উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত থাকলেও কী কারণে আর কোন অপরাধে তাদের গ্রামে আজও এই করুণ পরিণতি বইছে তা কেউ বলতে পারেন না। সরকার নির্বাচিত করতে আর সবার মতো তারাও ভোট দেন, তবে কেন এই বৈষম্য?

সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল মান্নান বলেন, প্রতিদিন বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ওই ভাঙা সাঁকো দিয়ে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করছে। এখানে একটি স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণ করা হলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার ৮-১০টি গ্রামের লোকজনের ভোগান্তির অবসান হবে।

খারনৈ ইউপি'র চেয়ারম্যান মো.ওবায়দুল হক বলেন, প্রায় দুই বছর আগে ওই খালের ওপর ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ না থাকায় তা নতুন করে নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা পরিষদ যদি বরাদ্দ দেয় তা হলে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যেই নতুন করে আরেকটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হবে। তিনি আরোও বলেন, সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য একটি স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। গ্রামবাসীর এ দুর্ভোগে আমি নিজেও লজ্জিত। সাঁকোটি নতুন করে তৈরি করলে প্রায় লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আমরা খালের বাঁশের সাঁকো চাইনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি পাকা সেতু চাই।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আফসার উদ্দিন বলেন, ভাসনা খালের ওপর বাঁশের সাঁকোর স্থলে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করার লক্ষ্যে সয়েল টেস্ট করা হয়েছে। স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads