• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
রাবিতে শিক্ষার্থীরাই মাদকদ্রব্যের ক্রেতা-বিক্রেতা!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সংরক্ষিত ছবি

অপরাধ

রাবিতে শিক্ষার্থীরাই মাদকদ্রব্যের ক্রেতা-বিক্রেতা!

  • রাজশাহী ব্যুরো
  • প্রকাশিত ২৫ মে ২০১৮

কষ্টের টাকা পাঠিয়ে সন্তানদের বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বাবা-মা। কিন্তু খারাপ সঙ্গে মিশে অনেক শিক্ষার্থী মাদকদ্রব্য সেবনের মতো মারাত্মক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রবণতা আশঙ্কাজনক। অভিযোগ উঠেছে মাদকের ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে জমে উঠেছে মাদকের জাল। হাত বাড়ালেই মিলছে গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবাসহ বেশ কিছু মাদকদ্রব্য। তাছাড়া মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যও বেড়ে গেছে বহুগুণে। ফলে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, এমনকি শিক্ষক-কর্মচারীরাও। মাদক নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত বছর ১৬ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের ছাদ থেকে ১৩ শিক্ষার্থীকে মদ্যপানের দায়ে আটক করে। যাদের মধ্যে ৯ জন ছাত্র ও ৪ জন ছাত্রী ছিল। তবে প্রশাসন অভিযান চালালেও মাদকসেবীর সংখ্যা কমেনি, বরং বেড়ে চলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাহ মখদুম হলের পেছনের মাঠ, পুরনো ফোকলোর চত্বর, হবিবুর রহমান হলের মাঠ, শহীদুল্লাহ কলাভবন চত্বর, চারুকলার মাঠ, পূর্বপাড়া, বিনোদপুর বাজার, কাজলা গেট কেডি ক্লাব, মাদার বক্স ও সোহরাওয়ার্দী হলের পুকুরের পাশে, স্টেশন বাজার, জিমনেসিয়ামের পাশের খেলার মাঠ, পশ্চিম পাড়া, টুকিটাকি চত্বর মাদকের স্পট বলে পরিচিত। এই স্পটগুলোতে সন্ধ্যার পরপরই বিভিন্ন সঙ্কেতের মাধ্যমে শুরু হয় মাদকের অবাধ বেচাকেনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাদকসেবী জানায়, ‘ক্যাম্পাসের হলে ওঠার পরে রুমের এক বড়ভাই মাদক সেবন করত। তার সঙ্গে মিশে আমিও মাদকসেবী হয়ে পড়ি। কিন্তু বাবা যে টাকা দেয় তাতে মাদক কেনা সম্ভব না হওয়ায় ছেড়ে দেই।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও বিক্রির কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তারা মাদক কেনার জন্য নিরাপদ যানবাহন হিসেবে প্রতিনিয়তই ব্যবহার করছে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স। সন্ধ্যার পরে মাদকদ্রব্য কেনার জন্য অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বেরিয়ে যায় নগরীর বিভিন্ন মাদকদ্রব্য স্পটে। জড়িতরা শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন ইচ্ছা করলেই এসব মাদক ব্যবসা ও সেবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষা করতে পারে। কিন্তু প্রশাসনের সদিচ্ছা না থাকায় দিন দিন ক্যাম্পাসে মাদকের আড্ডা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগেও হবিবুর মাঠ, সোহরাওয়ার্দী হলের পুকুরের পাশে কয়েকজন মাদকসেবীকে দেখতে পাই। তাদেরকে মাদক সেবনের কুফল বুঝালে তারা মাদক সেবন করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর পদক্ষেপ রয়েছে।’

মতিহার থানার ওসি শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘মাদকের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। মাদকের যেকোনো ঘটনা শুনলেই সেখানে গিয়ে তাদের আটক করছি এবং তা অব্যাহত থাকবে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads