• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
সেতু তো নয়; যেন ফুচকা-চটপটির বাজার

সিলেট নগরীর শেখঘাট এলাকার কাজীরবাজার সেতু

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

সেতু তো নয়; যেন ফুচকা-চটপটির বাজার

  • আবু তাহের চৌধুরী, সিলেট
  • প্রকাশিত ০৮ জুলাই ২০১৮

সিলেট নগরীর শেখঘাট এলাকার কাজীরবাজার সেতুতে গেলে মনে হয় যেন ফুচকা-চটপটিসহ নানা পণ্যের বাজার। সেতুটি দখল করে হরেক রকম দোকান বসিয়েছেন ভাসমান ব্যবসায়ীরা। ফলে যানবাহনসহ পথচারী পারাপারের জায়গা সঙ্কুচিত হওয়ায় বেড়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

এ সেতুর ওপরে থাকা একটি চটপটির ভ্যান ঝড়ে উড়ে এসে পড়ে যুবলীগ নেতা মোসাদ্দেক হোসেন মুসা নিহত হওয়ার পর প্রশাসন সেতু থেকে ভাসমান ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে। এরপর কয়েকদিন সেতুটি হকারশূন্য ছিল। তবে সম্প্রতি ফের কাজীরবাজার সেতুর দখল নিয়েছে ভাসমান ব্যবসায়ীরা।

গত শুক্রবার সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর ওপরই ৭টি ফুচকা-চটপটি, ৩টি আইসক্রিমের ও ৪টি বাদামের দোকানের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন হকাররা। উদ্বোধনের পর থেকেই এ সেতুর দুই পাশে পথচারী চলাচলের জন্য নির্মিত ফুটপাতের পুরোটাই চটপটি-ফুচকাওয়ালা অন্য হকাররা দখলে রাখে। ফুটপাত ছাড়িয়ে যান চলাচলের অনেকাংশও দখল করে রাখে তারা। ফলে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই সেতু দিয়ে হাঁটাচলা এবং যান চলাচল করতে হয়।

গত ২৯ মার্চ রাতে মোটরসাইকেলে করে এ সেতু পার হওয়ার সময় ঝড়ে সেতুর ওপর থাকা একটি চটপটির ভ্যান এসে পড়ে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোসাদ্দেক হোসেন মুসার ওপর। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই দিন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর অবশেষে তিনি মারা যান। এরপর টনক নড়ে পুলিশের। সেতু থেকে হকারদের উচ্ছেদে নামে পুলিশ। পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় খালি করা হয় কাজীরবাজার সেতু। তুলে দেওয়া হয় সব হকারকে। তবে সম্প্রতি আবার হকারদের দখলে চলে গেছে সেতুটি।

সেতুতে ঘুরতে আসা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম জানান, অনেকদিন হকারশূন্য থাকা কাজীরবাজার সেতুটি ফের দখলে নিয়েছে হকাররা। প্রশাসন তাদের বাধা না দিলে পুরো সেতুটি আগের মতো হকারদের দখলে চলে যাবে।

সেতুতে ঘুরতে আসা দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকার কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী মারুফ ও বায়েজিদ জানান, যুবলীগ নেতা মোসাদ্দেক হোসেন মুসার মৃত্যুর পর কাজীরবাজার সেতু হকারমুক্ত হয়। তখন যারা ঘুরতে আসত তারা স্বাচ্ছন্দ্যে সেতুর দুই পাশ ব্যবহার করতে পারত। এখন আবারো হকার বসায় আতঙ্কে থাকে সেতু ব্যবহারকারীরা।

কাজীরবাজার সেতুতে কথা হয় অপু অ্যান্ড রিয়া চটপটি ও ফুসকা দোকানের মালিক আলমগীরের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিকালের চেয়ে সন্ধ্যার পর সেতুটি বেশি জমজমাট হয়ে ওঠে। যুবলীগ নেতার মৃত্যুতে কাজীরবাজার সেতু থেকে আমাদের তুলে দেয় এলাকাবাসী ও পুলিশ। দীর্ঘদিন এখানে ব্যবসা করতে না পারায় খুব কষ্ট করে সংসার চালাতে হয় সেতুনির্ভর প্রায় ২০০ হকারকে। নতুন করে আবারো ব্যবসা করতে বসেছি। এখানে ব্যবসা করতে না পারলে আমরা কোথায় যাব?

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, প্রতিদিনই তো দেশে অনেক মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। বাস-অটোরিকশা দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে কি সব যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়?

এ ব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, সেতুর ওপর আবারো ভাসমান ব্যবসায়ী বসেছে-এটা জানা ছিল না। আমরা অভিযান চালিয়ে তাদের তুলে দেব। সেতুতে কোনো দোকান বসতে দেওয়া হবে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads