• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
উখিয়ার তেলখোলা ও বটতলীতে পাহাড় ছড়ায় বালি উত্তোলন

পাহাড় ছড়ায় বালু উত্তোলন

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

উখিয়ার তেলখোলা ও বটতলীতে পাহাড় ছড়ায় বালি উত্তোলন

  • উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৩ নভেম্বর ২০১৮

পালংখালী ইউনিয়নে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের কারনে সমস্ত এনজিও সংস্থা ক্যাম্পভিত্তিক বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলছে। তাই বেড়ে গেছে বালুর চাহিদা। বালির পাহাড় এখন স্বর্ণের খনিতে পরিনত হয়েছে। বন বিভাগ ও প্রশাসনের আদেশ নির্দেশের কোনো তোয়াক্কা না করে বালি উত্তোলন ও বাজারজাত করনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট। পরিবেশবাদীদের মতে, পাহাড় ছড়া নদ-নদী ও জলাশয় থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে জলজ প্রানী ও জীব বৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। জনস্বাস্থের  হুমকির পাশাপাশি পরিবেশের মারাত্নক অবনতি হচ্ছে। 

মঙ্গলবার সকালে থাইংখালীর পশ্চিমে প্রায় ৫ কিলোমিটার অদুরে বটতলী ও তৎসংলগ্ন তেলখোলার আগা নামক স্থানে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় দুই একর কৃষি জমির উপর উত্তোলিত বালির মজুদ করে পাহাড় গড়েছে। পাশেই বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন। বনভুমির  পাহাড় সংযুক্ত ছড়া থেকে অভিনব কায়দায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সাংবাদিকের উপস্থিতি লক্ষ্য করে অবৈধ বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট মেশিন বন্ধ করে নিকটস্থ পাহাড়ে গা ঢাকা দেয়। পরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় মৃত সোলতান আহম্মদের ছেলে আব্দুস ছালাম থাইংখালী বনবিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করছে। এ ব্যাপারে আব্দুস ছালামের সাথে কথা বলার জন্য বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পরেও তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় দিল মোহাম্মদ, আলী মিয়া, সোনালীসহ আরো বেশ কয়েকজন  গ্রামবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ভারী যানবাহন দিয়ে এসব বালি পরিবহন করার ফলে গ্রামীন সড়ক অচল হয়ে পড়েছে। সেতু কালভার্ট যে কোন সময়ে ধ্বসে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার শংকা নিয়ে দিন যাপন করতে হচ্ছে। এসব বালু বেচা বিক্রি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে গ্রামবাসী জানান, সারা দিন ডেজার মেশিন চালিয়ে বালু উত্তোলন করলে দৈনিক ২-৩শ টাকার জ্বালানি খরচ পড়ে। এক গাড়ী ১৫ টন ওজনের বালু বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়। অল্প খরচে প্রচুর লাভবান হওয়ার ফলে তেলখোলা মুছারখোলা বালির পাহাড় এখন স্বর্ণের খনিতে পরিনত হয়েছে।

পরিবেশ বাদী সংস্থা কক্সবাজার মিডিয়া এন্ডভাইরেন্টমেন্ট ডেভলাপমেন্ট এর কনসাল্টটেন্ট বিশ্বজিৎ দাশ বলেন, ‘পাহাড় থেকে বালু উত্তোলনের ফলে জীব বৈচিত্র্য ও প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে। এর পাশাপাশি জীব বৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে প্রানীকুল অস্থিত্ব সংকটে পড়ার ফলে জনস্বাস্থের উপর বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে। কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশরাফ বলেন, ‘বালু দিয়ে  স্থাপনা তৈরির কারণে বালুর চাহিদা অনেক গুন বেড়ে গেছে। সে জন্য সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন বালুমহাল ইজারা দিয়ে বালির চাহিদা পূরন করছে। যারা অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে তারা দেশ ও জাতির মারাত্নক ক্ষতি করছে দাবী করে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমানসহ জানানোর অনুরোধ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মোঃ ফখরুল ইসলাম জানান, অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও মালামাল জব্দ করার বিধান রয়েছে’। তিনি জানান, সবে মাত্র কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। বালু উত্তোলনের ব্যাপারে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads