• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
তৃতীয় কন্যা হওয়ায় স্ত্রীকে তালাক

শিশু ফাতেমাকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়েছেন মা জেসমিন আক্তার

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

‘৯ দিনের মেয়েকে বিক্রি’

তৃতীয় কন্যা হওয়ায় স্ত্রীকে তালাক

  • জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েল, কুষ্টিয়া
  • প্রকাশিত ২১ নভেম্বর ২০১৮

পরপর তিন কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে এক ‘মূর্খ’ স্বামী। বিক্রি করে দিয়েছে ৯ দিন বয়সী কনিষ্ঠ কন্যাসন্তানকেও। অভিযোগ, গ্রাম্য সালিশের মধ্যস্থতায় এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুণ্ডি পাইকপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম।

তৃতীয়বারও কন্যাসন্তান হওয়ার জন্য জেসমিনকে দায়ী করে শনিবার তাকে তালাক দেয় রবিউল। জেসমিনের বাবা রেজাউল হকের অভিযোগ, স্থানীয় মেম্বার শরিফুল, মণ্ডল শহিদুল ইসলাম, খলিসাকুণ্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান আসলাম রবিউলের থেকে টাকা নিয়ে তার মেয়েকে তালাক দেওয়ার ব্যবস্থা করে। তালাকের পর ভয়ভীতি দেখিয়ে জেসমিনের কাছ থেকে নবজাতককে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে স্থানীয় মাতবররা মিলে দরকষাকষি করে শিশুটিকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় একই এলাকার ঈদগাহপাড়ার আয়ুব আলীর কাছে বিক্রি করে দেয়। রেজাউল হক বলেন, বিয়ের পর আমার মেয়ের দুটি মেয়ে হয়। কিছুদিন আগে আবার একটি মেয়ে জন্ম দেয়। এজন্য আমার মেয়েকে তালাক দেয় তার স্বামী। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।

খলিসাকুণ্ডি ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। তবে কারা বিচার করেছে বা কী হয়েছে তা বিস্তারিত জানি না।

জেসমিনের অভিযোগ, তৃতীয় সন্তানও কন্যা হওয়ায় স্বামী স্থানীয় মাতবরদের সহায়তায় তাকে তালাক দিয়েছে। পরে মাতবররা তার ৯ দিনের মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছে।

তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বিচারে আমি ছিলাম না। আর এ বিষয়ে অভিযুক্ত রবিউল ইসলামের সঙ্গে নানাভাবে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও সে কথা বলতে রাজি হয়নি।

জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা হাসিনা বেগম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা অসচেতনতার কারণেই ঘটে। আমাদের দেশের অন্যতম একটা সামাজিক সমস্যা এটি। এটি বন্ধে সবারই এগিয়ে আসতে হবে। সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে সেক্ষেত্রে যে নারীর কোনো ভূমিকা নেই সেটা বুঝতে হবে।

হাসিনা বেগম জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি দৌলতপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাদের জানাবেন। দায়ী ব্যক্তিদের সাজার আওতায় আনানোর পাশাপাশি সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করার তাগিদ দেবেন।

দৌলতপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিতভাবে অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads