• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নিত ওরা

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারকচক্রের ১৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

প্রতারকচক্রের ১৩ সদস্য গ্রেফতার

চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নিত ওরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ জানুয়ারি ২০১৯

রাজধানীতে বেকার যুবকদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারকচক্রের ১৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) বিভাগ। প্রতারক এই চক্রটি এমএলএম পদ্ধতির মতোই একেকজনকে ভর্তি করানোর পর প্রশিক্ষণের নামে সময় ক্ষেপণ করত। তারপর চাকরিপ্রার্থীকে আরো কিছু ব্যক্তিকে যুক্ত করার মাধ্যমে অধিক টাকা আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত।

ভুক্তভোগী কয়েকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারকচক্রটির ১৩ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডির মালিবাগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার মো. এনামুল কবির সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

গ্রেফতাররা হলো আশরাফুল ইসলাম (২৭), আল আমিন মণ্ডল রতন (৩০), উজ্জ্বল হোসেন (২৩), শিমুল মোল্লা (১৯), জহিরুল ইসলাম ওরফে পাপ্পু মিয়া (২০), আবদুল মোমিন (২৪), শাহীন আলম (২৪), নুর আলম সিদ্দিকী (২৫), মাজেদুল ইসলাম (২৫), ইমরুল হাসান (২৩), মনিরুজ্জামান (২৪), রিঙ্কু কুমার দাস (৩০) ও অভিজিত পান্ডে (২৪)।

বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, গত অক্টোবর মাসে লাইফওয়ে নামে একটি কোম্পানির ১৭ সদস্যকে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই কোম্পানির ২-৩ জন প্রতারক এই চক্রে যুক্ত রয়েছে। কয়েকজন ভুক্তভোগী সিআইডির কাছে অভিযোগ করেন, রাজধানীর বারিধারা এলাকায় এ রকম একটি কোম্পানি আছে যাদের কাজই হচ্ছে সহজ সরল ছেলেমেয়েদের চাকরি দেওয়ার নাম করে একটি চক্র অফিস খুলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। টাকা নেওয়া হয়ে গেলে পরবর্তীতে প্রশিক্ষণের নাম করে তারা কোনো চাকরি না দিয়ে টালবাহানা করে। এক পর্যায়ে এমএলএম পদ্ধতির মতো আরো কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী জোগাড় করতে বলে। তাদের ফাঁদে পড়ে নিরুপায় হয়ে একটা পর্যায়ে চাকরিপ্রার্থী জোগাড় করে এনে দেয়। বিনিময়ে সামান্য কিছু কমিশন পায়। চাকরিপ্রার্থী না দিলে কমিশনও আসে না। ফলে তাদের সেখান থেকে ফিরে যেতে হয়। এভাবে শত শত ছেলেমেয়ে প্রতারণার শিকার হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা এনামুল কবির বলেন, এসব জানার পর সিআইডি তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে বারিধারার ভাটারা নতুন বাজার এলাকার প্রাইম অর্কেড বিল্ডিংয়ের পঞ্চম তলা থেকে ‘এক্সিলেন্ট ট্রেড মার্কেটিং লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানির অফিসে অভিযান চালিয়ে ১৩ প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে কোম্পানির প্যাডে ১১৫টি অঙ্গীকার নামা, কোম্পানির নামে পূরণ করা ৪২টি আবেদনপত্র ও চুক্তিপত্রের ফরম ও পূরণকৃত ৩০টি ট্রেডিং কার্ড উদ্ধার করা হয়। সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা স্বীকার করে যে, একজন চাকরিপ্রার্থী ভর্তি হলে তার মাধ্যমে আরেকজন সদস্য সদস্য সংগ্রহ করে। এভাবে তারা অনেক চাকরিপ্রার্থীকে ভর্তির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, কারো কাছে ৩০ হাজার, কারো কাছে ৪৫ হাজার, কারো কাছে ৮০ হাজার আবার কারো কাছে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এভাবে ১৩০ জনের কাছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে। এর পেছনে আরো কোনো চক্র জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ১৮ জনের নামে মামলা হলেও বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই চক্রের মূলহোতাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম পরিচয় সবকিছু জানা গেছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads