• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস হওয়ার ভয়ে হত্যা

ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস হওয়ার ভয়ে হত্যা

প্রতীকী ছবি

অপরাধ

ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস হওয়ার ভয়ে হত্যা

  • খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য ফাতেমা বেগমকে (৫০) গণধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে আসামি জাহাঙ্গীর আলম (৪৫)।

গত শনিবার খাগড়াছড়ির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল আলমের আদালতে এ ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আলম। জবানবন্দিতে জাহাঙ্গীর আলম বলেছে, নজরুল ইসলাম প্রকাশ নাজিম নামে এক পিকআপ ড্রাইভারের মাধ্যমে গত ১৮ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে জালিয়াপাড়া রামগড় সড়কের মাহবুবনগর নামক স্থানে ফাতেমা বেগমকে ডেকে আনা হয়। পরে তারা ফাতেমাকে রাস্তার অদূরে একটি সেগুন বাগানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার ভয়ে জাহাঙ্গীর ও নজরুল দুজন মিলে ফাতেমাকে হত্যা করে। জবানবন্দিতে জাহাঙ্গীর আরো উল্লেখ করে, সে ফাতেমার দুই পা ও হাত চেপে ধরে এবং নজরুল তার গলা টিপে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সেগুন গাছের ঝরে পড়া শুকনো পাতা দিয়ে ফাতেমার মরদেহ ঢেকে রেখে তারা পালিয়ে যায়।

গত শুক্রবার ভোর রাতে খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম সালাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল মাটিরাঙ্গার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করে রামগড় থানা পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন এ ঘটনার আরেক হোতা নজরুল ইসলাম প্রকাশ নাজিম (২৮) নামে আরেক আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

গত ২৪ ডিসেম্বর রামগড়ের মাহবুবনগর এলাকা থেকে ফাতেমা বেগমের (৫০) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি স্বামী পরিত্যক্তা ও দুই সন্তানের জননী। এ ব্যাপারে ২৫ ডিসেম্বর রামগড় থানায় ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধমে মাটিরাঙ্গা কাজীপাড়া থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করে পুলিশ। সে মাটিরাঙ্গার তবলছড়ি ইউনিয়নের বড়বিল মুসলিমপাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে। পেশায় বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন কাজের শ্রমিক জাহাঙ্গীর দুই সন্তানের জনক।

পুলিশের ওই অভিযানে অংশ নেওয়া রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল হান্নান মো. তারেক জানান, জাহাঙ্গীরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত শুক্রবার গুইমারার জালিয়াপাড়া এলাকা থেকে নজরুল ইসলাম নাজিমকে পুলিশ গ্রেফতার করে। জাহাঙ্গীর রামগড় জালিয়াপাড়া ৩৩ কেভিএ বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন কাজের শ্রমিক। নজরুল পিকআপের মালিক ও ড্রাইভার। তার পিকআপে করেই বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনের মালামাল পরিবহন করা হতো। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান ওসি। নজরুল জালিয়াপাড়ার রেজাউলের ছেলে। তার দুই শিশু ছেলে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের মাহবুবনগর এলাকায় স্থানীয় শিশুরা বিকালে ক্রিকেট খেলার সময় বলটি বাগান থেকে কুড়িয়ে আনতে গেলে দুর্গন্ধ পায়। পরে তারা বল খোঁজার একপর্যায়ে সেগুন গাছের ঝরে পড়া শুকনো পাতায় ঢাকা গলিত লাশ দেখতে পেয়ে অভিভাবকদের জানায়। পরে খবর পেয়ে রামগড় থানার পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে। নিহত ফাতেমার ছেলে শাহজাহান এটি তার নিখোঁজ মায়ের লাশ বলে শনাক্ত করে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads