• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

অপরাধ

২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে বিদেশ পালানোর চেষ্টা

রিলায়েন্সের প্রতারণার শিকার ১৮০০ প্লট গ্রহীতা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ অক্টোবর ২০১৯

রিলায়েন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েটস নামের একটি ল্যান্ড ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের চার সদস্যের একটি চক্র ১৮০০ প্লট গ্রহীতার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে বিদেশ পালানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছ থেকে খিলক্ষেত থানাধীন ডুমনি-পাতিরা মৌজায় অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পের অনুমোদন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি বলেও জানান প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী প্লট মালিকরা। প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে ক্ষতিগ্রস্তরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিলায়েন্স মডেল টাউন প্লট ওনার্স ফোরামের সদস্যরা এ অভিযোগ করেন। এ সময় ফোরামের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবুল হুসাইন, সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ মিয়াজ উদ্দিন, সদস্য আবদুল হালিম, মোবারক হোসেন মোহন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, কাজী সহিদুল ইসলাম, নূরে আলম এলাহীসহ শতাধিক প্লট গ্রহীতা উপস্থিত ছিলেন। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রী, গণপূর্তমন্ত্রী ও রাজউকের কাছে এই ভূমিদস্যু প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, রিলায়েন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েটস হাউজিং কোম্পানির চেয়ারম্যান বদিউল আলম মজুমদার, এমডি আরিফুর রহমান ওসমানী, ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ফরাজী ও ভাইস চেয়ারম্যান বিসিআইসির বরখাস্তকৃত জিএম দেলোয়ার হোসেন প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ পরিচালকদের জিম্মি করে দেড় যুগ ধরে কোম্পানির প্লট বিক্রির সমুদয় টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন তাদের অফিসে কিংবা মোবাইল ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।

তারা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ডুমনি-পাতিরা মৌজার ৪৩নং ওয়ার্ডে রিলায়েন্স মডেল টাউনের ১৮শ প্লট মালিক ও গ্রাহক রিলায়েন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েটস কোম্পানির প্রতারণার শিকার। প্লট গ্রহীতাদের মধ্যে অধিকাংশই প্রবাসী। কোম্পানির শুরু থেকে চেয়ারম্যান, এমডি, ভাইস চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে রয়েছেন। এ চক্রটি কখনো নিজেদের চেয়ারম্যান, এমডি ও ভাইস চেয়ারম্যান বলে পরিচয় দেন। এই চারজনের সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠানের সাধারণ পরিচালকদের জিম্মি করে রেখে প্রায় দেড় যুগ ধরে কোম্পানির সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে।

তারা আরো বলেন, আমাদের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে কিস্তিতে ও এককালীন মূল্য এবং রেজিস্ট্রেশনের টাকা পরিশোধ করা সত্ত্বেও ১১শ সদস্যকে এখনো প্লট রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়নি। আবার অনেককে রেজিস্ট্রি করে দিলেও ভূমি উন্নয়ন বা প্লট বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। প্লট গ্রহীতাদের কাছ থেকে ৩ কাঠা প্লট বাবদ ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা এবং ৫ কাঠা প্লটের জন্য ৮০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। এভাবে প্লট গ্রহীতাদের কাছ থেকে দুই শতাধিক কোটি টাকা নিয়ে কোম্পানির মালিকরা এখন লাপাত্তা। এ ছাড়া প্রকল্পটির অনেকাংশের জমি এখনো পানির নিচে রয়েছে।

রিলায়েন্স মডেল টাউন প্লট ওনার্স ফোরামের সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন বলেন, পুরো প্রকল্পের প্রায় ৮শ প্লটের গ্রাহককে প্লট রেজিস্ট্রি করে দিলেও তা এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। শুধু রাস্তার লে-আউট তৈরি করলেও এ প্রকল্পটিতে বিদ্যুৎ, পানি, স্যানিটেশন ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইনের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি প্রকল্প দেখাশোনা ও নিরাপত্তার জন্য কোনো স্টাফও রাখা হয়নি। আর প্লট মালিকরা একত্র হলে চক্রটি গা-ঢাকা দিয়েছে। গত ১০ বছরে বেশ কয়েকবার চক্রটি তাদের অফিস পরিবর্তন ও মোবাইলের সিম পরিবর্তন করেছে।

তিনি বলেন, কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ভাইস চেয়ারম্যান গোপনে প্রকল্পের জমি বিক্রি এবং গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া দুই শতাধিক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালানোর চেষ্টা করছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্লট গ্রহীতাদের স্বার্থে এ চক্রটির প্রতারণা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads