• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯

ছবি: সংগৃহীত

অর্থ ও বাণিজ্য

সফটওয়্যার ও আইটি রফতানিতে ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা চায় বেসিস

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ এপ্রিল ২০১৮

সফটওয়্যার ও আইটি সেবা রফতানিতে বর্তমানে ১০ শতাংশ নগদ অর্থ প্রণোদনা দেওয়া হয়। দেশের উদীয়মান এ শিল্পের বিকাশ এবং নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে আগামী বাজেটে ২০ শতাংশ নগদ অর্থ প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। আগামী বাজেটের জন্য প্রণোদনা বৃদ্ধির প্রস্তাব এনবিআর ও এফবিসিসিআইয়ের নিকট পাঠিয়েছে সংগঠনটি।

এ ছাড়া সংগঠনটির পক্ষ থেকে আয়কর অব্যাহতি সুবিধার সনদপ্রাপ্তিতে জটিলতা নিরসন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিজিটালাইজেশনে ন্যূনতম খরচের বাধ্যবাধকতা আরোপ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার সংশোধনসহ আরো বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বেসিসের পক্ষ থেকে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা খাত আয়করমুক্ত। কিন্তু আয়কর অব্যাহতির সার্টিফিকেট পেতে নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। অনেক সময় মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও কর অব্যাহতি সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আয়কর অব্যাহতি সার্টিফিকেট প্রদান সহজীকরণের বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

সুপারিশমালার মধ্যে রয়েছে, যেহেতু ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ খাতে আয়কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সেজন্য প্রতি অর্থবছরে আয়কর অব্যাহতি সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন না করে সফট্ওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র একবারই আবেদন করবে এবং তা আবেদনের এক মাসের মধ্যে আবেদনকারীকে হস্তান্তর করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতি অর্থবছরে বেসিসের সদস্য এবং উপরোক্ত সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত সফট্ওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা চলমান আছে বলে প্রত্যয়ন করবে যা আয়কর রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে উপযুক্ত বলে গণ্য হবে। এ ছাড়া কর অব্যাহতি সার্টিফিকেটপ্রাপ্তির আবেদন গ্রহণ, প্রক্রিয়াকরণ এবং তা ইস্যু করার ক্ষমতা এনবিআরের প্রতিটি ট্যাক্স সার্কেলে অবস্থিত জোনাল অফিসের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বলা হয়, এতে সার্টিফিকেট প্রদানের ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ক্ষেপণ অনেকটাই কমে আসবে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ডিজিটালাইজেশন প্রকল্প বিনিয়োগে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার প্রদানেরও দাবি জানিয়েছে বেসিস।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী অর্থবছর (২০১৮-১৯) থেকে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক মোট বাজেটের ন্যূনতম ৫ শতাংশ অর্থ সফট্ওয়্যার এবং আইটিইএস খাতে (হার্ডওয়্যার ছাড়া) খরচ করার বাধ্যবাধকতার বিধান অন্তর্ভুক্তিকরণের দাবি জানিয়ে বেসিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এতে করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিজিটাইজেশন ত্বরান্বিত হবে এবং অনেক বড় দেশীয় বাজারের সৃষ্টি হবে।

প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজ বা প্রকল্পে বাংলাদেশি আইটি বা আইটিএস প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে একই সঙ্গে সরকারি প্রকিউরমেন্ট আইন-বিধিমালা এবং টেন্ডারে অংশগ্রহণ পদ্ধতি সহজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে প্রকল্পে ৪০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি মূল্য সংযোজন স্থানীয়ভাবে হবে, শুধুমাত্র তারাই এর আওতাধীন অর্থ পাবে বলে বিধান রাখা যেতে পারে।  

২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্য বাস্তবায়নে একটি বিশ্বমানের ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা একটি টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে সরকারের পক্ষ থেকে সেবার মান উন্নত, দ্রুততর, স্বচ্ছ এবং ব্যবসাসংক্রান্ত কাজে সময় ও ব্যয় সাশ্রয় করতে ইন্টারনেট ভিত্তিক অনলাইনে সেবা প্রদান পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। দ্রুত ডিজিটালাইজেশনের জন্য যদি কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান তা বাস্তবায়ন করতে চায়, সে ক্ষেত্রে ওই সেবার বিপরীতে আদায়কৃত অর্থ থেকে আইটি সার্ভিস দাতা প্রতিষ্ঠানকে তাদের পাওনা সার্ভিস চার্জ প্রদান করা যাবে মর্মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা স্পষ্ট আকারে থাকতে হবে। প্রয়োজনে আইটি সার্ভিস চার্জ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ সরকারি প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করতে পারবে মর্মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা প্রয়োজন।

এর ফলে, অনেক সরকারি সেবা দ্রুত জনগণ বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা সম্ভব হবে, যা সরকারের ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্য পূরণে  সহায়ক হবে।

বেসিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারি করা সার্কুলারে সফট্ওয়্যার, আইটিইএস এবং হার্ডওয়্যার রফতানির ক্ষেত্রে ‘ফরম-ক’ অনুসরণ করতে বলা হয়। এটি হার্ডওয়্যার খাতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও সফট্ওয়্যার এবং আইটিইএস খাতের সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ কারণে ওই সার্কুলারটির সংশোধন দাবি করেছে বেসিস।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads