• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪২৯

ছবি: সংগৃহীত

অর্থ ও বাণিজ্য

২০ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ে তাগিদ এনবিআরের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ অক্টোবর ২০১৮

জ্বালানি তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার কাছে বকেয়া প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ে অর্থ সচিবকে তাগিদ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআর চেয়্যারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সই করা চিঠিতে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবদুল রউফ তালুকদারকে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে পেট্রোবাংলা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বকেয়া বা ফাঁকি দেওয়া অর্থ যেন তাড়াতাড়ি সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়, তা না হলে রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল ৮ বছরে পেট্রোবাংলার অধীন ৪ কোম্পানির ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় হয় ১৯ হাজার ৭১২ কোটি টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক। কিন্তু তা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।

ইতোমধ্যে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর পর্যালোচনা সভার সিদ্ধান্তের আলোকে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের দফতর কর্তৃক বিশেষ নিরীক্ষায়ও ওই বকেয়ার কথা জানানো হয়েছে। সভায় কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের দফতর বিশেষ নিরীক্ষা এবং অর্থ বিভাগের উদ্যোগে জ্বালানি বিভাগ, পেট্রোবাংলা এবং বৃহৎ করদাতা ইউনিটের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় বকেয়া ভ্যাট পরিশোধে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

এর আগে এ অর্থ আদায়ে গত পাঁচ বছরে একাধিক চিঠি চালাচালি করলেও কোনো লাভ হয়নি। ওই সভার সিদ্ধান্তের আলোকে এনবিআর পর্যালোচনা করে দেখেছে, ভ্যাট পরিশোধে কোনো জটিলতা নেই। কিন্তু পেট্রোবাংলা বরাবরই দাবি করে আসছে, নিয়ম অনুযায়ী এই ভ্যাট পায় না এনবিআর। এ নিয়ে এক পর্যায়ে দুই সরকারি সংস্থার মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তখন এটি সমাধানে দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

২০১৬ সালে ওই কমিটি অনুসন্ধান করে দেখতে পায়, এনবিআরের পাওনা ভ্যাট আইনসম্মত। কাজেই সরকারের ওই পাওনা ভ্যাট পেট্রোবাংলাকে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।

এনবিআর সূত্র জানায়, গত বছরের মার্চে অর্থ মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও বিপিসির মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে বকেয়া ভ্যাট পরিশোধে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় পেট্রোবাংলার অনুকূলে ভর্তুকি দেবে। পরে ভর্তুকির ওই অর্থ এনবিআরকে পরিশোধ করবে পেট্রোবাংলা। সে সিদ্ধান্ত এখনো কার্যকর হয়নি।

গত অর্থবছরে ভ্যাট থেকে মোট আয় হয় ৭৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে গ্যাস থেকে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা আয় হয়। চলতি অর্থবছরে ভ্যাট থেকে মোট আয়ের লক্ষ্য ধরা হয় ১ লাখ কোটি টাকার বেশি। এনবিআরের কর্মকর্তারা আশা করছেন, বকেয়া ভ্যাটের মধ্য থেকে কিছু অংশ আয় করতে পারলে বিশাল লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়ক হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads