• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
আখাউড়া বন্দরে পণ্য আমদানি বাড়ানোর তাগিদ ব্যবসায়ীদের

আখাউড়া স্থলবন্দর

সংগৃহীত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

আখাউড়া বন্দরে পণ্য আমদানি বাড়ানোর তাগিদ ব্যবসায়ীদের

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২০ নভেম্বর ২০১৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এক সময় এ বন্দরে শ্রমিক ও পণ্যবাহী ট্রাকের কোলাহল থাকলেও এখন ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে দেশের রফতানিনির্ভর এ বন্দরটিতে। ব্যবসায়ীরা বলছেন ভারতে রেল যোগাযোগ ও উন্নত ব্যবস্থা চালু হওয়ায় এখন অনেক পণ্যই রফতানি করা যাচ্ছে না। তাই এ বন্দরের ব্যবসা বাণিজ্যে ধস নেমেছে। বর্তমানে বন্দরটিকে সচল রাখতে ভারত থেকে আমদানি পণ্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে। অন্যথায় ব্যাপক সঙ্কটে পড়বে বন্দরটি। তাই নিষিদ্ধ পণ্য ব্যতীত সব পণ্য আমদানি সুবিধা দিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।

সরেজমিন জানা যায়, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে প্রবেশদ্বার খ্যাত ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা দিয়ে আন্তঃবাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য ১৯৯৪ সালে চালু হয় আমদানি-রফতানি ও যাত্রী পারাপারের জন্য আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম। ২০১০ সালে আখাউড়া স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপান্তরিত করে সরকার। চালুর পর থেকেই এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৩২টি পণ্য ভারতের ৭টি অঙ্গরাজ্যে রফতানি হয়ে আসছিল। প্রতিদিনই শত শত ট্রাকে ভারতে যেত তুলা, পাথর, সিমেন্ট, মাছসহ নানা পণ্য। ভারত থেকে আসত হাতে গোনা কিছু পণ্য। ভারতে রেল যোগাযোগ ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যম উন্নত হওয়ায় এখন অনেক পণ্যই রফতানি করা যাচ্ছে না। গত কয়েক বছরে পণ্য রফতানি কমেছে অনেক। আগে প্রতিদিন দেড়শ থেকে দুইশ ট্রাক মাছসহ বিভিন্ন পণ্য রফতানি হতো ভারতে। সেখানে বর্তমানে তা ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাকে নেমেছে। আর এতে স্থলবন্দরের শত শত ব্যবসায়ী ও কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বন্দরের ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে ভারত থেকে ৩০টি পণ্য আমদানি করার জন্য অনুমতি চেয়েছিল। এর মধ্যে অনুমতি দেওয়া হয়েছে ফুলের ঝাড়ু, রাবার, পান, বাশের তৈরি আসবাবপত্র, গরুসহ ৫টি পণ্য। ব্যবসায়ীরা বলছেন যে পণ্যগুলো নতুন করে আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে এ পণ্যের চাহিদা নেই এই এলাকায়। তাই সরকারের কাছে অন্যান্য বন্দরের মতো নিষিদ্ধ পণ্য ব্যতীত সব পণ্য আমদানির অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

আখাউড়া স্থলবন্দরের শ্রমিক মো. মিলন মিয়া জানান, আগে বন্দর দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক মালামাল রফতানি হতো। তখন আমাদের কাজও হতো অনেক। রফতানি কমে যাওয়ার কারণে আমাদের কাজও কমে গেছে। কাজ কমে যাওয়ায় অনেকেই অন্য পেশায় চলে গেছেন।

স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মনির হোসেন বাবুল বলেন, সরকারের কাছে আমরা যে পণ্যগুলোর আমদানি সুবিধা চেয়েছিলাম সেই পণ্যগুলো বাদ দিয়ে ফুলের ঝাড়ু, রাবার, পান, বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র, গরু আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে। আর আমাদের আশপাশের এলাকায় এ পণ্যগুলোর কোনো চাহিদা নেই। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি বন্দরটিকে সচল রাখতে চাইলে অন্যান্য বন্দরের মতো নিষিদ্ধ পণ্য ব্যতীত সব পণ্য আমদানি করার সুযোগ দেওয়া হোক। অন্যথায় স্থবির হয়ে পড়বে এই বন্দরটি।

আখাউড়া স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুল ওয়াহাব মিয়া বলেন, বর্তমানে এ বন্দরের শ্রমিকসহ ব্যবসায়ীরা পথে বসার উপক্রম হয়েছেন। তাই এ বন্দর সচল রাখতে সব পণ্যে আমদানি সুবিধা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।  

আখাউড়া স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, আখাউড়া স্থলবন্দর আগের মতো সচল নয়। সব পণ্যে আমদানি সুবিধা পেলে আবারো বন্দরটি স্বাভাবিক হতো। এতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের পাশাপাশি সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আহরণ করতে পারত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads