• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
করোনায় করুণ দশা সিরাজগঞ্জের দুগ্ধ খামারীদের

ছবি: বাংলাদেশের খবর

অর্থ ও বাণিজ্য

করোনায় করুণ দশা সিরাজগঞ্জের দুগ্ধ খামারীদের

  • সালাহউদ্দিন সালমান, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ)
  • প্রকাশিত ২০ এপ্রিল ২০২০

করোনাভাইরাসের কারণে সিরাজদিখান উপজেলায় এখন পানির দরেই বিক্রি হচ্ছে দুধ।  বাজারগুলোতে ক্রেতা সমাগম নেই।  সেই সঙ্গে ঢাকা ও নারায়নগঞ্জের মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় এ উপজেলায় উৎপাদিত দুধ অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যেখানে বোতলজাত এক লিটার মিনারেল ওয়াটার কিনতে লাগে ২০ টাকা, সেখানে এক লিটার দুধ পাওয়া যাচ্ছে ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকায়। এক কথায় দুগ্ধ খামারীদের উৎপাদিত দুধ এখন বাজার কিনতে পাওয়া যাচ্ছে পানির দরেই।  উৎপাদিত দুধ বিক্রি করতে না পেরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি দুগ্ধ খামারীদের কপালে এখন দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

এদিকে অনেকেই ঋণ নিয়ে গড়ে তুলেছেন দুগ্ধ খামার। দুধ বিক্রি না হওয়ায় সেই ঋণ এখন দুগ্ধ খামারীদের মাথার বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার দুধ বিক্রিতে লোকসানের মুখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার ছোট-বড় প্রায় ৪০০ দুগ্ধ খামারী। আবার অনেকে লোকসানের পাল্লা কমাতে অবিক্রিত দুধ দিয়ে দই, ঘি তৈরী করে রাখছেন।  তাছাড়া খামারের গাভীকে খাবার কম দিয়ে দুধের উৎপাদন কমিয়ে আনছেন খামারীরা।

উপজেলার লতব্দী গ্রামের নুসরাত ডেইরী খামারে রয়েছে ২৬টি গাভী। এর মধ্যে ৯টি গাভী থেকে ১০০ লিটার দুধ উৎপাদিত হয়ে আসছে এমনটাই জানিয়েছেন খামারের স্বত্বাধিকারী আরিফ খান।  তিনি বলেন, আগে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা লিটার প্রতি দুধ বিক্রি হত।  করোনার কারণে সেই দুধ লিটার প্রতি এখন ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে তাকে দৈনিক লোকসান গুণতে হচ্ছে ৫ হাজার টাকা।

তিনি জানান, এ অবস্থায় লোকসান কমাতে গাভীগুলোকে খাবার কম দিচ্ছেন। একই সঙ্গে খাবার কম পেলে গাভীই কম দুধ দিচ্ছে। করোনার থাবায় লোকসানের কবলে থাকা এ দুগ্ধ খামারের দুশ্চিন্তা এখন খামার প্রতিষ্ঠাকালে ব্যাংক থেকে নেওয়া ১৫ লাখ টাকা ঋণ। লোকসান অব্যাহত থাকলে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন কিভাবে-তা নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন তিনি।

উপজেলার গোয়ালবাড়ির মা ডেইরী ফার্মের মালিক অরুন ঘোষ জানান, রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানগুলোতে উৎপাদিত দুধ বিক্রি করেন। করোনার কারণে যানবাহনের অভাব ও মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় সেই দুধ বিক্রি হচ্ছে না। তার ফার্মের ৫০ টি গাভী থেকে দৈনিক ৬০০ লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। এখন ক্রেতার অভাবে স্থানীয়দের কাছে ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা দরে সেই দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত দুই লাখ টাকা লোকসানে পড়েছেন তিনি।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কমকর্তা ডা. হাসান আলী বলেন, উপজেলায় ৩৬৬টি খামার আছে। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি খোলা।  প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত খাতে সারা দেশের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। শুধু সরকারের উপরের নিদের্শনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads