• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
সময়ক্ষেপণে প্রকল্প বন্ধের সুপারিশ

ফাইল ছবি

ব্যবসার খবর

সময়ক্ষেপণে প্রকল্প বন্ধের সুপারিশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ব্যয় বাড়ানো হয়েছে দুবার, সময় বাড়ানো হয়েছে তিনবার; এর মধ্যে ২০ কোটি টাকার অনিয়মও হয়েছে। কিন্তু তারপরও শেষ হয়নি প্রকল্প। উপায়ান্তর না পেয়ে প্রকল্পটি বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টটির কোনো ভবিষ্যৎ নেই বলে মত দিয়ে তা বন্ধ করে দিতে বলেছে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। 

জানা যায়, প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় ২০১০ সালে। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালে। চার বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প ১১ বছরেও শেষ হয়নি। ব্যয় বাড়ানো হয়েছে দুবার। সময় বাড়ানো হয়েছে তিনবার। এর মধ্যে অনিয়ম করে ২০ কোটি টাকার কেনাকাটাও করা হয়েছে।

মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৫৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৭০৮ কোটি। সময় বাড়ানো হয় ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। এর পরে ব্যয় না বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়। ২০২১ সালের জানুয়ারি মেয়াদে প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ৩৬ শতাংশ। বাস্তব অগ্রগতি মাত্র ৬০ শতাংশ। প্রকল্পের লক্ষ্য পূরণ না হলেও সময় আর বৃদ্ধি না করে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে বিধি মোতাবেক প্রকল্প শেষ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে আইএমইডি। সম্প্রতি প্রকল্পটি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। জুম মিটিংয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিনিধি ছাড়াও পরিকল্পনা কমিশন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), আইএমইডি ও অর্থ বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রকল্প প্রসঙ্গে আইএমইডি মতামত তুলে ধরে।

২০১০ সাল থেকে চলতে থাকা প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি মাত্র ৬০ শতাংশ। প্রকল্পটি ৭টি সিটি করপোরেশন ও ৩২৬টি পৌরসভায় চলমান। এ বিষয়ে আইএমইডির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নানা কারণে প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নেই। ফলে মেয়াদ বৃদ্ধি করা উচিত হবে না। তাই আমরা বলেছি প্রকল্পটি সমাপ্ত করে দিতে। প্রয়োজনে নতুন একটি প্রকল্প হাতে নিতে হবে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় অনিয়ম করে ২০ কোটি টাকার কেনাকাটা করার বিষয়টি নিয়েও স্টিয়ারিং কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে।

দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পের বাইরে প্রায় ২০ কোটি টাকার পাঁচটি হাইড্রো হুইল লোডার এবং পাঁচটি হাইড্রোলিক এক্সক্যাভাটর কেনা হয়েছে, যা অনুমোদিত ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) নেই। তবে কেনাকাটার সময় স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এডিবির অনুমতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুটি পণ্য ক্রয় প্রকল্প সংক্রান্ত পরিপত্রের লঙ্ঘন হয়েছে। পরিপত্রের ২১ বিধি অনুযায়ী এ ধরনের জরুরি প্রয়োজনে মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তবে পরিকল্পনা কমিশনের পূর্বানুমতি গ্রহণ করা হয়।

সভায় বিধিবহির্ভূত এই ক্রয়ের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে একটি রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। প্রকল্পের ধীরগতি ও ২০ কোটি টাকার কেনাকাটা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে প্রকল্পের পরিচালক নুরুল আলম বলেন, ২০ কোটি টাকার দুটি কেনাকাটা করা হয়েছে। এটা ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) ছিল না। পরে একটা কমিটি গঠন করা করা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো রেজুলেশন হয়নি। 

প্রসঙ্গত, প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য ঢাকায় একটি ফুড ল্যাবরেটরি ও ট্রেনিং সেন্টার সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একটি ফুড ল্যাবরেটরি নির্মাণ। সাতটি সিটি করপোরেশনে মোট ৪৬টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ। সাতটি সিটি করপোরেশন এবং ৩২৮টি পৌরসভার আর্থিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং স্বনির্ভরতা অর্জন। নাগরিকবান্ধব জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক পলিসি ও গাইডলাইন নির্দেশিকা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার ও সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ। এছাড়া সিটি করপোরেশনসমূহে অটোমেশনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়, ফুড ল্যাব এবং ট্রেনিং সেন্টার, রিকশাভ্যান সাপ্লাই, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য হাইড্রোলিক ডাম্প ট্রাক সরবরাহ, ইকুইপমেন্ট (ওয়েস্ট বিন) ফর আরবান প্রাইমারি কালেকশন, সাতটি সিটি করপোরেশনে ডাবল কেবিন পিকআপসহ অন্যান্য যানবাহন সরবরাহ, ফার্নিচার সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজের জন্য পে লোডার ও এক্সক্যাভেটর সরবরাহ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads