• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
গানে ফিরছেন নিতাইগঞ্জের পাখি

ডলি সায়ন্তনী

ছবি : সংগৃহীত

আনন্দ বিনোদন

গানে ফিরছেন নিতাইগঞ্জের পাখি

  • প্রকাশিত ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

সুরেলা কণ্ঠের জন্য শ্রোতাদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা সব সময়ই অন্যরকম। এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী। তিনি ডলি সায়ন্তনী। অডিও ক্যাসেটের যুগে তার অসংখ্য গানের অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে। গানের ভুবনে বর্তমানে খুব কমই দেখা মেলে কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনীর। বর্তমানে অ্যালবাম প্রকাশ থেকে দূরে রয়েছেন, কিন্তু গানের সঙ্গেই আছেন তিনি। নতুন করে প্রত্যাবর্তনের কথাও ভাবছেন। বর্তমান সময়ের ব্যস্ততা ও গান নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন সালেহীন বাবু

 

সমসাময়িক ব্যস্ততা-

এখন গান নিয়ে আগের মতো ব্যস্ত সময় কাটে না। খুব কম কাজ করা হয়। এ ছাড়া সাংসারিক কাজেও ব্যস্ত থাকতে হয়। তবে ভালো কিছু করার পরিকল্পনা করেছি। আমার গাওয়া জনপ্রিয় ১০টি গান নতুন সঙ্গীতায়োজনে ভিডিওতে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। গানগুলো নতুন আয়োজনে উপভোগ করবেন শ্রোতারা।

১৯৯০ সালে আপনার প্রথম একক অ্যালবাম ‘হে যুবক’ বাজারে আসে। তারপর কেটে গেছে অনেকগুলো বছর।

 

গানে গানে এতটা বছর পাড়ি দেওয়া-

কখন যে দেখতে দেখতে এতটা সময় পেরিয়ে গেছে ভাবতেই পারিনি। ‘হে যুবক’ থেকে শুরু হয় আমার পথচলা। মিল্টন খন্দকারের কথা ও সুরেই মিডিয়াতে গানের একজন হিসেবে আমার অভিষেক। এরপর কত-শত মানুষের লেখা ও সুরে গেয়েছি তার কোনো হিসাব নেই। জীবনে নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ শ্রোতাদের কাছে আমি সমাদৃত একজন শিল্পী। জীবনে এরচেয়ে বড় আর কী-ই বা পাওয়ার আছে। শিল্পী হিসেবে দেশে, দেশের বাইরে যে সুনাম আছে তা আজীবন ধরে রাখতে চাই আমার শ্রম আর সাধনা দিয়ে।

 

আসিফের সঙ্গে-

সম্প্রতি আসিফের সঙ্গে দ্বৈতকণ্ঠে একটি গান করেছি। ‘মন হয়ে যায় ভালো’ শিরোনামের গানটির কথা লিখেছেন গীতিকার প্রদীপ সাহা। সুর করেছেন অভি আকাশ। সঙ্গীতায়োজন করেছেন মুশফিক লিটু। এটি আগামী ২৪ জানুয়ারি ‘সাউন্ডটেক’ থেকে গানটি প্রকাশ পাবে। এর ভিডিওটি নির্মাণ করেছেন সৈকত নাসির। এর আগেও আসিফের সঙ্গে গান করেছি। আমরা প্রথম গান করেছিলাম ২০০৮ সালে ‘যায় দিন যায়’ শিরোনামের অ্যালবামে। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে অ্যালবামটি বাজারে এনেছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সঙ্গীতা।

গান মানেই মিউজিক ভিডিও-

এক সময় গান প্রকাশ হতো অ্যালবামে। বছরে একটি কিংবা দুটি ক্যাসেট নিয়ে সারা বছর ব্যস্ত থাকতে হতো। তখন একটি গানের ক্যাসেট বাজারে আসা মানে একজন কণ্ঠশিল্পীর জন্য অনেক কিছু। কোম্পানিগুলোও সারা বছর ব্যস্ত থাকত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে অনেক কিছু। পরিবেশের পাশাপাশি বদলে গেছে গান প্রকাশের ধরন এবং মাধ্যম। ৮-১০টি গান নিয়ে এখন অ্যালবাম প্রকাশ হয় না। একক গান প্রকাশ পায় ইউটিউবে।

 

বর্তমান সময়ের গান নিয়ে আপনার ভাবনা-

ভালোলাগার মতো গান খুব কম হচ্ছে। গান নিয়ে তেমন একটা ভাবা হচ্ছে না। খুব দ্রুত গান প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু আমরা গানের পেছনে সময় ব্যয় করেছি। গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীরা প্রতিনিয়ত গান নিয়ে বসেছি। গানের কথা ও সুর নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণের পর শিল্পীর কণ্ঠে উঠত। সবার প্রচেষ্টায় একটি সুন্দর গান তৈরি হতো। সে জন্যই তখনকার গানগুলো এত জনপ্রিয় হয়ে কালজয়ী হয়ে আছে। এখন কোনো গান লেখার পর তাতে হাত বসিয়ে পরিবর্তনের প্রশ্নই ওঠে না। যেটা লেখা হয়েছে সেটাই ঠিক মনে করা হয়। বর্তমানের শিল্পীদের শেখার আগ্রহ কম। সেক্রিফাইজের মানসিকতা কম। কমার্শিয়াল চিন্তাটাই বেশি। এজন্য আমাদের সংশ্লিষ্ট মহলকে সচেতন হতে হবে।

 

অডিও ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা-

এখন অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা ভালোই বলা চলে। পুরনো অনেকেই ফিরছেন। আমি তো ভেবেছিলাম আর হয়তো আগের অবস্থায় ফিরবে না ইন্ডাস্ট্রি। সেটা হয়তো এখনো হয়নি। তবে অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে। এখন অনেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানই বিনিয়োগ করছে। পুরনো কোম্পানিগুলো ফিরছে। নতুন কোম্পানি আসছে। এটা অডিও ইন্ডাস্ট্রির জন্য সুখবর। এখন সিডির বদলে ডিজিটাল মাধ্যমে শ্রোতারা গান বেশি শুনছেন। এটা সময়ের চাহিদা। বিশ্বেই এমনটা হচ্ছে। আশা করছি সবাই মিলে আগের মতো করে কাজ করতে পারব।

 

শিল্পী মানে সমাজের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা। সেই দায়বদ্ধতা পালনে করণীয়-

শুধু শিল্পী বলেই নয়, সমাজের প্রতিটি মানুষেরই কিছু না কিছু করা উচিত। আমারো সেই চেষ্টা আছে। হয়তো বড় কিছু করতে পারব না। কিন্তু কিছু করার সদিচ্ছা আমার আছে। আমি মনে করি নিজের জীবনের জন্যই শুধু নয়, মানুষের কল্যাণের জন্যও কিছু করতে হয়। যদি তা করা যায় তাহলেই সমাজের প্রতিটি মানুষ সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads