• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
এশীয় তারুণ্যের সম্মিলনে বাংলাদেশের সাহারিয়া

সম্মিলনটিতে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন যুব সংগঠক সাহারিয়া রহমান খান

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

এশীয় তারুণ্যের সম্মিলনে বাংলাদেশের সাহারিয়া

  • প্রকাশিত ২০ আগস্ট ২০১৮

সম্প্রতি শেষ হলো দুই দিনব্যাপী এক যুব সম্মেলন। এশিয়ার বিভিন্ন দেশের তরুণরা কাঠমান্ডু শহরে মিলিত হয়ে উচ্চকণ্ঠে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতাদের প্রতি। এ তারুণ্যের সম্মিলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন যুব সংগঠক সাহারিয়া রহমান খান। তাকে নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন সোহানুর রহমান

জলবায়ুর বিরূপ পরিবর্তনের ঝুঁকিতে বিশ্ব। কিন্তু এই ইস্যুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন দলে বিভক্ত। একটি শান্তিময়, বাসযোগ্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পৃথিবী গড়তে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে তরুণসমাজ। এই চেতনাকে ধারণ করেই এশীয় দেশগুলোর তরুণদের মধ্যে বোঝাপড়া ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে শেষ হয় দুই দিনের এই যুব সম্মেলন। ন্যাশনাল ইয়ুথ পার্লামেন্ট নেপাল এবং এশিয়ান ইয়ুথ অ্যাসেম্বলি যৌথভাবে ১১ ও ১২ আগস্ট ন্যাশনাল অ্যা‌সে‌ম্বলি হলে এ উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনটির আয়োজন করে। বিভিন্ন দেশের যুব প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিয়ে তুলে ধরেছেন তাদের নিজ নিজ দেশের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা। সম্মেলনে শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনস, ভুটান, সিঙ্গাপুর ভিয়েতনামসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শতাধিক তরুণ প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন। এ গুরুত্বপূর্ণ সম্মিলনটিতে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন যুব সংগঠক সাহারিয়া রহমান খান। বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে এমবিএতে অধ্যয়নরত তিনি। পাশাপাশি তিনি বরিশাল ল’ কলেজের এলএলবি কোর্সেও পড়াশোনা করছেন। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে বাংলাদেশ মডেল ইয়ুথ পার্লামেন্ট নামের একটি যুব সংগঠনে তিনি সম্পৃক্ত বহু বছর ধরে। সামাজিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে সংগঠনটিতে জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিবেদিতভাবে কাজ করে আসছেন সাহারিয়া। বাংলাদেশ মডেল ইয়ুথ পার্লামেন্ট দেশের অন্যতম শীর্ষ জলবায়ু নেটওয়ার্ক ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের তরুণদের ক্ষমতায়নে সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগকে এগিয়ে নিচ্ছেন। সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সাহারিয়া বলেন, জলবায়ু ন্যায্যতা আদায়ে আমাদের যুবদের অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি যুব সমাজকে অবদান রাখতে হলে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত নীতিমালা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডে যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিভিন্ন ধরনের কর্মশালার মাধ্যমে যুবদের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে।

পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা দুই শতাংশের বেশি বাড়লে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে বলে আশঙ্কা গবেষকদের। এতে সমুদ্রে তলিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের  এক-তৃতীয়াংশ এলাকা। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর অনেক দেশ এ সমস্যায় পড়বে।  আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর এসেছে যে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াসহ ওয়াশিংটন ডিসি ডুবে যাবে। এর মানে হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য সব দেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায়ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্যারিস চুক্তি অনুসারে উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার পাশাপাশি এশিয়ান জলবায়ুবিষয়ক আইন সময়ের দাবি। তাহলে এশিয়ার অন্তর্ভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বৈশ্বিক এ সমস্যার হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পেতে পারে বলে মনে করেন সাহারিয়া। সম্মিলনে অংশ নিতে পেরে অনুভূতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাহারিয়া বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় বাংলাদেশের যুবদের কার্যক্রম এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। পরবর্তী সময়েও এমন সুযোগ পেলে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে তুলে ধরার পাশাপাশি জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় অবহেলিত মানুষ বিশেষ করে নারী-শিশু এবং প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আমরণ কাজ করে যেতে চাই।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads