• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
ঘাড়ের বাত

সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস বলতে বোঝায় মেরুদণ্ডের গ্রীবা অঞ্চলের বাতরোগ

ছবি : ইন্টারনেট

ফিচার

ঘাড়ের বাত

  • প্রকাশিত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Dr. Mizanur rahman kollol

ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল

স্পনডাইলোসিস শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ spondzlos থেকে, যার অর্থ ভার্টিব্রা বা কশেরুকা। Spondzlos শব্দটির সঙ্গে গ্রিক প্রত্যয় osis জুড়ে দিয়ে তৈরি করা হয়েছে spondzlosis শব্দটি, যার বাংলা পরিভাষা মেরুদণ্ড বা কশেরুকার বাত। সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস বলতে বোঝায় মেরুদণ্ডের গ্রীবা অঞ্চলের বাতরোগ। সাধারণ বাংলায় এটাকে বলে ঘড়ের বাত। এক্ষেত্রে মেরুদণ্ডের গ্রীবা অঞ্চলের অর্থাৎ ঘাড়ের অংশের কশেরুকাগুলোর মধ্যকার ডিস্ক বা চাকতিসদৃশ তরুণাস্থি ক্ষয় হয়ে যায়।

মানুষের মেরুদণ্ড ৩৩টি ভার্টিব্রা বা কশেরুকা দিয়ে তৈরি। ঘাড়ের অংশে থাকে সাতটি কশেরুকা। এই কশেরুকাগুলো একটি অপরটির সঙ্গে ডিস্ক ও লিগামেন্ট দিয়ে সংযুক্ত থাকে। মেরুদণ্ডের ঘাড়ের অংশ সামনের দিকে উত্তলভাবে বাঁকানো। সবচেয়ে বেশি বাঁকানো থাকে পঞ্চম ও ষষ্ঠ কশেরুকার মধ্যকার ডিস্ক বরাবর। এই ডিস্কে স্পনডাইলোসিস বেশি ঘটে, কারণ এই স্থানে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে।

প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রীবা কশেরুকা বাদে ঘাড়ের পাঁচটি কশেরুকা প্রায় একই রকম দেখতে। সাধারণত ২০ বছর বয়সের পর থেকেই গ্রীবা কশেরুকাগুলোতে কিছু পরিবর্তন শুরু হয়। দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্কের পানির ভাগ কমতে শুরু করে। এর ফলে ডিস্ক হারাতে থাকে তার স্থিতিস্থাপকতা। ডিস্কগুলো ধীরে ধীরে শুকিয়ে পাতলা ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। এর ফলে কশেরুকাগুলোর প্রান্তগুলো পরস্পরের সঙ্গে ঘষা খেতে থাকে এবং তৈরি হয় হাড়ের উপবৃদ্ধি। এই হাড়ের উপবৃদ্ধিগুলো ঘাড়ের দুর্বল ও নড়বড়ে কশেরুকাগুলোকে কিছুটা সুস্থিতি দিলেও আরেকটি যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। দুটি কশেরুকার মাঝের যে ছিদ্র দিয়ে সুষুম্না স্নায়ুগুলো বেরিয়ে আসে সুষুম্নাকাণ্ড থেকে, সেই ছিদ্রের ভেতরও এসব হাড়ের উপবৃদ্ধিগুলো তৈরি হতে থাকে। ফলে ছিদ্রগুলো সরু হয়ে যায় এবং চাপ পড়ে সেই সব সুষুম্না-স্নায়ুমূলে চাপের ফলে ব্যথা ঘাড় থেকে নেমে আসে হাত ও আঙুলে।

স্পনডাইলোসিস সাধারণত ঘটে ঘাড়ের নিচের চারটি কশেরুকায়। অর্থাৎ চতুর্থ থেকে সপ্তম কশেরুকায়। উপরের তিনটি কশেরুকায় স্পনডাইলোসিস খুব কম হয়। কারণ ওখানে খুব একটা চাপ পড়ে না। সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের ব্যথা সর্বদা ঘাড়ের পেছনে অনুভূত হয়, কখনোই ঘাড়ের সামনের দিকে অনুভূত হবে না। ব্যথা তীব্র হলে তা কাঁধে ও বাহুর পেছনের দিকে কনুই পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। কখনো কখনো ব্যথা হাতে ও আঙুলে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রশ্ন : কী কারণে সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস হয়?

উত্তর : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ড, ঘাড়ের হাড় ও কার্টিলেজে কিছু পরিবর্তন ঘটতে থাকে, যার কারণে সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস হয়। এ পরিবর্তনগুলো হলো :

পানিশূন্য ডিস্ক : ডিস্কগুলো আপনার মেরুদণ্ডের কশেরুকার মাঝখানে কুশনের মতো কাজ করে। ৪০ বছর বয়সে বেশিরভাগ লোকের মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলো শুকাতে শুরু করে এবং কুঁচকে যায়। ফলে একটি হাড়ের সঙ্গে আরেকটি হাড়ের ঘষা লাগে।

ডিস্ক সরে যাওয়া : এটাকে বলে হার্নিয়াটেড ডিস্ক। এটাও বয়সের কারণে হয়। ডিস্ক স্ফীত হয় বা বের হয়ে আসে; ফলে সুষুম্নাকাণ্ড ও স্নায়ুমূলে চাপ পড়ে।

বোন স্পার : ডিস্ক ক্ষয় হয়ে গেলে সেখানে ছোট ছোট হাড় তৈরি হয়, কখনো কখনো এই হাড়গুলোকে বোন স্পার বলা হয়। এই বোন স্পারগুলো মাঝে মাঝে সুষুম্নাকাণ্ড ও স্নায়ুমূলে খোঁচা দেয়।

লিগামেন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া : লিগামেন্টগুলো হলো টিস্যু দিয়ে তৈরি কর্ড বা দড়ি, যা একটি হাড়কে আরেকটি হাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে। বয়স বাড়লে মেরুদণ্ডের লিগামেন্টগুলো শক্ত হয়ে যায় ও চুন জমে। এর ফলে ঘাড়ের নমনীয়তা কমে যায়।

প্রশ্ন : সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসে কী উপসর্গ দেখা দেয়?

উত্তর : বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস কোনো উপসর্গ তৈরি করে না। যখন উপসর্গ দেখা দেয় তা স্পষ্টই ঘাড়কে আক্রান্ত করে, ঘাড় ব্যথা হয় ও শক্ত হয়ে যায়।

কখনো কখনো সুষুম্না পথ সরু হয়ে গেলে সুষুম্নাকাণ্ড ও স্নায়ুমূলে চাপ পড়ে এবং সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস দেখা দেয়। যদি আপনার সুষুম্নাকাণ্ড বা স্পাইনাল কর্ড কিংবা স্নায়ুমূলে খোঁচা লাগে, তখন বাহু ও হাতে ঝিনঝিন করা ও অবশ হওয়া উপসর্গ দেখা দিতে পারে। মোটামুটিভাবে সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের উপসর্গগুলো নিম্নরূপ :

Ÿ ঘাড়ের ব্যথা হওয়া।

Ÿ ঘাড়ের ব্যথা অনেক সময় বাহু ও হাতের দিকে ছড়িয়ে পড়া।

Ÿ ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া এবং ঘোরাতে না পারা। ঘোরাতে গেলে বা পেছনে বাঁকা করলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া।

Ÿ ঘাড়ে ব্যথাসহ হাতের আঙুল ঝিনঝিন করা।

Ÿ ঘাড়ে ব্যথাসহ হাত বা হাতের আঙুলে অবশ অনুভূতি হওয়া।

Ÿ ঘাড়ের ব্যথা মাঝে মাঝে কাঁধে বা মাথার পেছনের দিকে ছড়িয়ে যাওয়া।

প্রশ্ন : সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো কী কী?

উত্তর : সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে :

Ÿবয়স : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস হওয়া স্বাভাবিক। বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হতে থাকলে মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলো পানিশূন্য হতে থাকে এবং কুঁচকে যেতে থাকে।

Ÿপেশা : কিছু কিছু কাজে ঘাড়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে বারবার ঘাড় ঘোরানো, ঘাড় বিসদৃশ অবস্থানে রাখা কিংবা মাথায় অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপানো।

Ÿঘাড়ে আঘাত : আগে ঘাড়ে আঘাত পেলে সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

Ÿবংশগত কারণ : কিছু পরিবারে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব পরিবর্তন খুব বেশি ঘটে, আবার কিছু কিছু পরিবারে পরিবর্তন ঘটে কম।

প্রশ্ন : কী জটিলতা দেখা দিতে পারে?

উত্তর : যদি সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের কারণে আপনার স্পাইনাল কার্ড বা স্নায়ু মূলগতভাবে মারাত্মক চাপ লাগে, তাহলে সেগুলোর স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

প্রশ্ন : কোন ডাক্তার দেখাবেন?

উত্তর : প্রথমে আপনি আপনার সমস্যাগুলো পারিবারিক চিকিৎসককে খুলে বলুন। তিনি আপনার রোগের লক্ষণ ও চিহ্ন দেখে আপনাকে একজন স্পাইন সার্জন বা অর্থোপেডিক সার্জনের কাছে রেফার করবেন।

প্রশ্ন : আমার করণীয় কী?

উত্তর : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্টের আগে আপনি একটি কাগজে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখে রাখতে পারেন :

— কখন আপনার উপসর্গ শুরু হয়?

— কোন ধরনের নড়াচড়ায় বা ঘাড়ের অবস্থানে আপনার ব্যথা বাড়ে বা কমে?

— আপনার বাবা-মা কিংবা ভাই-বোনের কি ঘাড়ের সমস্যা আছে?

— কখনো কি আপনার ঘাড়ে কোনো ধরনের আঘাত পেয়েছেন?

— আপনার কি অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা আছে?

— আপনি কি নিয়মিত কোনো ওষুধ খান? খেয়ে থাকলে সেটা কী?

প্রশ্ন : ডাক্তার আমাকে কী জিজ্ঞেস করতে পারেন?

উত্তর : ঘাড়ব্যথার জন্য চিকিৎসক আপনাকে ঘাড়ব্যথার বিস্তারিতসহ নিচের প্রশ্নগুলো করতে পারেন :

— আপনার ঘাড়ের ঠিক কোন জায়গাটিতে ব্যথা করে?

— আগেও কি একই ধরনের ব্যথা হয়েছে?

— আপনার প্রস্রাব বা পায়খানার কোনো সমস্যা দেখা দিয়েছে?

— আপনার কি হাঁটতে সমস্যা হয়?

— আপনি কী ধরনের চিকিৎসা নিয়েছেন?

— চিকিৎসায় কি উপকার পেয়েছেন?

— আপনি কী কাজ করেন অর্থাৎ আপনার পেশা কী?

— আপনার শখ কী? অবসর সময়ে আর কী কী কাজ করে থাকেন?

প্রশ্ন : কীভাবে রোগ নির্ণয় করা হয়?

উত্তর : স্পনডাইলোসিস হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ঘাড়ের এক্স-রে পরীক্ষা করা হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিটিস্ক্যান অথবা এমআরআই করা হয়ে থাকে।

এক্স-রেতে বিশেষ ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডিস্কের ক্ষয়। কশেরুকায় বিভিন্ন মাপের নতুন হাড়ের উপবৃদ্ধি দেখা দিতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী অংশের ফাঁক কমে যায়।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে নার্ভ ফাংশন টেস্ট করা হয়, যেমন—

Ÿইলেকট্রোমাইয়োগ্রাম (এমজি)

Ÿনার্ভ কনডাকশন স্টাডি (এনসিএস)

প্রশ্ন : কী চিকিৎসা দেওয়া হয়?

উত্তর : সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের চিকিৎসা আপনার উপসর্গের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে। চিকিৎসার উদ্দেশ্য হলে ব্যথা সারানো, যতটা সম্ভব স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে সাহায্য করা এবং স্পাইনাল কর্ড ও নার্ভগুলেকে স্থায়ী ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করা।

ওষুধপত্র

সাধারণত ব্যথা উপশমকারী ওষুধ যেমন ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন ইত্যাদি খাবারের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে। ব্যথা বেশি হলে বা পেপটিক আলসারের ইতিহাস থাকলে এ-জাতীয় ওষুধ পায়ুপথে কিংবা মাংসপেশিতে ইনজেকশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। ব্যথার স্থানে বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য এসব ওষুধ মলম আকারেও পাওয়া যায়।

যদি ব্যথা উপশমকারী ওষুধে উপকার না হয়, তাহলে আপনার চিকিৎসক আপনাকে নিচের ওষুধ গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন :

Ÿমাংসপেশি শিথিলকরণ ওষুধ : আপনার ঘাড়ের মাংসপেশিতে সংকোচন থাকলে মাংসপেশি শিথিলকরণ ওষুধ যেমন সাইক্লোবেনজাপ্রিন ও মেথোকার্বামল আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Ÿখিঁচুনিবিরোধী ওষুধ : কিছু মৃগী রোগের ওষুধ যেমন গাবাপেনটিন এবং প্রিগাবালিন দেওয়া যেতে পারে। এসব ওষুধ আপনার ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুর ব্যথা কমায়।

Ÿনারকোটিক : কিছু নারকোটিকসমৃদ্ধ ব্যথা উপশমকারী ওষুধ যেমন হাইড্রোকডোন বা অক্সিজেন আপনার ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

Ÿস্টেরয়েড ইনজেকশন : কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যথার স্থানে প্রেডনিসোলন ইনজেকশন ও অনুভূতিনাশক প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

থেরাপি

আপনার ঘাড় ও কাঁধের মাংসপেশি শক্তিশালী করার জন্য কিছু ব্যায়ামের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের কিছু কিছু রোগী ট্রাকশন ব্যবহার করে ভালো থাকেন।

যদি স্নায়ুমূল চাপা পড়ে থাকে, তাহলে মেরুদণ্ডের মধ্যকার জায়গা বাড়ানোর জন্য ট্রাকশন বেশ উপকারী।

সার্জারি

যদি ওষুধের মাধ্যমে ভালো না হন কিংবা আপনার স্নায়ুজনিত উপসর্গ থাকে— যেমন বাহুর মাংসপেশি দুর্বল হওয়া বা আরো খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়া, তখন আপনার স্পাইনাল কর্ড ও স্নায়ুমূলগুলোকে আরো জায়গা দিতে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে হার্নিয়াটেড ডিস্ক কিংবা বোন স্পার অপসারণ। কশেরুকার একটি অংশও কেটে বাদ দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

প্রশ্ন : কী ধরনের জীবনযাপন করব?

উত্তর : মৃদু ধরনের সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের ক্ষেত্রে কিছু ব্যবস্থা নিলে ভালো ফল পাবেন :

Ÿনিয়মিত ব্যায়াম করুন

দৈনন্দিন ব্যায়াম আপনাকে দ্রুত সুস্থ করতে সাহায্য করবে। যদি আপনার ঘাড়ে ব্যথা থাকে, তাহলে কিছু ব্যায়াম সংশোধন করে ধরবেন। এসব ব্যায়াম আপনাকে আপনার চিকিৎসক শিখিয়ে দেবেন।

Ÿব্যথানাশক ওষুধ খান

সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিসের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন কিংবা অ্যাসিটামিনোফেন সচরাচর ভালো কাজ করে।

Ÿগরম অথবা ঠান্ডা সেঁক দিন

যদি আপনার ঘাড়ের মাংসপেশিতে ব্যথা থাকে, তাহলে আপনি আপনার ঘাড়ে গরম অথবা ঠান্ডা সেঁক দিন।

Ÿনরম নেক ব্রেস পরুন

এসব পরার উদ্দেশ্য হলো আপনার ঘাড়ের মাংসপেশিকে বিশ্রাম দেওয়া। তবে এগুলো পরবেন অল্প সময়ের জন্য। কারণ এগুলো আপনার ঘাড়ের মাংসপেশিগুলোকে দুর্বল করে তুলতে পারে।

প্রশ্ন : কী ধরনের ব্যায়াম করব?

উত্তর : মুক্ত ঘাড়ের ব্যায়াম : সোজা হয়ে বসুন বা দাঁড়ান। মেরুদণ্ড ও ঘাড় সোজা রেখে দু’হাত কোমরের ওপর রাখুন। এবার আপনার মুখ ও ঘাড় একবার ডান দিকে ও পরে বাম দিকে ঘোরান। এবার চিবুক ডান ও বাম কাঁধের দিকে সাধ্যমতো নিয়ে যান যাতে কাঁধ ও চিবুক মোটামুটি একই সরলরেখায় অবস্থান করে। এভাবে ১০-১৫ বার ব্যায়াম করুন।

Ÿবাধা সহযোগে ঘাড়ের ব্যায়াম

আগের মতো বসে বা দাঁড়িয়ে আপনার মেরুদণ্ড, ঘাড় ও মুখ সোজা রাখুন। এবার আপনার ডান হাতের তালু ডান গালের ওপর রেখে আস্তে আস্তে চাপ দিন অথবা আপনার ডান হাতের তালু দিয়ে বাম দিকে চাপ দিন এবং একই সময়ে মুখ ও গাল ডান দিকে আনার চেষ্টা করুন। একইভাবে বাম গালে বাম হাতের তালু রেখে চাপ দিয়ে ব্যায়াম করুন। চাপ যাতে বেশি না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কারণ তাতে ঘাড়ের মাংসপেশিতে টান লেগে ব্যথা ঘটাতে পারে। এটি ১০-১৫ বার করুন।

Ÿমাথার পেছনে চাপ

হাত দুটি অঙ্গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাথার পেছনে নিন। মেরুদণ্ড, ঘাড় ও মুখ সোজা রাখুন। এবার ধীরে ধীরে মাথার পেছন দিকটা দিয়ে হাতের তালুতে চাপ দিন। একই সময়ে খেয়াল রাখুন হাতের তালু দুটি যেন সরে না যায়। এভাবে কয়েকবার আপনার সহ্যমতো করুন।

Ÿমাথার সামনে চাপ

এবার আপনার হাতের তালু শক্তভাবে সোজাসুজি কপালে রেখে আস্তে আস্তে কপাল সামনে এনে তালুতে চাপ দিন। খেয়াল রাখবেন হাত দুটি যেন সরে না যায়। এভাবে কয়েকবার ব্যায়ামটি করুন।

সাধারণত দিনে ১০-১২ বার এ ধরনের ব্যায়াম করলে সুফল পাওয়া যায়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগুলো বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads