বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশকেও এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে হবে। আমরা সেভাবেই আমাদের শিশু-কিশোরদের গড়ে তুলতে চাই।’ গতকাল রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে ‘দেশব্যাপী সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০১৮’-এর পুরস্কার বিতরণকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে উন্নত ও সমৃদ্ধভাবে গড়ে তোলার মূল হাতিয়ার হলো শিক্ষা। কেউ যদি শিক্ষিত হয় তাহলে যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে সে টিকে থাকতে পারে।’ ডিজিটাল বাংলাদেশে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দেশের আরো দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছি, যার মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে নেটওয়ার্কটা চালু হবে। সমুদ্র থেকে বাংলাদেশের সর্বত্র যোগাযোগ স্থাপনে আমাদের স্যাটেলাইট কাজ করবে। শিক্ষায়, স্বাস্থ্যসেবায় সবকিছুতেই অবদান রাখতে পারবে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে, আরো জটিল এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির সন্নিবেশ ঘটাচ্ছে, যেগুলো চালাতে ভবিষ্যতে অনেক দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের শিশুরাই একদিন সবকিছু পরিচালনা করবে। সেই সুযোগটাই আমরা সৃষ্টি করতে চাই। আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন, জ্ঞান-বিজ্ঞানভিত্তিক একটি জাতি গড়ে তুলতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েদের একটু সুযোগ করে দিলে তারা অত্যন্ত ভালো করে। দেশ-বিদেশে বহু জায়গায় গিয়ে আমার এ অভিজ্ঞতা হয়েছে। গ্রামবাংলায় সোনার টুকরো ছড়িয়ে আছে। আমরা সেই সোনার টুকরোগুলো খুঁজে বের করছি।’ সরকার বিজ্ঞান, কারিগরি শিক্ষা এবং মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী (কারিগরি এবং মাদরাসা শিক্ষা) কাজী কেরামত আলী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন স্বাগত বক্তব্য দেন। সরকার ২০১৩ সাল থেকে দেশের সব বিভাগের স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে এ মেধা অন্বেষণ কর্মসূচি শুরু করে।
তিনটি বিভাগে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি, নবম থেকে দশম শ্রেণি এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সাহিত্য, বিজ্ঞান, গণিত ও কম্পিউটার- চারটি বিষয়ে দেশের সব বিভাগ ও জেলা পর্যায় থেকে নির্বাচিত শীর্ষ ১০৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২ জনকে এদিন ‘মেধা অন্বেষণ-২০১৮’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে একটি ট্রফি, এক লাখ টাকার বৃত্তি এবং সনদপত্র দেওয়া হয়। বাকি ৯৬ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে পুরস্কার হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা এবং সনদপত্র দেন প্রধানমন্ত্রী। বাসস।