• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগান

সরকারি কর্মচারীদের প্রধানমন্ত্রী 

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৪ জুলাই ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল জনগোষ্ঠীর জন্য নিজস্ব উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে সরকারি কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা চাই দেশের উন্নয়নে সরকারি কর্মচারীরা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিজস্ব উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগাবেন। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন এবং জনপ্রশাসন পদক-২০১৮ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, একটা সময় ছিল যখন সরকারি চাকরিতে কাজ করলেও বেতন, কাজ না করলেও বেতন পাওয়া যেত। কাজেই কাজ করলে করলাম বা না করলে নাই- এই চিন্তা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। কোনো কাজ ফেলে রাখা এবং কাজের ক্ষেত্রে প্রচলিত ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্য’ বন্ধেও সরকারি কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা প্রচলিত লাল ফিতার ধারণার অবসান ঘটিয়ে সরকারি সেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। তাহলেই আমাদের উন্নয়নটা সার্থক হবে। দেশ আরো উন্নত হবে এবং দেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের মনে রাখতে হবে যে, দেশের কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ থেকে শুরু করে সবার ট্যাক্সের টাকাতেই তাদের বেতন হয়। এজন্য দেশের মানুষের সেবা করার মানসিকতা লালন করতে হবে। তারা যেন অন্তত ভালো থাকে- সেই চিন্তাটা সবসময় মাথায় থাকতে হবে। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের মানুষদের দিকে দৃষ্টি রেখেই এই চিন্তাটা করার আহ্বান জানাই আমি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারি কর্মচারীরা যথেষ্ট মেধাবী। মেধা আছে বলেই তারা পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাচ্ছেন। কাজেই তাদের মেধা, তাদের যোগ্যতা, তাদের দক্ষতাকে আমাদের দেশ গড়ার কাজে যেমন লাগাতে হবে, তেমনি তাদের গুণাবলি ও উদ্ভাবনী শক্তিরও মূল্যায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, এসব লক্ষ্য রেখেই আমরা যেমন পদোন্নতি দিয়ে থাকি এবং আজকের যে পুরস্কার বিতরণ সেটাও সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা করে যাচ্ছি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম ও জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সরকারি কর্মচারীদের উদ্ভাবনী ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজে উৎসাহ প্রদানের জন্য ২০১৬ সাল থেকে এই পদক চালু করা হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ৩৯ ব্যক্তি ও তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জনপ্রশাসন পদক-২০১৮ বিতরণ করেন। এতে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিববৃন্দ, তিনবাহিনীর প্রধানগণ, বিভিন্ন দফতরের প্রধানগণ এবং পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সরকারি পর্যায়েও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২০১২ সাল থেকে গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট নামে একটি আলাদা শাখা খোলা হয়েছে। এই ইউনিটের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবন করে সরকারি সেবা প্রদান পদ্ধতি সহজ করা। পাশাপাশি সরকারি কাজের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়াই তার সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই এগিয়ে যাওয়ার জন্যই আমাদের সবসময় উদ্ভাবনী শক্তি নিয়ে কাজ করতে হবে, যেন আমরা অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে উন্নত ও সমৃদ্ধ হতে পারি। তিনি সরকারি কর্মচারীদের জন্য দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ এবং উচ্চশিক্ষায় তার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, প্রশিক্ষণ ও ডিগ্রির জন্য আপনাদের অনেক সময় বিদেশে পাঠানো হয়। ডিগ্রি নিজের জন্য নয়, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাবেন। মানুষের জীবনমানের যেন উন্নয়ন হয়, সে কাজে লাগাবেন। দেশের উন্নয়নচিত্র ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সবসময় মনে করি, আমি শুধু প্রধানমন্ত্রী নই, জাতির পিতার কন্যা। সেই হিসাবে সবাই আমার পরিবার। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারায় নানা উন্নয়ন প্রকল্প থেমে গিয়েছিল উল্লেখ করে ভবিষ্যতে যেন এমনটি না হয়, সে জন্যও দেশবাসীকে সতর্ক করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের সময় শেষ হয়ে আসছে। আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নেই। এ জন্য কোনো আক্ষেপ নেই। তবে দেশটাকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছি, তা যেন অব্যাহত থাকে। বাসস

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads