• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯

নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সরকার

সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভায় উঠছে সোমবার

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৫ আগস্ট ২০১৮

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কসহ নয় দফা আন্দোলনের মধ্যেই আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উঠছে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর খসড়া।  সোমবার সকাল ১০টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আইনটি মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের পর এটি সংসদে তোলা হবে৷ এর আগে গত বছরের মার্চে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

উল্লেক, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের জাবালে নূর পরিবহনের বাস চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হন।  পরের দিন থেকে রাজধানীর সড়কে অবস্থান করে বেপোরোয়া বাস চালকের ফাঁসি, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালনা বন্ধসহ ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।

এরপরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীদের অনেক দাবিই পূরণ হয়ে যাবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, ইনশাল্লাহ আগামীকাল সোমবার আইনটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।

খসড়া আইনে যা আছে-

খসড়া আইনানুযায়ী গাড়ি চালানোর সময় কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। করলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে।

খসড়া আইন অনুযায়ী, সড়কের ফুটপাতের উপর দিয়ে কোনো ধরণের মোটরযান চালাচল করতে পারবে না। করলে তিন মাসের কারাদণ্ড বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হবে।

আগে গাড়ি চালকদের লেখাপড়ার বিষয়ে কিছু না থাকলেও নতুন আইন অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। কন্ডাক্টর বা চালকের সহযোগীকে কমপক্ষে লেখার ও পড়ার সক্ষমতাসহ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া থাকতে হবে।

যদি কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালায় তবে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কেউ এই অপরাধ করলে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। এক্ষেত্রে বর্তমানে ৩ মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা রয়েছে।

চালকের সহকারীর লাইসেন্স লাগবে। কন্ডাক্টারের লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে।

জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করলে আগে শাস্তি ছিল সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা। প্রস্তাবিত আইনে মূল শাস্তি কারাদণ্ড আগের মতোই আছে, জরিমানা ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে।

ফিটনেস না থাকা মটরযান চালালে বর্তমানে শাস্তি রয়েছে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা। সেখানে এখন শাস্তি সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ শাস্তি পাবে মূলত গাড়ির মালিক।

দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দণ্ডবিধিতে যে শাস্তি রয়েছে সেই শাস্তি প্রযোজ্য হবে। দুর্ঘটনার মাধ্যমে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নরহত্যা হয়, তবে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা হবে। এটার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। হত্যা না হলে ৩০৪ ধারা প্রযোজ্য হবে। এক্ষেত্রে শাস্তি যাবজ্জীবন। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা হলে ৩০৪ (বি) ধারা অনুযায়ী ৩ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

গাড়ি ওজন সীমা অতিক্রম করলে সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ৩ লাখ টাকা জরিমানা। এখানে মালিক ও ড্রাইভার দুই গ্রুপকেই যুক্ত করা হয়েছে, তারা উভয়ে দায়ী হবে।

বেপরোয়া গাড়ি চালানো, দুই গাড়িতে পাল্লা দেয়ার কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা হবে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং এতে দুর্ঘটনা না ঘটলেও ২ বছরের কারাদণ্ড বা ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।

চালকের ভুলের কারণে পয়েন্ট কাটার ব্যবস্থা নতুন সড়ক পরিবহন আইনেও রাখা হয়েছে। এজন্য ১২ পয়েন্ট রাখা হয়েছে। কোনো ড্রাইভার অপরাধ করলে তার পয়েন্ট কাটা যাবে। যদি কারো ১২ পয়েন্টই কাটা যায় তা হলে তিনি আর কোনোদিনও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন না। কত পয়েন্ট কাটলে কী পরিমাণ শাস্তি হবে আইনে তা বলা আছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads