• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
এমপিদের শপথ আজ

এমপিদের শপথ আজ

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

এমপিদের শপথ আজ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ জানুয়ারি ২০১৯

একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আজ বেলা ১১টায় সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন। নির্বাচন কমিশনের পাঠানো নির্বাচনের গেজেট হাতে পাওয়ার পর শপথের এই সময় নির্ধারণের কথা জানিয়েছে সংসদ সচিবালয়। নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচিতদের নাম-ঠিকানাসহ গেজেট তৈরি করে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজি প্রেসে (সরকারি ছাপাখানা) পাঠায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিকে এবারের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী প্রার্থীরা শপথ নেবেন না বলে জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল বুধবার বিএনপি এ কথা জানিয়ে দেয়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ জনকে নির্বাচিত ঘোষণার ওই গেজেট প্রকাশ হলে তাদের শপথের আয়োজন করতে গতকাল বুধবার সকালে সংসদ সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠায় ইসি। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শুনেছি, আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টায় নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ সচিবালয়ে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকেও একই তথ্য জানানো হয়।

এদিকে গতকাল বুধবার সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় শেরেবাংলা নগরের সংসদ ভবনের পূর্ব ব্লকের প্রথম লেভেলের শপথ কক্ষে এ শপথ অনুষ্ঠিত হবে। স্পিকার ড.

শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ

ভবনের নিচতলায় ‘শপথ কক্ষে’ নবনির্বাচিতদের শপথ পড়াবেন। তার আগে তিনি নিজে নিজে আইনসভার সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন। এবারো তিনি রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। রেওয়াজ অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সদস্যরাই প্রথমে শপথ নেবেন। এরপর ক্রমানুসারে শপথ নেবেন অন্যরা। শপথ শেষে নতুন সংসদ সদস্যরা সংসদ সচিবের কার্যালয়ের স্বাক্ষর খাতায় সই করবেন এবং একসঙ্গে তাদের ছবি তোলা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরপর ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হবে। প্রথম অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে শপথ না নিলে বা স্পিকারকে অবহিত না করলে সদস্য পদ খারিজ হবে।

দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে গত ৩০ ডিসেম্বর রোববার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়, গোলযোগের কারণে একটি আসন স্থগিত রেখে সেই রাতেই ২৯৮টি আসনের ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ২৫৯টি আসনে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীরা। আর জোটগতভাবে তাদের আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৮টি।

আওয়ামী লীগ ২৫৯টি, জাতীয় পার্টি ২০টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, জাসদ ২টি, বিকল্প ধারা ২টি, তরিকত ফেডারেশন ১টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) ১টি, বিএনপি ৫টি, গণফোরাম ২টি, স্বতন্ত্র ৩টি আসনে জয়ী হয়েছে।

এই নিরঙ্কুশ জয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। এবার নিয়ে তিনি চারবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হবেন। এর বিপরীতে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবি হয়েছে। তাদের ধানের শীষের প্রার্থীরা মাত্র সাতটি আসনে জয়ী হতে পেরেছে। ভোটে বাধা দেওয়া, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া এবং কারচুপির অভিযোগ তুলে ঐক্যফ্রন্ট ফলাফল বাতিল করে পুনঃভোটের দাবি তুললেও নির্বাচন কমিশন তা নাকচ করে দিয়েছে।

এদিকে দুবার দেশ শাসন করা বিএনপির এতটা দুর্বল অবস্থায় সংসদে যাওয়া ঠিক হবে কি না-  সে বিষয়ে দলের ভেতরে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। দলের শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি, তবে কারো কারো কথায় শপথ না নেওয়ার সম্ভাবনার কথা এসেছে। সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই আজ বৃহস্পতিবার শপথের দিনই নির্বাচিতদের ঢাকায় ডেকেছে বিএনপি। তাদের শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ‘ভুল’ করেছিল, এবার আর ভুল করা তাদের উচিত হবে না।

আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টি দশম সংসদে প্রধান বিরোধীদলের ভূমিকায় ছিল। আবার তাদের নেতারা সরকারের মন্ত্রিসভায়ও দায়িত্ব পালন করেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০টি আসন পাওয়া জাতীয় পার্টি দলগতভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকায় এবারো তাদের প্রধান বিরোধীদলের আসনে বসার কথা। তবে জাতীয় পার্টি এখনো তাদের সিদ্ধান্ত জানায়নি। আজ মহাজোটের সঙ্গে জাতীয় পার্টির বৈঠক রয়েছে। আজকের বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ার‌ম্যান জিএম কাদের গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, মহাজোটের সঙ্গে আলোচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন, বিরোধীদলে যাবেন কি না। আমরা এখনো মহাজোটের অংশ হিসেবে আছি। মহাজোটের স্বার্থে যেটা করতে হবে, সেটাই করব। আজ সংসদ সংসদস্যরা শপথ গ্রহণের পর জাপার পার্লামেন্টারি কমিটির সদস্যরা আরেকটি সভায় বসবেন। তারপর জাপার বিরোধীদলে যাওয়া, মন্ত্রিত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। এর আগে মহাজোটের আরেক শরিক জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, শেখ হাসিনা যদি (জাতীয় পার্টিকে) আমন্ত্রণ জানান, আর তারা গ্রহণ করে, তবে তারা মন্ত্রিসভায় যাবে। আর গ্রহণ না করলে জোটের অন্য শরিকদের নিয়ে সরকার গঠন হবে। এদিকে একজন প্রার্থীর মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ৩টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করায় ফলাফলও স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির জয়ী পাঁচ প্রার্থী জাতীয় সংসদে যোগ দেবেন না, এমনকি তারা শপথগ্রহণ থেকেও বিরত থাকবেন।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এবং পরে এ তথ্য জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের একাধিক নেতা। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো একাদশ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। নতুন নির্বাচনের দাবি করেছি। ফলে সংসদে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads