• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
দগ্ধ ছাত্রীর দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা দগ্ধ ছাত্রীর দায়িত্ব নিলেন

ছবি : সংগৃহীত

সরকার

দগ্ধ ছাত্রীর দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

চিকিৎসায় ৮ সদস্যের বোর্ড গঠন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ এপ্রিল ২০১৯

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় দগ্ধ মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা। ওই দগ্ধ ছাত্রীর চিকিৎসায় ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে।

গতকাল রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুপুর ১টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমি দেখা করতে যাই। প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই ফেনীর ছাত্রীর বিষয়ে খোঁজখবর নেন। বিস্তারিত শুনে উনি মর্মাহত ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি যা যা সহযোগিতা লাগে দেয়ার কথা বলেন।

এদিকে আগুন দেয়া সেই ছাত্রীর চিকিৎসায় আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল। ওই ছাত্রী বর্তমানে ঢামেক বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রকল্প পরিচালক ও মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর ডা. আবুল কালাম গতকাল সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- ঢামেক বার্ন ইউনিটের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ নওয়াজেস খান, একই বিভাগের অধ্যাপক ডা. লুৎফর কাদের লেনিন, অধ্যাপক ডা. বিধান সরকার, ডা. নজরুল ইসলাম ও ডা. মো. জাহাঙ্গীর কবির।

ওই ছাত্রীর চিকিৎসার বিষয়ে ডা. আজাদ জানান, বোর্ডের সদস্যরা আইসিইউতে গিয়ে দুবার পর্যবেক্ষণ করেছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার গলা থেকে শরীর, দুই হাত, পা- সব জায়গায় পুড়ে গেছে। পাশাপাশি তার শ্বাসনালিও পুড়ে গেছে। অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে দু-একদিনের মধ্যেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ওই ছাত্রীর চিকিৎসার বিষয়ে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন গত শনিবার বলেন, মেজর বার্ন। মুখ ছাড়া পুরো শরীরেই আগুন লেগেছিল। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি।

গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে ওই ছাত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়া হয়। দগ্ধ ছাত্রীর বাড়ি সোনাগাজী পৌরসভার চরচান্দিয়া গ্রামে। সে আলিম পরীক্ষার্থী।

এ বিষয়ে দগ্ধ ছাত্রীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, আমার বোন সকালে আলিম আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যায়। এ সময় তাকে ফুঁসলিয়ে অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রিত কয়েকজন শিক্ষার্থী মাদরাসার ছাদে নিয়ে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার নিজ কক্ষে ডেকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। আরেকটি অংশ তার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads