• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

সরকার

জলবায়ু পরিবর্তন

চাপ তৈরির শেষ সুযোগ কপ-২৫ সম্মেলন

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯

স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে জাতিসংঘের আয়োজনে গতকাল সোমবার শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহব্যাপী জলবায়ু সম্মেলন। কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ বা কপ নামে পরিচিত এ বছরের সম্মেলন নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। খবর ডয়চে ভেলে জাতিসংঘের আয়োজনে প্রতিবছরই জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু সব কপই সমান গুরুত্ব পায় না। তবে কপ-২৫ নামে পরিচিত এবারের সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব দেশকে ন্যাশনাল ক্লাইমেট অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির কাজ শেষ করতে হবে। হাতে আছে আর মাত্র এক বছর। ফলে যেসব দেশ এখনো এ কাজ শেষ করতে পারেনি, তাদের ওপর চাপ তৈরির শেষ সুযোগ এবারের সম্মেলন।

প্যারিস চুক্তিতে দেশগুলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পযুগের (১৮৫০-১৯০০) চেয়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের অনেক নিচে রাখতে সম্মত হয়েছে। তবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার চেষ্টার কথাও বলা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন ৪৫ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা হয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল সে বিষয়টিও সম্মেলনে গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউটের প্রধান অ্যান্ড্রু স্টিয়ারের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ ও শহর ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি ঘোষণা করেছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টও ইউরোপে ক্লাইমেট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইমার্জেন্সি ঘোষণা করেছে। গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত একটি বিল ৪২৯-২২৫ ভোটে পাস হয়েছে। যদিও এ বিলে নির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলা হয়নি। শুধু প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ ও আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় কমিশনকে আহ্বান জানানো হয়েছে। কপ-২৫ এসব বিষয়ে কতটুকু পরিবর্তন আনতে পারে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সম্মেলনে যোগ দিতে জলবায়ু আন্দোলনের আলোচিত কিশোরী গ্রেটা টুনব্যার্গ নিউইয়র্ক থেকে পাল তোলা নৌকায় করে ইউরোপে ফিরছেন। গত শুক্রবার তার লিসবন পৌঁছার কথা থাকলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি তিনি ইউরোপে ঢুকতে পারেন বলে জানিয়েছে তার দল।

বৈশ্বিক বিপর্যস্ত জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে রাজনীতিবিদরা যথেষ্ট কাজ করছেন না অভিযোগ তুলে গত বছর থেকে আন্দোলন শুরু করেন সুইডিশ শিক্ষার্থী গ্রেটা। প্রতি শুক্রবার স্কুলে না গিয়ে সুইডিশ সংসদের সামনে বসে আন্দোলন করতেন তিনি। তার এ আন্দোলন একসময় সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারকে ঘিরে গ্রেটার নামটি বেশ আলোচিত হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত নোবেলের দেখা পাননি তিনি।

কপ-২৫ নামে পরিচিত এ সম্মেলন জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের ২৫তম বার্ষিক সম্মেলন (ইউএনএফসিসিসি), কিয়োটো প্রটোকলের (সিএমপি-১৫) ১৫তম সভা এবং প্যারিস চুক্তির পক্ষগুলোর দ্বিতীয় সভাকে (সিএমএ-২) অন্তর্ভুক্ত করবে। সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেছেন চিলির পরিবেশমন্ত্রী মিজ ক্যারোলিনা স্মিদভ জালদিভার।

গত বছর পোল্যান্ডের ‘সিওপি ২৪’-এ প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের নির্দেশনার ভিত্তিতে এ সম্মেলনে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত কর্মসূচির পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এসব নির্দেশনার প্রধানতম হচ্ছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পরিপূর্ণ কার্যকারিতার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ের নিষ্পত্তি করা। সম্মেলনটি এ বছর নভেম্বরে ব্রাজিলে হওয়ার কথা থাকলেও পরিকল্পনা শুরুর এক বছর আগেই নবনির্বাচিত সভাপতি জেইর বোলসোনারো অর্থনৈতিক মন্দার কারণ দেখিয়ে স্বাগতিক হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেন। পরবর্তী সময়ে স্বাগতিক চিলি এগিয়ে আসে। কিন্তু বৈঠকের আগে সামাজিক অস্থিরতার ফলে অক্টোবরের শেষদিকে চিলিও স্বাগতিক হওয়া থেকে সরে যায়। পরে জাতিসংঘ, চিলি এবং স্পেনের পারস্পরিক চুক্তির মাধ্যমে স্পেন স্বাগতিক হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads