• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
কবে মুক্ত হবে কারওয়ান বাজার

সর্বদা ব্যস্তময় রাজধানীর কারওয়ান বাজার

সংগৃহীত ছবি

মহানগর

চালুর আগেই সংস্কার লাগবে উত্তর সিটির দুই মার্কেটের

কবে মুক্ত হবে কারওয়ান বাজার

  • রানা হানিফ
  • প্রকাশিত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের স্থানান্তরের লক্ষ্যে মহাখালী ও আমিনবাজারে নির্মাণ করা হয় আধুনিক দুটি কাঁচাবাজার। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মাধ্যমে নির্মিত এই মার্কেট দুটি সংস্কার করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে ব্যবহার শুরুর আগেই। কেননা মার্কেটের ছাদ ও পিলারে দেখা দিয়েছে ফাটল; দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। এমন অবস্থায় মার্কেট দুটি সংস্কারের জন্য টাকা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবও পাঠিয়েছে ডিএনসিসি।

ডিএনসিসির তথ্যানুযায়ী, কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি কাঁচাবাজার সরিয়ে নিতে ২০০৬ সালে পরিকল্পনা হাতে নেয় সরকার। ওই বছরের ৪ অক্টোবর রাজধানীতে চারটি আধুনিক পাইকারি কাঁচাবাজার নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৬০০ কোটি টাকা অর্থায়নে যাত্রাবাড়ী, লালবাগ মোড়, মহাখালী ও গাবতলীর আমিনবাজারের এই মার্কেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তী সময়ে যাত্রাবাড়ী, মহাখালী ও আমিনবাজারে মার্কেট নির্মাণকাজ শুরু করা গেলেও নানা জটিলতা ও আর্থিক সঙ্কটে লালবাগেরটির সম্ভব হয়নি। পরিকল্পনা অনুযায়ী যাত্রাবাড়ী, মহাখালী ও আমিনবাজারে মার্কেট নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৬ সালের জুনেই।

এর আগে ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ ডিএনসিসির তৎকালীন মেয়র আনিসুল হকের সঙ্গে এক বৈঠকে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা ওই বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যবসা সিটি করপোরেশন নির্ধারিত তিনটি মার্কেটে স্থানান্তরের ওয়াদা করেন। একইসঙ্গে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারওয়ান বাজারের বিকল্প তিনটি মার্কেট ব্যবহার উপযোগী করে দেওয়ার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। মেয়রও সে ওয়াদা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মাঝে মারা গেছেন মেয়র আনিসুল হক। তবে ব্যবহার উপযোগী হয়নি মার্কেট তিনটি। রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগও।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় অবস্থিত যাত্রাবাড়ীর আধুনিক পাইকারি বাজারটি নির্মাণ শেষ হলেও মালিকানা ও দোকান বরাদ্দ নিয়ে জটিলতা রয়েছে দুই সিটির মধ্যে। বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে উত্তরের মার্কেট দুটি নিয়ে। অভিযোগ রয়েছে মহাখালী ও আমিনবাজারে মার্কেট করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য দিয়ে ডোবা ভরাট করে নিয়ম ও নির্মাণ কৌশল না মেনেই। ফলে দুই বছরেই ভবনগুলোতে দেখা দিয়েছে ফাটল, খসে পড়ছে পলেস্তারা। আমিনবাজারের মার্কেটটিতে নকশানুযায়ী বেজমেন্টে ফাঁকা জায়গা থাকার কথা থাকলেও সেখানে দোকান করে শাটার লাগিয়ে রেখেছে ডিএনসিসি। এখনো শুরু হয়নি মার্কেট দুটির সংযোগ সড়কের কাজ। রাখা হয়নি মালবাহী ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহন পার্কিংয়ের জায়গা। সব মিলিয়ে ব্যবসার জন্য কোনো দিক থেকেই উপযোগী নয় মার্কেট দুটি।

এ প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজার আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি এটিএম ফারুক বলেন, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিটি করপোরেশনও ওয়াদা করেছিল মার্কেট তিনটি ব্যবহারের উপযোগী করে দেবে। কিন্তু গত দুই বছরে কী কাজ হয়েছে? উল্টো আমিনবাজার ও মহাখালীর মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। ডিএনসিসি সূত্র জানায়, মার্কেট দুটি ব্যবহার উপযোগী করতে নতুন করে কাজ করা প্রয়োজন। এজন্য প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। বরাদ্দ পেলেই সংস্কার কাজ শুরু হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, রাজধানীর মধ্যে যেকোনো মার্কেট হোক, সেটা যদি ফুটপাথেও হয়, তাহলে ব্যবসায়ীরা বরাদ্দ নেওয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। সেখানে মহাখালী আর আমিনবাজারের মার্কেটে বরাদ্দ মূল্য বার বার কমানোর পরও সাড়া মিলছে না।

ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি বাজার সরিয়ে ফেলার প্রতিশ্রুতির কথা স্বীকার করে বলেন, ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী এখনো মার্কেট দুটি প্রস্তুত হয়নি। সংযোগ সড়কের কাজসহ বেশ কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এসব কাজের জন্য যথেষ্ট অর্থের প্রয়োজন। আমরা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। একনেক থেকে প্রকল্পটি পাস হলে নতুন করে কাজ শুরু করা হবে। নির্মিত ভবনে ফাটলের প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রকৌশল বিভাগই বলতে পারবে। তবে প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads