• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
রিকশা নিয়ে বিপরীতমুখী অবস্থানে দুই মেয়র

ছবি : সংগৃহীত

মহানগর

রিকশা নিয়ে বিপরীতমুখী অবস্থানে দুই মেয়র

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ জুলাই ২০১৯

রাজধানী ঢাকার যানজট কমাতে তিনটি প্রধান রুটে রিকশা চলাচল বন্ধ ঘোষণার পরে রিকশাচালকদের আন্দোলনের মুখে দুই মেয়রের অবস্থান এখন দুদিকে। ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম তার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এখনো তার সিদ্ধান্তে অনড়।

এদিকে দুই মেয়রের এমন সিদ্ধান্তের মধ্যে আবারো বন্ধ হওয়া সড়কগুলোতে রিকশা চলাচল শুরু হয়েছে। রাস্তায় দায়িত্বরত প্রশাসনও তাদের বাধা দিচ্ছেন না।  এ প্রসঙ্গে দক্ষিণের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকার যানজটের অন্যতম কারণ রিকশা। বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এত রিকশার চল নেই। এ কারণে রিকশা বন্ধ করে দিয়েছি। তবে পুরো ঢাকা থেকে তো রিকশা তুলে দেইনি। মাত্র ২০-২৫ কিলোমিটার সড়কে বন্ধ করা হয়েছে। আমি মনে করি, এ উদ্যোগ সফল করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষ্মাকারী বাহিনীকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

দক্ষিণ সিটির একটি সূত্র জানায়, কমিটির দায়িত্ব সিদ্ধান্ত নেওয়া। আর সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব পুলিশের। এ ছাড়া সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময়ও ডিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করছে না। তারা দায়িত্ব পালন করলে আন্দোলন বা বন্ধ ঘোষিত সড়কে রিকশা চলতে পারে না।

একই প্রসঙ্গে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, রিকশা বন্ধ হোক, যানজট কমুক সেটা আমিও চাই। তবে এ জন্য পর্যায়ক্রমে রিকশা বন্ধ করতে হবে। হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়াটা ঠিক হবে না। আমরা রিকশাচালকের কথা শুনব। এটা শোনাও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্তটি এসেছে ঢাকা দক্ষিণ থেকে। পরে রিকশাচালকদের সঙ্গে বৈঠক করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ওয়ার্ডভিত্তিক অবৈধ রিকশা ও গ্যারেজ শনাক্ত করা হবে। এ জন্য কমিটি করে দিচ্ছি। আমরা বৈধ রিকশার পেছনে কিউআর কোর্ড করে দেব। চালকদেরও ডাটাবেজ করা হবে। ওয়ার্ডভিত্তিক রিকশাওয়ালাদের বিভিন্ন ড্রেস করে দেব। অবৈধ রিকশা বন্ধ করব।

উত্তরের মেয়রের সঙ্গে বৈঠক শেষে রিকশাচালকরা জানান, মেয়রের সঙ্গে বৈঠকের পর মালিক ও নেতারা তাদের জানিয়েছেন রিকশা চলতে কোনো সমস্যা নেই। সে কারণে তারা আন্দোলন তুলে নিয়েছেন। এখন তারা প্রগতি সরণিতে রিকশা চালাচ্ছেন। রিকশাচলক রফিকুল ইসলাম বলেন, রিকশায় একটু জায়গা কম লাগে। আর প্রাইভেটকারে জায়গা বেশি লাগে। সে কারণে ঢাকা শহরে জ্যাম লাগে। আগে ব্যক্তিগত গাড়ি বন্ধ করা উচিত। আমাদের জন্য আলাদা লেন করে দেওয়া হোক। বাসের লেনে বাস চলবে, রিকশার লেনে রিকশা চলবে। লেনমতো চললে কোনো সমস্যা হবে না।

এর আগে ৩ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ নগর ভবনে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সমন্বয় সভা শেষে ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন জানান, ৭ জুলাই থেকে রাজধানীর তিনটি রুটে রিকশা চলাচল করবে না। রুটগুলো হচ্ছে (১) কুড়িল-রামপুরা-সায়েদাবাদ, (২) গাবতলী-আসাদগেট-আজিমপুর ও (৩) সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ।

পরদিন ডিএনসিসি নিয়ন্ত্রণাধীন প্রগতি সরণিতে রিকশা চলতে দেখা গেছে। মিরপুর রোডে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রিকশা না দেখা গেলেও শুক্রবার অপেক্ষাকৃত ফাঁকা রাস্তায় রিকশা চলাচল করেছে। রিকশা বন্ধের প্রথম দিন থেকেই আন্দোলন শুরু করেন রিকশাচালক ও মালিকরা। তাদের দাবি, প্রধান সড়কগুলোতেও রিকশা চলাচলের অনুমতি দিতে হবে। তবে, সে ক্ষেত্রে রিকশার জন্য আলাদা লেন করে দিতে হবে। না হয়, তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। এভাবে রিকশা বন্ধ করে দিলে তাদের উপার্জন কমে যাবে। সাধারণ মানুষও দুর্ভোগে পড়বে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads