• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
উসকানিতে পা না দিতে কর্মীদের সতর্কতা ঐক্যফ্রন্টের

ঐক্যফ্রন্টের নেতারা

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

উসকানিতে পা না দিতে কর্মীদের সতর্কতা ঐক্যফ্রন্টের

  • আফজাল বারী
  • প্রকাশিত ২০ নভেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সারা দেশের কর্মী-সমর্থকদের সতর্ক করেছে ঐক্যফ্রন্ট। জোটের প্রধান দল বিএনপিসহ অন্য শরিকরা এ নির্বাচন নিয়ে জ্বালাও-পোড়াও তকমায় জড়াতে চায় না। অন্য দলের কোনো উসকানিতে পা না দিতে নেতাকর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অপ্রাসঙ্গিক শো-ডাউনেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে নেতাকর্মীদের। হাইকমান্ডের দৃষ্টি কাড়তে কেন্দ্রেও শো-ডাউন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির মতো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্য শরিকরাও নিজ নিজ প্রার্থীকে এ বার্তা দিয়েছে। আগে নয় নির্বাচনের দিন সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিতে সাংগঠনিক শক্তি দেখাতে চায় জোট।  

বিএনপির একাধিক নেতা বাংলাদেশের খবরকে জানান, গত বুধবারের নয়াপল্টনে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে চরম ক্ষুব্ধ দলের হাইকমান্ড। কীভাবে এই ঘটনার সূত্রপাত তা জানতে ওইদিন রাতেই দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেছেন। এই হাঙ্গামায় যাদের নাম সামনে এসেছে তাদের কাছেও প্রকৃত ঘটনা জানতে চেয়েছে হাইকমান্ডসহ সিনিয়র নেতারা। বৈঠকে পুলিশ, বিশেষ সংস্থার উসকানি এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সামনে এসেছে। আলোচনার পর নির্বাচনের আগে এই ধরনের ঘটনা আরো ঘটার আশঙ্কায় সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড।

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিকে ঘায়েল করতে ষড়যন্ত্রের অংশ। এ রকম বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া উচিত ছিল বিএনপির। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

বিএনপির এই নেতার মতে, জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির সিদ্ধান্ত থাকলে গত চার বছরে কঠোর আন্দোলন-কর্মসূচি ঘোষণা করা হতো। বিএনপি এই সময়ে শুধু আগামী নির্বাচনে ভালো করতে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে পথ চলেছে। পারতপক্ষে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়নি। ভোটের মাঠে মূল্যহীন দলগুলোকে অতিরিক্ত মূল্যায়ন করে সরকারবিরোধী ঐক্যকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে। বিএনপির বিগত কয়েক বছরের কর্মকাণ্ড দেশের সুশীল সমাজের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসা পেয়েছে। সঙ্গত কারণে নয়াপল্টনে ওই সংঘর্ষ যে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সব মহলই অনুমান করছে।

নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতার মতে, বিএনপি নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। এজন্য নির্বাচনের দিন যাতে সব নেতাকর্মী ভোটের মাঠে থাকতে পারে সে বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর কঠোর আন্দোলন করে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালের আন্দোলনে নিহত হয় ২৩১ ব্যক্তি। এদের অধিকাংশই নিহত হয় আগুনে পুড়ে এবং পেট্রোলবোমায়। আগুনে পুড়ে আহত হয় ১ হাজার ১৮০ ব্যক্তি। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ২ হাজার ৯০৩ ব্যক্তিগত যানবাহন, ১৮ রেলের বগি এবং ৮ যাত্রীবাহী নৌযান। ভাঙচুর করা হয় ৭০ সরকারি অফিস, আগুন দেওয়া হয় ৬ ভূমি অফিসে। ওই আন্দোলন অসফল হওয়ার পাশাপাশি বিএনপির ইমেজ দেশি ও আন্তর্জাতিক মহলে চরমভাবে বিনষ্ট হয়। এরপর গত চার বছর সহিংস কোনো আন্দোলন কর্মসূচিতে না গিয়ে বিএনপি শুধু সংগঠনকে শক্তিশালী করার দিকে মনোননিবেশ করে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি আদায় না হওয়ায় দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। সেই দাবি আদায় না হলেও দলটি আর সহিংস কোনো আন্দোলনে যায়নি।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের খবরকে বলেন, বিএনপি অহিংস রাজনীতিতে বিশ্বাস করে বলেই সরকারের নানা নির্যাতনের পরও কঠোর কোনো কর্মসূচির দিকে যায়নি। ইতিবাচক রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠাই দলটির লক্ষ্য। সরকার উসকে দিতে চায়, কিন্তু তাতে বিএনপি পা দেবে না। সঞ্চিত সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে ভোটের দিন। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads