• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির অনেক নেতা এলাকাছাড়া

লোগো বিএনপি

রাজনীতি

মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির অনেক নেতা এলাকাছাড়া

  • রেজাউল করিম লাবলু
  • প্রকাশিত ২৩ নভেম্বর ২০১৮

ক্ষমতাসীন দলের আগ্রাসনে নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছেন না বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এ অভিযোগ দলের নেতাদের। তারা বলেছেন, কেউ কেউ নিজ নির্বাচনী এলাকায় গেলেও পুলিশের চাপের মধ্যে রয়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনেকে আবার ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকদের আগ্রাসী ভূমিকায় এলাকায় যেতে পারছেন না। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের এলাকায় যেতে না পারা ও হয়রানি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের খবরকে বলেন, প্রতিদিনই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে এ ধরনের অভিযোগ পাচ্ছি। অভিযোগ পাওয়ার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার কাছে প্রতিদিনই দলের পক্ষে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ দৃশ্যমান নয়। এভাবে বিএনপি কীভাবে নির্বাচন করবে, তা বোধগম্য হচ্ছে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বৃহস্পতিবার (গতকাল) ‘অতি দলবাজ’ ও ‘চিহ্নিত বিতর্কিত’ ৭০ পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহার চেয়ে ইসিতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। চিঠিতে সই করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পুলিশ কর্মকর্তাকে অবিলম্বে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।”

এ অবস্থায় বিএনপি নির্বাচনে থাকবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতোপূর্বে এ বিষয়ে বলা হয়েছে। সরকার ও ইসি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে না পারলে বিএনপি বিকল্প চিন্তাভাবনা করতে বাধ্য হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বাংলাদেশের খবরকে বলেন, তার নির্বাচনী এলাকা সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ)। সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি তাকে ফোন করেননি। দলের জেলা নেতাদের ফোন করে বলেছেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু যেন এলাকায় না আসে। আসলে তাকে আটক করা হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের সহযোগিতায় তার কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া প্রতিদিনই ধরপাকড় অব্যাহত আছে।

যশোর জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী টিএস আইয়ুব বাংলাদেশের খবরকে বলেন, স্থানীয় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে ও তার কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এর আগেও একাধিকবার নিজ নির্বাচনী এলাকায় যেতে চাইলেও পুলিশ বাধা তাকে দিয়েছে।

কিশোরগঞ্জ-৬ (কুলিয়ারচর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী শরিফুল আলম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ‘আগ্রাসী’ ভূমিকায় তিনি এলাকা ছাড়া। সম্প্রতি তাকে ২৮টি ‘গায়েবি’ মামলার আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এবং গ্রেফতার আতঙ্কে তিনি ও তার দলের নেতাকর্মীরা এলাকায় যেতে পারছেন না। সিইসিকে চিঠি লিখেছেন এ নিয়ে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বিরোধীদলীয় সাবেক চিফ হুইপ জয়নাল আবেদিন ফারুক বাংলাদেশের খবরকে বলেন, তিনি নিজ নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ও তার কর্মী-সমর্থকদের হয়রানি করছে। নোয়াখালী-২ সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি।

বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বাংলাদেশের খবরকে বলেন, নাটোর-২ (সদর) থেকে তিনি একাধিকবার নির্বাচন করেছেন। এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন। বিগত ওয়ান-ইলেভেনের সময়েও তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্যাতন করছেন।

এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা ঠিক হয়েছে, তা বুঝতে পারছেন না তিনি। তিনি বলেন, এভাবে নির্বাচন করা শেষ পর্যন্ত সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, প্রতিদিনই এমন অভিযোগ তারা পাচ্ছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads