• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
নিষ্ক্রিয়দের তালিকা করছে হাইকমান্ড

লোগো বিএনপি

রাজনীতি

নিষ্ক্রিয়দের তালিকা করছে হাইকমান্ড

  • আফজাল বারী
  • প্রকাশিত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

দলের সক্রিয় এবং নিষ্ক্রিয় নেতাদের তালিকা করছে বিএনপির হাইকমান্ড। দল পুনর্গঠনের সময় তালিকা ধরেই ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে দলের মহাসচিব ও সম্পাদক পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব অনানুষ্ঠানিকভাবে বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। তারা মাঠের চিত্র সংগ্রহ করছেন। খুলনা সফর করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বগুড়া সফর করেছেন আরেক ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু। দলীয় দফতরের তথ্যমতে, বিএনপির অন্তত ডজন নেতা বিভিন্ন এলাকা সফর করছেন।

গত শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে স্কাইপিতে আলাপকারীদের একজন বাংলাদেশের খবরকে জানিয়েছেন, গত জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীরা নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেননি এবং নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন তাদের ওপর ক্ষুব্ধ বিএনপির হাইকমান্ড। তাই সব আসনে সর্বস্তরের নেতাকর্মীর পাশে দাঁড়িয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে লন্ডন থেকেই তদারকি করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নির্দেশনা অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।  

দলীয় সূত্রমতে, নিকট ভবিষ্যতে আরেকটি জাতীয় নির্বাচন অসম্ভব মনে হলেও আবারো নির্বাচনের দাবি আদায়ই বিএনপির লক্ষ্য। এজন্য দলকে শক্তিশালী করে ঘুরে দাঁড়ানোকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। আর সংগঠনকে ঘুরে দাঁড় করাতে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপির প্রার্থীদের সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর থেকেই সংগঠনকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা করে  বিএনপির হাইকমান্ড। এজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে তৃণমূলে সংগঠনের কী অবস্থা তাও জানার চেষ্টা করে। নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর অনেক আসনে প্রার্থীরা কোনো খোঁজখবরই নেননি এবং অনেকে একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন বলে জানতে পারেন। যেসব প্রার্থী নিজেদের কার্যক্রম শুধুই নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন তার একটি তালিকা তৈরি করছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের খোঁজখবর না নেওয়া প্রার্থীদের এরই মধ্যে দলের পক্ষ থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এলাকার নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেওয়া ও তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির মধ্যসারির এক প্রভাবশালী নেতা জানান, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের নিজ আসনের যেসব নেতাকর্মী জেলখানায় আছেন তাদের মুক্ত করা, যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করা, যাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং তাদের পাশে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রার্থীদের মাধ্যমে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে একটা বার্তা দিতে বলা হয়েছে। তা হচ্ছে- যারা নির্যাতিত হয়েছেন, যারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, যারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছেন, তাদের উপযুক্ত সম্মান দিয়ে নেতৃত্বে আনা হবে। বিশেষ করে তরুণ সমাজকে নেতৃত্বে আনা হবে।

জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের করণীয় বিষয়ে গত শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্কাইপিতে লন্ডন থেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৈঠক করেছেন। ৭০ জন প্রার্থীর সঙ্গে পালা করে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী কথা বলেন তিনি। নির্বাচনী অনিয়মের প্রতিটি জেলায় একজন করে প্রার্থীকে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করার নির্দেশনার পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তারেক রহমান।

বৈঠকে দেওয়া নির্দেশনার বিষয়ে নোয়াখালী-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, বৈঠকে একটি জেলায় একজন প্রার্থীকে মামলার করার নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক রহমান। পাশাপাশি দলকে আরো সুসংগঠিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। যাতে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে সবাই সোচ্চার ভূমিকা রাখতে পারেন।

একই বিষয়ে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী আমিরুল ইসলাম খান আলীম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, জেলাওয়ারী মামলা করার বিষয় ছাড়া দলকে সুসংগঠিত করতে প্রার্থীদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করতে দল থেকে যে দায়িত্ব তিনি পেয়েছেন তা করছেন বলেও জানান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads