তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কথা বলার কোনো অধিকার নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরামের (চবিসাফ) দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব বলেন। মন্ত্রী বলেন, আবরার হত্যা নিয়ে কয়েকটি বিদেশি মিশন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এদের মধ্যে ব্রিটেন অন্যতম। অথচ ব্রিটেনে প্রতি বছর স্কুলে গুলিবিদ্ধ হয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী মারা যায়, পাকিস্তানে শিয়া মসজিদে হামলা হয়, অতীতেও বাংলাদেশে অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে, তখন তো তারা উদ্বেগ প্রকাশ করতে আসেননি। বরং ব্রিটেনে গুলিতে নিহত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আমি আমার দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা আশা করব, বিদেশি কূটনীতিকরা তাদের সীমারেখা মেনেই ভবিষ্যতে বক্তব্য রাখবেন। কূটনৈতিক শিষ্টাচার যেন লঙ্ঘন না হয়, এ বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ জানাই।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্বেকার অব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হত্যাকাণ্ড হলেও জিয়াউর রহমান তাদের মাফ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে সেশনজটে চার বছরের কার্যক্রম শেষ হয়েছে সাত বছরে। কিন্তু আমাদের সময় উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। এখন নির্ধারিত সময়েই প্রত্যেক শিক্ষার্থী তাদের কোর্স সম্পন্ন করে। এ ছাড়া বর্তমান যে কোনো হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাওয় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগ গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে শিক্ষাঙ্গনের নাম ভাঙিয়ে কেউ যেন অপরাজনীতি করতে না পারে, নিজের স্বার্থ হাসিল করতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তল্লাশি করা হবে।
আমরা দীর্ঘ ১১ বছর ক্ষমতায় আছি। আমাদের সংগঠনের মধ্যেই কিছু আবর্জনা হয়েছে। তা যেমন পরিষ্কারে কাজ করছি, ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। অপরাধী যেই হোক না কেন, যে দলেরই হোক না কেন তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না। ভারতে গ্যাস রপ্তানি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক প্রসঙ্গে উল্টা-পাল্টা খবর ছাপা হচ্ছে। আমি বলতে চাই, শুধু ত্রিপুরায় এলপিজি গ্যাস রপ্তানি করতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। তরল গ্যাস আমদানির পর নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে তারপরে আমরা রপ্তানি করব। এটি দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই। এ ছাড়া ভারত বাংলাদেশকে যে ২০টি বর্ডার গ্রান্ট দিচ্ছে তা এককালীন, এবং আমাদের সম্পত্তি। এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।
সভায় সাংবাদিকদের নতুন ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে যা যা করা প্রয়োজন তা করবেন বলে জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন খুব দ্রুতই ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন হবে। সংগঠনের সভাপতি মাহমুদুর রহমান খোকনের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ।