• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯
‘ফেসবুক ভাঙতে হবে’

ছবি : সংগৃহীত

সোশ্যাল মিডিয়া

‘ফেসবুক ভাঙতে হবে’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১২ মে ২০১৯

সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক ঘরোয়া একটি পরিসর থেকে বিপুল বাণিজ্যিক ভিত পেয়েছে। আর এ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে মাধ্যমটির প্রতিষ্ঠাতা  মার্ক জাকারবার্গের একনিষ্ঠ সঙ্গী ছিলেন ক্রিস হিউজ। মজার কিংবা কষ্টের বিষয়, তিনি এখন কোম্পানিটির অবলুপ্তি চাইছেন। তাহলে কি ফেসবুক যুগের অবসান হতে চলল? 

নিউনিয়র্ক টাইমসে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে হিউস যা লিখেছেন, তাতে এমন শঙ্কা চেপে বসেই। তিনি লিখেছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার এখন উচিত ফেসবুক ভেঙে দেওয়া। যুক্তি হিসেবে তিনি দেখিয়েছেন, জাকারবার্গ বিশ্বে এখন একচ্ছত্র ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছেন এবং এমন ক্ষমতা কোনো বেসরকারি কোম্পানি তো দূরের কথা কোনো সরকারের কারো নেই।

ক্রিস হিউজের এমন দাবির অন্তরালে অনেকেই দেখছেন ব্যক্তিগত বিরোধকে। অনেকেই বলছেন, এতটা পথ পাড়ি দিয়ে কোম্পানিটির বর্তমান সাফল্যে স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রকট। যদিও গত এক দশক ধরে ফেসবুকের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই হিউজের।

২০০৪ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় হিউজসহ কয়েকজন বন্ধুর যৌথ উদ্যোগে জাকারবার্গ যে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, তা-ই বিশাল কলেবর নিয়ে আজকের ফেসবুকে পরিণত হয়েছে।

২০০৬ সালে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরুর পর ইন্টারনেট জগতে কোটি কোটি মানুষ এখন ফেসবুকে যুক্ত। কোম্পানির সম্পদমূল্য এখন শত বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই। কোম্পানির রমরমা অবস্থার সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী জাকারবার্গ।

জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে গত কয়েক বছরে বিতর্কও সঙ্গী হয়েছে ফেসবুকের; গ্রাহকের তথ্য চুরি, ভুয়া তথ্য প্রচার ও নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সামলাতে হচ্ছে একে একে।

বিতর্ক এড়াতে জাকারবার্গ ফেসবুকে কিছু নিয়মকানুন আনতে চাইছেন; তার মধ্যেই তার পুরোনো বন্ধু হিউজ এতটা কঠোর হলেন।

হিউজ লিখেছেন, মার্ক ভালো, সদয় মানুষ। কিন্তু আমার ক্ষোভ সেখানে, যে লাভের লোভে সে নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিসর্জন দিয়েছে, ক্লিকের লোভে বিসর্জন দিয়েছে সহনশীলতাকে। হিউজের এখন হতাশা, শুরুর পর্যায়ে কেন চিন্তা করেননি যে ফেসবুকের নিউজ ফিড বিশ্বের সংস্কৃতিকে এত পরিবর্তন ঘটাতে পারে, নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে পারে, জাতীয়তাবাদী নেতাদের আরো শক্তিশালী করে তুলতে পারে।

ক্রিস হিউজ লেখেন, আমি আরো হতাশ যে, মার্ক তার আশপাশে এমন লোকদের রেখেছে, যারা তার বিশ্বাসকে আরো শক্তিশালীই করছে, কোনো চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে না।

প্রযুক্তি খাতে ফেসবুকের মতো একচেটিয়া ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে নতুন তদারকি সংস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান হিউজ, ‘জাকারবার্গ একটি দানব তৈরি করেছে, যা অন্য উদ্যোক্তাদের পথে বসাচ্ছে, গ্রাহকের পছন্দও নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের সরকারের এটা নিশ্চিত করা উচিত যে অদৃশ্য হাতের জাদুতে আমরা যাতে হেরে না যাই।’

হিউজের এই লেখার প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ সিএনএনকে বলেন, এটা আমরা স্বীকার করছি যে সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আরো দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। কিন্তু সফল একটি কোম্পানি জোর করে বন্ধের দাবি তুলে দায়িত্বশীলতা আনা যায় না।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে হার্ভার্ডে সংস্থার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মার্ক জাকারবার্গ এবং ডাস্টিন মস্কোভিৎজের সঙ্গে ফেসবুক তৈরি করেন ক্রিস হিউজ। ২০০৭ সালে তিনি সংস্থা ত্যাগ করেন এবং পরে লিংকেডিন সাইটে এক পোস্টের মাধ্যমে জানান, তিন বছর ফেসবুকের সঙ্গে কাজ করার ফলে তিনি ৫০ কোটি ডলার উপার্জন করেছেন।

বিশ্বের বৃহত্তম সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকের বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা ২০০ কোটিরও বেশি। এছাড়া, সংস্থার মালিকানাধীন হোয়াট্‌সঅ্যাপ, মেসেঞ্জার এবং ইনস্টাগ্রামের প্রতিটিতে ১০০ কোটির বেশি ইউজার রয়েছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads